সিলেটে ছাত্রলীগের কমিটি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন বিক্ষোব্দরা

gbn

জিবি নিউজ 24 ডেস্ক //

প্রায় চার বছর পর ঘোষিত সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি নিয়ে  তীব্র অসন্তোষ দরখা দিয়েছে। নতদুন কমিটি প্রত্যাখান করে মঙ্গলবার নগরে বিক্ষোভও করেছে ছাত্রলীগের একটি অংশ।  জেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়া রাহেল সিরাজের বাসায় হামলার ঘটনাও ঘটেছে।

এই অবস্থায় বুধবার (১৩ অক্টোবর) বিকেলে সিলেটে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন ছাত্রলীগের বিক্ষোব্দ নেতারা।

তাদের অভিযোগ, টাকার বিনিময়ে ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা ও মহানগর কমিটির ৪টি পদ ১ কোটি ২০ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে বলে অভিযোগ বিক্ষুব্দদের।

জেলা ছাত্রলীগের বিগত কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার আলম সামাদ অভিযোগ করে বলেন, ‘কমিটি গঠন নিয়ে গত চার বছর নানা টালবাহান হয়েছে। আমি তার প্রত্যক্ষদর্শী। চার বছর পর টাকার বিনিময়ে মাত্র চারজনকে দায়িত্ব দিয়ে নতুন নেতৃত্ব বিক্রি করা হয়েছে। ১ কোটি ২০ লাখ টাকার বিনিময়ে এসেছে এই আংশিক কমিটি। এ বিষয়ে আমি কেন্দ্রে লিখিত অভিযোগ করাবো। তার আগে সংবাদ সম্মেলন করে পুরো বিষয়টি তুলে ধরব, এবং সেটি কালই (বুধবার) করবো। ’

মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য জেলা ও মহানগর কমিটির সভাপতি ও সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন।

সিলেট জেলা ছাত্রলীগের নতুন সভাপতি হয়েছেন মো. নাজমুল ইসলাম আর সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন রাহেল সিরাজ। অপরদিকে, সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হয়েছেন কিশোয়ার জাহান সৌরভ ও সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন নাঈম হাসান।

কমিটির দায়িত্বশীলদের নাম ঘোষণার পর সভাপতির পদ পাওয়া দুটি বলয়ে উচ্ছ্বাস দেখা দিলেও ক্ষোভ দেখা দেয় সিলেট ছাত্রলীগের অন্য বলয়গুলোতে।

জানা গেছে, নতুন কমিটি ঘোষণার পরপরই ছাত্রলীগের একাংশের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দেয়। তেলিহাওর গ্রুপের রাহেল সিরাজ জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের পদ পেলেও গ্রুপের অভ্যন্তরে অসন্তোষ চরমে পৌঁছায়। তেলিহাওর গ্রুপের বড় অংশের নেতাকর্মীরা রাহেল সিরাজের পরিবর্তে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে চেয়েছিলেন জাওয়াদ ইবনে জাহিদ খানকে। কিন্তু জাওয়াদকে সাধারণ সম্পাদক না করে কেন্দ্রীয় সদস্য করায় গ্রুপটির নেতাকর্মীরা বিকেল ৪টায় তেলিহাওর থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিল থেকে তারা জেলা ছাত্রলীগের নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজের নাম ধরে কটুক্তিমূলক নানা স্লোগান দেন।

মিছিলটি নগরীর জিন্দাবাজার আল-হামরা মার্কেটের সামনে আসলে পুলিশ মিছিলকারীদের বাধা দেয়। পুলিশী বাধা উপেক্ষা করে মিছিলটি সামনে অগ্রসর হয়। চৌহাট্টা পয়েন্টে গিয়ে বিক্ষোভকারী নেতাকর্মীরা টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। কিছু সময় সড়ক অবরোধ শেষে ফিরে যান তারা।

অপরদিকে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মহানগর কমিটিকেও প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ মিছিল ও সভা করেছেন নেতাকর্মীদের একাংশ। বিকাল সাড়ে ৫টায় মহানগর ছাত্রলীগের ‘বিদ্রোহী অংশ’ নগরীর চৌহাট্টা এলাকার সড়ক ও জনপথ বিভাগের ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। পরে সেটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে চৌহাট্টা পয়েন্টে এসে এক সভায় মিলিত হয়।

সভায় তারা কেন্দ্রের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে কমিটির শীর্ষ পদ বিক্রির অভিযোগ করে নতুন কমিটি প্রত্যাখ্যান করেন। এসময় মহানগর কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদে জামায়াত-শিবির নেতাকে স্থান দেয়ারও অভিযোগ করেন নেতৃবৃন্দ।

এদিকে, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক রাহেল সিরাজের বাসায় হামলার অভিযোগ ওঠেছে। কমিটির জের ধরে ছাত্রলীগের তেলিহাওর গ্রুপের সাবেক ও বর্তমান একদল নেতাকর্মী এই হামলা করেছে বলে অভিযোগ করেছেন রাহেল সিরাজের ভাই গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রুমেল সিরাজ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নগরীর আম্বরখানা বড়বাজারস্থ রাহেল সিরাজের বাসায় এই হামলার ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, তেলিহাওর গ্রুপ থেকে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী ছিলেন সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাওয়াদ ইবনে জাহিদ খান। কিন্তু কমিটিতে রাহেল সিরাজ সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় তাকে মেনে নিতে পারছেন না গ্রুপের শীর্ষ নেতারা।

রাহেল সিরাজের ভাই অভিযোগ করেন, সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি শাহরীয়ার আলম সামাদ, মহানগর শাখার সাবেক সহ সভাপতি সুজেল তালুকদার ও যুবলীগ নেতা দুলাল আহমদের নেতৃত্বে ১০-১৫টি মোটর সাইকেলে ৩০-৩৫ জন যুবক তার বাসায় হামলা চালান। এসময় তাকে বাইরে পেয়ে তার উপরও হামলার চেষ্টা করা হয়। তিনি দৌঁড়ে বাসায় ঢুকে আত্মরক্ষা করেন। এরপর হামলাকারীরা বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে পালিয়ে যান।

খবর পেয়ে আম্বরখানা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই মফিজুর রহমানের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

তবে পুলিশ বলছে, হামলার ঘটনা ঘটেনি, কেবল উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিলো। এ বিষয়ে সিলেট এয়ারপোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মুহাম্মদ মাইনুল জাকির বলেন, আসলে হামলার ঘটনা ঘটেনি। কিছু উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছিলো, খবর পেয়ে পুলিশ ততক্ষণাৎ রাহেল সিরাজের বাসায় গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।

এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি বলে জানান ওসি জাকির।

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন