বাংলাদেশ চাইলে নির্বাচনপ্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করবে জাতিসংঘ

জিবি নিউজ 24 ডেস্ক //

বাংলাদেশ চাইলে নির্বাচনপ্রক্রিয়ায় জাতিসংঘ সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারী মিয়া সেপ্পো। রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ‘ডিকাব টক’ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা জানান।

ডিপ্লোমেটিক করেসপনডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিকাব) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

 

নির্বাচন কমিশন গঠনে জাতিসংঘ কি আগের মতো এবারো রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপেরে উদ্যোগ নেবে—এমন প্রশ্নের উত্তরে মিয়া সেপ্পো বলেন, নির্বাচনের সময় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যেকোনো দেশে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য যোগাযোগ করে থাকে। আর সেটি বাংলাদেশেও হবে। সেটি জাতিসংঘের মাধ্যমেও হতে পারে বা যেকোনো দেশের রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমেও হতে পারে। আগের থেকে এবার আলাদা কিছু হবে বলে আমি আশা করি না।

প্রসঙ্গত, প্রায় ৫ বছর আগে তৎকালীণ ঢাকার জাতিসংঘ আবাসিক সমন্বয়কারীর নেতৃত্বে চার-পাঁচটি দেশ নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপের জন্য চিঠি দিয়েছিলেন।

নির্বাচনে জাতিসংঘের সহযোগিতা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মিয়া সেপ্পো বলেন, যতোক্ষণ পর্যন্ত নির্বাচন বিষয়ক সহযোগিতার কথা জাতিসংঘকে বলা না হবে, জাতিসংঘ তাতে এগিয়ে আসবে না। এ ধরনের অনুরোধ যদি আসে, তবে অবশ্যই ফ্রেমওয়ার্ক সহযোগিতার আওতায় জাতিসংঘ এগিয়ে আসবে।

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন করলে সেপ্পো বলেন, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কিছু ক্ষেত্রে জাতিসংঘের উদ্বেগ রয়েছে। বিশ্বে ও বাংলাদেশের নারীদের বিরুদ্ধে ক্রমবর্ধমান সহিংসতা ও বৈষম্য নিয়ে জাতিসংঘ উদ্বিগ্ন। বৈশ্বিকভাবে নাগরিকদের স্বাধীনতা কমে আসাও আমাদের উদ্বেগের কারণ। আমরা আশা করি জাতিসংঘের ইউনিভার্সেল পিরিয়ডিক রিভিউয়ের যে সুপারিশগুলো করা হয়েছিল, বিশেষ করে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে, পরিস্থিতির উন্নয়ন বা বৈষম্য কমিয়ে আনার লক্ষ্যে সেগুলো সংসদে আলোচনায় নিয়ে আসবে বাংলাদেশ।

বেশ কয়েক বছর ধরে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ অন্যান্য সংস্থাগুলো গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, বৈষম্যসহ নানা ইস্যুতে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সমালোচনা করে আসছে। বাংলাদেশের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে তিনি বলেন, আইনটি আন্তর্জাতিক মানের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। এর প্রয়োগ নিয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এর পর্যালোচনায় সহযোগিতা করতে জাতিসংঘ প্রস্তুত, যাতে করে এর অপব্যবহার কমে আসে।

গুম নিয়ে মিয়া সেপ্পো বলেন, সব নাগরিকের সুরক্ষা এবং জোরপূর্বক গুমের বিরুদ্ধে কনভেনশনে সইয়ের জন্য জাতিসংঘ সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে আহ্বান জানিয়েছে। এশিয়ার বেশির ভাগ রাষ্ট্র এ কনভেনশনে সই করেনি। ফলে এটি সই করে, এ নিয়ে আইন তৈরি করে বাংলাদেশের এগিয়ে থাকার সুযোগ তৈরি হয়েছে।

ভাসানচরে কাজ করা নিয়ে সরকারের সঙ্গে চুক্তি সইয়ের বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানান সেপ্পো। বিশ্বব্যাংকের প্রস্তাব অনুযায়ী রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের সমাজে একীভূত করা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি ভুল বোঝাবুঝি ছিলো। এখানে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের সমাজে একীভূত করার জন্য নয় বরং সামাজিক সুসঙ্গতির কথা বোঝানো হয়েছে। বৈশ্বিকভাবে বিশ্ব ব্যাংক ও জাতিসংঘ শরণার্থী নিয়ে একই জায়গায় অবস্থান করে। তবে সেটি যখন বাংলাদেশের মতো কোনো একক দেশের স্থানীয় পর্যায়ে আসে, তখন তা আলোচনার মাধ্যমে ঠিক করা হয়।

এ সময় বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা সংকটটি বিশ্বের কাছে অগ্রাধিকার থাকার চ্যালেঞ্জের কথাও তুলে ধরেন তিনি। চলতি বছর রোহিঙ্গা অর্থায়নের চাহিদার মাত্র ৪০ শতাংশ এখন পর্যন্ত এসেছে বলেও জানান তিনি।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন