জিবি নিউজ 24 ডেস্ক //
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, গোপন সম্পদের বিবরণ ফাঁসের ঘটনার সাথে তার দেশের নাগরিকদের জড়িত থাকার বিষয়টি সরকার তদন্ত করে দেখবে। খবর: বিবিসি বাংলা।
প্যান্ডোরা পেপারস নামে ফাঁস হওয়া লক্ষ লক্ষ দলিলে দাবি করা হয়েছে শত শত পাকিস্তানি গোপনে তাদের সম্পদ পাচার করেছেন। এদের মধ্যে ইমরান খানের মন্ত্রিসভার কয়জন সদস্যও রয়েছেন। এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় গোপন দলিল ফাঁস হওয়ার ঘটনা। এতে বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ী এবং রাজনৈতিক নেতাদের সম্পদ পাচারের ঘটনা বেরিয়ে এসেছে।
ইমরান খান বলেন, এ নিয়ে কোনো অপরাধ ঘটে থাকলে দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আইসিআইজি নামে অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের একটি জোটের কাছে প্রায় এক কোটি ২০ লক্ষ গোপন আর্থিক দলিলপত্র তুলে দেয়া হয়। বিবিসিসহ বিশ্বের ১১৭টি দেশের প্রায় ৬০০ সাংবাদিক এসব দলিলপত্র যাচাই করেছেন।
পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমগুলো খবর দিচ্ছে, এসব দলিলে সে দেশের ৭০০রও বেশি ব্যক্তির নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এদের মধ্যে দু'জন মন্ত্রিসভার সদস্য।
ফাঁস হওয়া তথ্য অনুযায়ী, অর্থমন্ত্রী শওকত তারিন এবং তার পরিবারের সদস্যরা চারটি অফ-শোর কোম্পানির মালিক। এসব কোম্পানির কাগজপত্র দেখাশোনা করেছন যে আর্থিক উপদেষ্টা সেই তারিক ফওয়াদ মালিক বলেছেন, সৌদি আরবের একটি ব্যাংকে বিনিয়োগের জন্য এসব কোম্পানি গঠিত হয়েছিলো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিনিয়োগ করা হয়নি।
প্যান্ডোরা পেপারস থেকে জানা যাচ্ছে, পানিসম্পদ মন্ত্রী চৌধুরী মুনিস এলাহিকে সতর্ক করা হয় যে অফ-শোর ট্যাক্স হেভেনে বিনিয়োগ করলে তিনি পাকিস্তানি কর কর্তৃপক্ষের নজরে পড়ে যেতে পারেন। এরপর তিনি ঐ উদ্যোগ থেকে পিছু হটেন।
এলাহির পরিবারের পক্ষের একজন মুখপাত্র এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, আইননানুগভাবে তাদের সব সম্পদের ঘোষণা করা আছে।
"রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জন্য এসব দলিলের তথ্য-উপাত্তের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে," তিনি বলেন।
সোমবার টুইটারে এক পোস্টে প্রধানমন্ত্রী খান প্যান্ডোরা পেপারসের যেসব ঘটনা জানা যাচ্ছে তাকে স্বাগত জানান। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার আগে ২০১৬ সালে বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে তিনি পাকিস্তানের বিত্তবানদের অবৈধ সম্পদের ব্যাপারে সরকারি তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন। সে সময় পানামা পেপারস নামে কিছু গোপন দলির ফাঁস হয়েছিল।
ওদিকে প্যান্ডোরা পেপারস-এ সর্বশেষ দলিলগুলো ফাঁস হওয়ার পর এক রাজনৈতিক গোলযোগ তৈরি হয়েছে।
পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন পিটিভি খবর দিয়েছিল যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাওয়াজ শরীফের এক নাতি জুনায়েদ সফদারের নাম ঐ তালিকায় রয়েছে।
পিটিভি অভিযোগ করে যে সফদার তার নামে পাঁচটি কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের একজন সহকারীও এ নিয়ে একটি টুইট পোস্ট করেন। কিন্তু পাকিস্তানে প্যান্ডোরা পেপারস নিয়ে অনুসন্ধান চালাচ্ছেন যেসব সাংবাদিক তারা বিষয়টা যাচাই করে বলেছেন, দলিলে সফদারের নাম আসলে নেই।
পানামা পেপারস ফাঁসের জের হিসেবে দুর্নীতির অভিযোগ মাথায় নিয়ে নাওয়াজ শরীফের দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ (নাওয়াজ) ২০১৭ সালে ক্ষমতা ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলো।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন