যে কারণে ৬ ঘণ্টা বন্ধ ছিলো ফেসবুক

জিবি নিউজ 24 ডেস্ক //

প্রায় ছয় ঘণ্টা অফলাইন হয়ে যাওয়ার পর পুনরায় চালু হয়েছে ফেসবুক, মেসেঞ্জার, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ। পরিষেবায় এ বিভ্রাট কেন হলো তার ব্যাখ্যা দিয়েছে অ্যাপ তিনটির মালিকানা কোম্পানি ফেসবুক। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ এ নিয়ে প্রতিবেদন করেছে।

ফেসবুক ওয়েবসাইটের প্রকৌশল পাতায় স্থানীয় সময় সোমবার দেওয়া ব্যাখ্যার শুরুতে বলা হয়, ‘বিশ্বজুড়ে আমাদের ওপর নির্ভর করা বিপুল জনগোষ্ঠী ও ব্যবসায় জড়িতদের কাছে আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। আমরা আমাদের সব অ্যাপ ও সেবা পুনরায় চালু রাখতে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছি। আমরা আনন্দের সঙ্গে জানাতে চাই যে, আমাদের অ্যাপস ও সেবাগুলো অনলাইনে ফিরতে শুরু করেছে। আমাদের সঙ্গে থাকার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ।’

 

পরিষেবায় বিভ্রাটের ব্যাখ্যায় ফেসবুক বলেছে, ‘আমাদের প্রকৌশলী দল জানতে পেরেছে, আমাদের ডাটা সেন্টারগুলোর মধ্যকার ট্রাফিক নেটওয়ার্কের সমন্বয়কারী শক্তিশালী রাউটারগুলোত কনফিগারেশন পরিবর্তন করা হয়েছে। ফলে যোগাযোগ ব্যাহত হওয়ার মতো কিছু কার্যক্রম ঘটেছে। ডাটা সেন্টারগুলোর মধ্যকার যোগাযোগপথে বাধা সৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে আমাদের পরিষেবাগুলো ব্যাহত হয়।’

এদিকে, ফেসবুকসহ অন্যান্য যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ হওয়ার বিষয়ে ইন্টারনেটে বহুরকম কথাবার্তা ছড়িয়ে পড়লেও ফেসবুক থেকে ব্যবহারকারীদের কোনো তথ্য বেহাত হওয়ার প্রমাণ নেই বলে দাবি করেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমটি।

ফেসবুক বলছে, ‘আমাদের সেবাগুলো এখন চালু (‘অনলাইন’) আছে এবং আমরা পুরোদমে সব ঠিকঠাক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে কাজ করছি। এ সময়ে আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই- আমরা বিশ্বাস করি, ভুলভাবে কনফিগারেশন পরিবর্তনের ফলেই এমনটি ঘটেছে। এই অফলাইন সময়ে ব্যবহারকারীর তথ্য বেহাত হওয়ার কোনো প্রমাণ আমাদের হাতে নেই।’

যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সোমবার দুপুরে প্রথম যখন অফলাইনের ঘটনা ঘটে, এবিসি নিউজকে ফেসবুকের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘আমাদের অ্যাপস ও পণ্যগুলোতে ঢুকতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। আমরা সেটা জানি। যত দ্রুত সম্ভব আমরা স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে ফিরে আসার চেষ্টা করছি। অসুবিধার জন্য সবার নিকট দুঃখ প্রকাশ করছি।’

এর আগে ফেসবুক সম্পর্কে একজন ‘হুইসেলব্লোয়ার’ বা সতর্ককারীর অভিযোগ সামনে আসে। এবং পরে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও হোয়াটসঅ্যাপ প্রায় ছয় ঘণ্টা অফলাইন বা বন্ধ ছিল। যুক্তরাষ্ট্রের সিবিএস নিউজ’-এর রোববার ‘সিক্সটি মিনিটস’ অনুষ্ঠানে ডাটা সায়েন্টিস্ট ফ্রান্সেস হাউজেন ফেসবুকের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, ‘ঘৃণা ও বিভ্রান্তিকর তথ্যের বিরুদ্ধে অনেক কিছু করার সুযোগ থাকলেও ফেসবুক তা করে না।’

‘হুইসেলব্লোয়ার’ বা সতর্ককারীর অভিযোগ- ব্যবহারকারীদের চেয়ে মুনাফাকে বেশি গুরুত্ব দেয় ফেসবুক। ওই নারীর অভিযোগের পর ফেসবুক এ বিষয়ে বক্তব্য প্রকাশ করেছে। তাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানিটি বলেছে, ‘আমাদের প্ল্যাটফর্মকে নিরাপদ করতে আমাদের কর্মী এবং প্রযুক্তি খাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছি। এ ছাড়া বিভ্রান্তিকর তথ্যের বিরুদ্ধে আমরা লড়াইকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কোনো গবেষণা সুনির্দিষ্টভাবে কাজের হলে প্রযুক্তি শিল্প, সরকারগুলো এবং সমাজের অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এগুলো বহু আগেই সমাধান করে ফেলতো।’

বিশ্বের অন্য দেশের পাশাপাশি সোমবার (৪ অক্টোবর) দিনগত রাত সাড়ে ৯টার পর থেকে বাংলাদেশেও ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও ইনস্টাগ্রাম অচল হয়ে পড়ে। এর আগেও একবার এভাবে ডাউন হয়েছিল প্ল্যাটফর্মগুলো। কিন্তু দ্রুত তা ছন্দে ফিরে এসেছিল। তবে এবারের ঘটনা ঐতিহাসিক।

ফেসবুকের কর্মীরা সংবাদমাধ্যমকে জানান, অভ্যন্তরীণ ভুলের জন্যই এই ঘটনা ঘটেছে। ডোমেনে ভুল হওয়ার জন্যই গোটা সার্ভার ক্র্যাশ করেছে। তাদের কেউ কেউ বলছেন, রাউটিং সিস্টেমের গোলমাল থেকে এই ঘটনা ঘটেছে। তবে ইচ্ছাকৃতভাবে এ কাজ করা হয়েছে কি না, তা এখনো জানা যায়নি। ঘটনার পরে ফেসবুকের কারিগরি প্রধান এই মেসেজ পাঠিয়েছেন।

কীভাবে এই বিভ্রাট ঘটল তার ব্যাখ্যা করতে গিয়ে হার্ভার্ডের বার্কম্যান ক্লেইন সেন্টার ফর ইন্টারনেট অ্যান্ড সোসাইটির ডিরেক্টর জোনাথান জিট্রেইন বলেন, ‘গাড়ির ভিতর চাবি রেখে বাইরে থেকে লক করে দিলে যা হয়, ফেসবুকের সার্ভারেও তাই হয়েছে।’

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন