নজরুল ইসলাম ll
অদ্য বাংলাদেশে একটি পূজামণ্ডপে পবিত্র কোরআন অবমাননার অভিযোগ ওঠার পর দেশজুড়ে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। কুমিল্লায় নগরীর নানুয়ার দিঘিরপাড়ের একটি দুর্গাপূজার মণ্ডপ ঘিরে এই উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
কুরআন ‘‘অবমাননা’’ ইস্যুতে দেশবাসীকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক।পরামর্শ দিয়েছেন আইন হাতে তুলে না নেওয়ার জন্য। বলেছেন কুমিল্লার বিষয়টি সরকার নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। সত্য ঘটনা উদঘাটনে ইতিমধ্যে স্থানীয় প্রশাসনকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশে কেউ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের প্রচেষ্টা করলে তাকে আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে। দুর্ভাগ্যবশত বিচ্ছিন্নভাবে দেশের বিভিন্ন পুজো মণ্ডপে অনভিপ্রেত ঘটনা দৃষ্টিকটু হয়েছে। যা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার কারণ।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সুরক্ষা এই শ্লোগানকে আত্মস্থ না করে হৃদয় দিয়ে অনুধাবন করার সময় এসেছে বোধহয়। পুজো মণ্ডপ ভাংচুরের মাধ্যমে ও পবিত্র কোরআন গ্রন্থের প্রতি অসম্মান প্রদর্শনের মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছে।
রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে সত্য উদঘাটনের মাধ্যমে ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বিশেষকে আইনের আওতায় নিয়ে এসে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া যাতে করে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
পাঠক, অনেকদিন পরে লিখতে বসলাম। চলমান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন অটুট ও আমাদের করণীয় নিয়ে লেখার জন্য অনেকেই পরামর্শ দিয়েছেন আবার অনেকেই নিরুৎসাহিত করেছেন স্পর্শকাতর' এমন বিষয় নিয়ে কথা না বলার জন্য। সবাইকে ধন্যবাদ।
শুরুতেই জেনে নেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বলতে আমরা কি বুঝি। এক সাথে একই সমাজে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের সহাবস্থান, সেখানে সম্প্রদায়গুলোর মধ্যে কোনো জাত্যভিমান থাকে না। যেমন কেউ মুসলিম, কেউ হিন্দু, বৌদ্ধ কিংবা খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ।
আমার প্রয়াত ও পিতা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুন নুর মাস্টার মহোদয় প্রায়ই বলতেন- যখন মানুষের মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করে তখন গঠনমূলক বস্তনিষ্ঠ তথ্যসমৃদ্ধ উদাহরণ উপমা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। তাই ভাবছি আপনাদের সাথে আরেকটি উপমা শেয়ার করব।
২০১৬ সালের জি নিউজের একটি নিউজ শিরোনাম ছিল- "হিন্দু-মুসলিম একে অপরের প্রাণ বাঁচালেন,
সেখানে লেখা হয়েছে হিন্দু মুসলিম দ্বন্দ্ব চলছে আর পরবর্তী কালেও চলবে। কিন্তু তার মধ্যেও এমন কিছু ভালোবাসা এবং মানবিকতার নজির থেকে যাবে যা মনকে ছুঁয়ে যায়। এমনই এক ঘটনা ঘটেছে মহারাষ্ট্রে। সেখানে হিন্দু মুসলিম একে অপরকে কিডনি দান করে একে অপরের প্রাণ বাঁচালেন।
(আমার আর্টিকেল এর প্রফাইল ফটোর দুই ভদ্রলোক এর গল্প বলছি)
গত ২ মাস ধরে কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন মহারাষ্ট্রের মুসলিম যুবক মোইজ সিদ্দিকি। নিয়মিত তাঁর ডায়ালিসিসও করানো হচ্ছিল। কিন্তু হঠাত্ই তাঁর দুটো কিডনিই অকেজো হয়ে পড়ে। আর কোনও রাস্তা না পেয়ে চিকিত্সকেরা জানান যে এখনই তাঁর কিডনি প্রতিস্থাপন না করা হলে তিনি মারা যেতে পারেন। ওই যুবকের স্ত্রী নিজের একটা কিডনি দান করতে চান। কিন্তু তাঁর ব্লাড গ্রুপের সঙ্গে তাঁর স্বামীর ব্লাড গ্রুপ মেলে না। এমনকী পরিবারের কারও পক্ষেই ওই যুবকে কিডনি দান করা সম্ভব নয়।
আবার অন্যদিকে মহারাষ্ট্রেরই অন্য এক জেলায় ওই একই কিডনির সমস্যায় ভুগছিলেন হিন্দু গৃহবধু নর্মদা সুরেশ। তাঁরও ডায়ালিসিস করার পর চিকিত্সকেরা কিডনি প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন। ওই গৃহবধুরও পরিবারের কারও সঙ্গে রক্তের গ্রুপ মিলছিল না।
এরকম একটা সময় চিকিত্সকেরা দুটো পরিবারের সঙ্গেই কিডনি প্রতিস্থাপনের বিষয়টা নিয়ে আলোচনা করেন। জানান যে, যদি তাঁদের দুই পরিবারের সদস্যরা একে অন্যকে কিডনি দান করেন, তাহলে দুটো জীবনই বেঁচে যাবে। চিকিত্সকের এই পরামর্শে হিন্দু গৃহবধুর মা মুসলিম যুবককে কিডনি দান করেন, আর মুসলিম যুবকের স্ত্রী হিন্দু গৃহবধুকে কিডনি দান করেন। কিডনি প্রতিস্থাপনের পর দুজনেই সুস্থ জীবন ফিরে পান। পাঠক, ইহাই হচ্ছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
পাঠক, একটু বিস্তৃত আলোচনা করার পূর্বে তৃতীয় পক্ষ কিভাবে দুই পক্ষ মধ্যকার ঝগড়া বাধায় এমন একটি গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই। গল্পটি আমার সাথে শেয়ার করেছিলেন আমার প্রাইমারি শিক্ষক অবসর প্রাপ্ত আব্দুল আলী স্যার। সংগত কারণেই গল্পটি আজ মনে পড়ল। ঘটনা দেশ স্বাধীনের পর। মৌলভীবাজার কোর্ট পয়েন্ট এলাকায় দুই পক্ষ মধ্যকার মতবিরোধ, কথা কাটাকাটি হাতাহাতি চলছে। রিক্সা যোগে জনৈক ভদ্রলোক পাশ দিয়ে যাচ্ছেন। রিক্সা দাঁড় করিয়ে কিছু সময় অবলোকন করার পর একটি ডিল সংগ্রহ করে সংঘাত-সংঘর্ষে লিপ্ত দুই পক্ষের উপর ছুঁড়ে দিয়ে তিনি চলে গেলেন। সাথে সাথেই উত্তেজিত দুইপক্ষ সংঘাত-সংঘর্ষে বেজে উঠলো। জনৈক ভদ্রলোক মৌলভীবাজার চৌমনীতে এসে আর দেরি করেননি। বাসযোগে মুন্সিবাজারের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করলেন। মুন্সিবাজার পৌঁছে বাস থেকে নেমে ভদ্রলোক বলছেন, মৌলভীবাজার নাকি খুবই সংঘাত-সংঘর্ষ হয়েছে দুই পক্ষ মধ্যকার। আপনারা কি কিছু শুনলেন?
হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন এমন কাজ করতে পারে সেটা বিশ্বাস করতে আমি দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছি। স্পর্শকাতর একটি বিষয় নিয়ে দেশের শান্তিপ্রিয় মানুষের মধ্যে অশান্ত পরিবেশ তৈরি করা বা গোত্রবিদ্বেষ ছড়ানোর জন্য জনৈক কেহ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সুকৌশলে সংঘাত- সংঘর্ষের পায়তারা করেছেন কি না তা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
পাঠক, দুষ্টু প্রকৃতির লোকদের আবারও স্মরণ করিয়ে দিতে চাই বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এক সাথে বসবাস করছে হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান। এটি আমাদের গৌরব যে, আমরা ধর্মনিরপেক্ষ এক জাতি। আমরা বাঙালি জাতি, বাংলাদেশিরা খুব সচেতন ভাবেই বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষের সাথে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হই। সম্প্রীতি, সৌহার্দ্য ও সহযোগিতা আমাদের আদর্শ। পারস্পরিক বিশ্বাস ও আস্থা আমাদের ধর্ম। ৫২, ৬৯, ৭০, ৭১-এ বাঙালি জাতি তাদের অসম্প্রদায়িক চেতনার স্বাক্ষর রেখেছে। তাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আর একতাকে চিরভাস্বর করেছে। মুক্তিযুদ্ধে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, খাসিয়া, সাঁওতাল নির্বিশেষে সকলে এক হয়ে যুদ্ধ করেছে। আমাদের প্রত্যেকটি উৎসবে বাঙালি জাতি এক হয়ে যায়। পহেলা বৈশাখ, ঈদ, পূজা, বড়দিন, বৌদ্ধপূর্ণিমা, আর জাতীয় দিবসগুলোতে সাম্প্রদায়িক পরিচয় ভুলে এক জাতি হিসেবে সকলে সমান অংশগ্রহণ করে। কিন্তু এই সম্প্রীতির মধ্যেও কিছু কিছু ধর্মান্ধ মানুষের কারণে এই দেশেও কখনো কখনো আঘাত হেনেছে সাম্প্রদায়িকতা। কুমিল্লায় কুরআন ‘‘অবমাননা’’ ইস্যু এর ব্যাতিক্রম নয়।
পাঠক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে হলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে রক্ষা করতে হবে। জাতিগত, বর্ণগত, ধর্মগত বিভেদকে তুচ্ছ করে সকলের মধ্যে সম্প্রীতির বন্ধনকে জোড়ালো করতে হবে। সকলের প্রতি সযোগিতা, সহমর্মিতার হাত বাড়াতে হবে, সৃষ্টি করতে হবে পরস্পরের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস। রাষ্ট্র ও সমাজ কর্তৃক সকলের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। এমন পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে যেন সংখ্যালঘুরা নিরাপদভাবে, দ্বিধাহীন ভাবে সবকিছুতে অংশ নিতে পারে। সকলের ভেতর অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিকাশ ঘটাতে হবে। সরকার, রাজনৈতিক দল ও রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে সংখ্যালঘুদের অনুকূল হতে হবে। ধর্মান্ধতা ত্যাগ করে মানুষের প্রতি, অন্য ধর্মের প্রতি, সম্প্রদায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। বিশ্বাস করতে হবে যে অন্য ধর্মের নিরীহ, নির্দোষ মানুষকে হত্যা করার নাম ‘জিহাদ’ বা ‘ক্রুসেড’ নয়। আর তা হলেই জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠিত হবে। এ ব্যাপারে সরকারের পাশাপাশি দেশের জনসাধারণকে দায়িত্ব নিতে হবে আমারা এর দায় এড়াতে পারি না।
পাঠক, কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত লিখেছেন “জগৎ জুড়িয়া এক জাতি আছে, সে জাতির নাম মানুষ জাতি” এই কথা মনে প্রাণে বিশ্বাস করলে কোনো মানুষের পক্ষে সাম্প্রদায়িক হওয়া সম্ভব নয়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি মানুষকে অন্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে শেখায়। দৃষ্টিভঙ্গি উদার করে। মানুষকে ঐক্যে বিশ্বাস করতে শেখায়। নিজের ধর্মের প্রতি যেমন বিশ্বাস জোরালো করে তেমনি অন্যের ধর্মের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা যাবে না এই বোধও তৈরি করে দেয়। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির কারণেই বহু সম্প্রদায় থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন জাতি শাক্তিশালী জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।
পাঠক, “সবার উপরে মানুষ সত্য, তাহার উপরে নাই।” এই কথাটি আজ থেকে বহু শতাব্দী আগে চণ্ডীদাস বলে গিয়েছেন। যা বর্তমানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মূলমন্ত্র। প্রকৃতির সেরা জীব মানুষ। মানুষের মধ্যে রয়েছে বুদ্ধি,বিচার বোধ,বিবেক,মানবিকতা। তবুও কখনও কখনও মানুষ তার মনুষ্যত্ববোধ একবারেই ভুলে যায়। প্রকৃতির সৃষ্টি তত্ত্বে মানুষ মানুষে কোনো পার্থক্য বা ভেদাভেদ নেই। কিন্তু মানুষ নিজেই তার জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও গোত্রের বিভেদ সৃষ্টি করছ।
মানুষ ঐক্যের আদর্শ ভুলে লোভ,হিংসা,পরমত অসহিষ্ণুতা,মৌলবাদী সংকীর্ণ স্বার্থ চিন্তার কারণে সংঘর্ষ আর রক্তক্ষয়ী হানাহানিতে মেতে উঠেছে যার ফলে অকালে ঝরে পড়ছে হাজার হাজার প্রাণ,ঐক্য ও সংহতির উপর পড়ছে চরম আঘাত। ধর্ম,বর্ন,সম্প্রদায় ভিত্তিক ভেদাভেদ ও সংঘাত ই হল সাম্প্রদায়িকতা। জাতীয় সংহতি বিপন্নের অন্যতম কারণ সাম্প্রদায়িকতা থেকে মানুষকে সুপথে নিয়ে আসার জন্য প্রয়োজন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি।
প্রত্যেক ধর্ম বা সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষ যে যার ধর্মকে সবার সেরা বলে মনে করে। এমন কিছু মানুষও থাকে যারা অন্য ধর্ম বা সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষের ছোটো করে দেখে। এখান থেকে জন্ম নেয় হিংসার। নিজের ধর্মকে শ্রেষ্ঠ আসনে বসাতে গিয়ে অন্য ধর্মের মানুষের সাথে খারাপ ব্যাবহার,অত্যাচার যে সংঘাতের সৃষ্টি করে তাকে এক কথায় বলে সাম্প্রদায়িকতা।
পাঠক, এক দেশে এক জায়গায় একই সাথে বাস করার জন্য পারস্পরিক সহযোগিতা ও সহমর্মিতা একান্তই কাম্য। সমাজ দেহকে সুস্থ সবল রেখে সমাজের ভবিষ্যতকে বিকাশের পথে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে সবার আগে ধ্বংস করতে হবে সাম্প্রদায়িকতার দুষ্ট জীবাণুকে। যার জন্য ভীষণভাবে প্রয়োজন সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধ।
আমাদের অভিভাবকদের দায়িত্ব অনেক।ছোটো থেকে সঠিক শিক্ষায় পারে এমন শুভ বোধের জাগরণ করতে। তাই এ ব্যাপারে ছাত্র সমাজের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। হিন্দু, মুসলমান, শিখ,বৌদ্ধ নির্বিশেষে এক বিদ্যালয়ে পাশাপাশি বসে শিক্ষা গ্রহণ, বন্ধুত্ব, পারস্পরিক সহযোগিতা, সহমর্মিতা সম্প্রীতির বুনিয়াদকে মজবুত করে গড়ে তোলে। ছোটো থেকে ধর্ম নিরপেক্ষ বন্ধুত্ব স্থাপন ভবিষ্যত সমাজকে সঠিক পথে পরিচালিত করে।
সাম্প্রয়িকতার কোনো ভালো দিক নেই, যা রয়েছে সবই খারাপ । দেশের উন্নতির পথে এক বিরাট বাঁধা হল সাম্প্রদায়িকতা। সাম্প্রদায়িকতা সাধারণ মানুষের জীবনের সুখ শান্তিকে নষ্ট করে। পৃথিবীর কোনো ধর্মই অন্ধবিশ্বাস,ভেদাভেদ কে সমর্থন করেনা। তবুও মানুষ নিজের স্বার্থ রক্ষায় হিংসায় ধর্মের নামে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। যা সমাজের শুধু ক্ষতিই করে। সাম্প্রদায়িকতার জন্যে বিশ্ব সমাজের শান্তি শৃঙ্খলা, ঐক্য সংহতি বিপন্ন হয়। সাম্প্রদায়িকতা ভবিষ্যত সমাজের উপরও খারাপ প্রভাব ফেলে থাকে।
পাঠক, অগোছালো অপরিপক্ক আলোচনার যবনিকা টানতে হবে। ইতিমধ্যে আপনাদের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছি। যা বলে শেষ করতে চাই- আমরা সবাই এক দেশ মায়ের সন্তান। তাই আমরা যে কোনো সম্প্রদায়ের মানুষ হই না কেন আমরা সকলে একই ভ্রাতৃ সম্পর্কে আবদ্ধ। পারস্পরিক যোগসূত্র ও সহযোগিতা ,পরমত গ্রহণের উদারতা,পরের ধর্মকে মর্যাদা দেওয়ার মানসিকতা, বিভিন্ন ধর্ম ও সাম্প্রদায়িক ভেদবুদ্ধির অবসান ঘটাবে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের দেশের মানুষের মধ্যে রয়েছে তাই বহুসম্প্রদায়ের মানুষ থাকা সত্বেও আমরা শক্তিশালী শান্তিপূর্ণ দেশ জাতি গঠনে এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের মনে রাখতে হবে প্রকৃতির রাজ্যে মানুষের শ্রেষ্ঠত্ব অবিসংবাদিত। প্রকৃতির সন্তান মানুষ আপন জ্ঞান ও বুদ্ধির শক্তিতে প্রকৃতিকে করেছে করায়ত্ত, আপন শ্রম সৃজনশক্তি নিরবিচ্ছিন্ন সাধনার জগতে অর্জন করেছে শ্রেষ্ঠত্বের আসন। এই কৃতিত্বে কোন ব্যক্তি বিশেষ জাতি সম্প্রদায় বা গোষ্ঠীর নয়। এ অর্জন জাতি- ধর্ম-বর্ণ সম্প্রদায় নির্বিশেষে সমগ্র মানবজাতির।
আসুন একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির গুরুত্ব অনুধাবন করি হৃদয় দিয়ে।
নজরুল ইসলাম
জার্নালিস্ট, ওয়ার্কিং ফর ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিস (NHS) লন্ডন, সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি -দ্য সিলেট পোস্ট অনলাইন নিউজ পোর্টাল।
মন্তব্যসমূহ (১৩৪) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন
pHqghUme Reply
2 years ago{{64323*64323}}
pHqghUme Reply
2 years ago555
pHqghUme Reply
2 years ago555
pHqghUme Reply
2 years ago555
pHqghUme Reply
2 years agoresponse.write(9954411*9619893)