জিবি নিউজ 24 ডেস্ক //
আত্মসমর্পণকারী জলদস্যুদের মামলার বিচারের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ধর্ষণ ও খুন ছাড়া সব মামলা পর্যায়ক্রমে তুলে নেওয়া হবে। মামলার কাগজ নিয়ে আসেন। সরকারি অনুদানে যাতে উকিল মামলা লড়তে পারেন সেটা আমরা দেখবো। মামলা তুলে নেওয়ার ব্যবস্থা আমরা করবো। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করেই প্রতিশ্রুতি করেছি।
সোমবার (১ নভেম্বর) দুপুরে বাগেরহাটের রামপালে দস্যুমুক্ত সুন্দরবন দিবসের তৃতীয় বর্ষপূর্তি ও আত্মসমর্পণ করা ব্যক্তিদের পুনর্বাসন অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) ও অতিরিক্ত আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আমি বাগেরহাটে এসেই শুনেছি, কিন্তু বিশ্বাস করিনি। শুনেছি আত্মসমর্পণ করা জলদস্যুদের কেউ কেউ আবার বিপথে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। কষ্ট করছেন জানি। কিন্তু ভুলেও সে চেষ্টা পুনরায় করবেন না।
তিনি বলেন, যারা দুষ্কর্মের চিন্তা করছেন, তারা তা ভুলে যান। যদি কেউ আবার বিপথে যান, তাহলে আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী বসে থাকবে না। আমাদের র্যাব, বিজিবি, পুলিশ, কোস্টগার্ড এখন খুবই চৌকস। যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তারা এখন সক্ষম।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আত্মসমর্পণ করা জলদস্যুদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সব সময় খোঁজ-খবর রাখছেন। সুন্দরবনে জলদস্যুতা ছেড়ে যারা আত্মসমর্পণ করেছেন তারা এখন কেমন আছেন। তাদের পুনর্বাসন করা হয়েছে কি না তাও জানতে চেয়েছেন। আপনাদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। দাবি ছিল মামলা প্রত্যাহারের। ধর্ষণ ও খুনের মামলা ছাড়া অবশ্যই পর্যায়ক্রমে মামলা তুলে নেওয়া হবে।
মন্ত্রী বলেন, পটুয়াখালী থেকে সাতক্ষীরা বাগেরহাট এলাকায় জলদস্যুর কারণে বাসায় থাকায় যেতো না, আটকে রাখা হতো, মুক্তিপণ দাবি করা হতো, ডাকাতি করা হতো, ডাকাতি কাজে জড়াতে বাধ্য করা হতো। মধু সংগ্রহকারীরাও রেহাই পেতো না। আজ সে চিত্র বদলেছে। সব কিছুর সমাধান হয়েছে। সুন্দরবন আজ দস্যুমুক্ত।
আসাদুজ্জামান খান কামাল আরও বলেন, সুন্দরবনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য র্যাবের স্থায়ী ক্যাম্প করার জোর প্রচেষ্টা চলছে। জলদস্যুরা যদি কেউ মনে করেন আবারও জলদস্যুতা করবেন, সে স্বপ্ন যেন ভেঙে যায়৷
তিনি বলেন, খুলনার মেয়র মহোদয় বলেছেন, মংলা পোর্ট ও এর আশপাশের এলাকায় আমদানি করা পণ্য খোয়া যাচ্ছে। এখানকার কোস্টগার্ডকে শক্তিশালী করা হচ্ছে। খুলনা কোস্টগার্ড বিষয়টি দেখবেন। প্রয়োজনে নৌ-পুলিশের ডিআইজি আছেন, তিনিও দেখবেন। কিন্তু আমরা নদীতে বা উপকূলে, কোথাও আর কোনো ডাকাতির ঘটনা দেখতে চাই না৷
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এখানেই শুধু নয়, পাবনায় ৬০১ জন চরমপন্থি আত্মসমর্পণ করেছে, কক্সবাজারে ১০১ জন মাদক ব্যবসায়ী আত্মসমর্পণ করেছে। এর সবই হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর বদান্যতায়। প্রধানমন্ত্রী শুধু আজ আমাদের নেতা নন, আজ তিনি বিশ্বনেতা। তিনি বঙ্গবন্ধুর সকল স্বপ্নকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
‘যারা আত্মসমর্পণ করেছেন তাদের জীবিকায় অনিশ্চয়তা ছিল। তাদের নিশ্চিত জীবিকার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় আত্মসমর্পণকারী ৩২৮ জন জলদস্যুকে পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ১০২টি ঘর, জিনিসপত্রসহ মুদি দোকান ৯০টি, জাল ও মাছ ধরা নৌকা ১২টি, ইঞ্জিন চালিত নৌকা দেওয়া হয়েছে ৮টি। আর বাছুরসহ গবাদি পশু দেওয়া হয়েছে ২২৮টি।’
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন