মন্ত্রী-এমপিদেরও ডোপ টেস্টের সুপারিশ!

জিবি নিউজ 24 ডেস্ক //

কক্সবাজার এলাকার স্থানীয় জনগণ মাদককে পার্টটাইম ব্যবসা হিসেবে মনে করে। এমনকি স্থানীয় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরাও মাদক ব্যবসায় জড়িত। অনেকে মাদক বিক্রি করে সংসার চালায়।

রোববার (৭ নভেম্বর) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকের কার্যবিবরণীতে এসব চিত্র পাওয়া গেছে। গত মাসের শুরুতে সংসদীয় কমিটির বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। রোববারের বৈঠকে ওই কার্যবিরণীর অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে মাদক নির্মূলে এমপি-মন্ত্রীসহ সব শ্রেণির মানুষকে ডোপ টেস্টের আওতায় নিয়ে আসার প্রস্তাব দেন কমিটির সভাপতি শামসুল হক টুকু। বৈঠকে কমিটির সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, নূর মোহাম্মদ, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ এবং রুমানা আলী অংশ নেন।

 

কমিটির আগের বৈঠকে মাদক নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। ওই বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানরা দেশের মাদক পরিস্থিতি ও এর প্রতিরোধে তাদের কার্যক্রম তুলে ধরেন। বৈঠকে র‌্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, কক্সবাজার এলাকার বিভিন্ন মাদ্রাসা, স্কুল ও কলেজের শিক্ষকরা মাদক ব্যবসায় জড়িত। সেখানকার স্থানীয়রা এটাকে পার্টটাইম ব্যবসা মনে করে।

সীমান্ত এলাকায় ইয়াবা প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মিয়ানমার সীমান্তে ইয়াবা রোধ করা একটু কঠিন হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদা সতর্ক রয়েছে। মাদকসেবীরা প্রথমে শখের বসে মাদক সেবন করে এবং পরবর্তীতে মাদকাসক্ত হয়ে গেলে চোরাকারবারিরা তাদের খুচরা বিক্রেতা হিসেবে ব্যবহার করে। তিনি বলেন, শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নয়, সব শ্রেণির জনগণ মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলে এটি নির্মূল করা সম্ভব হবে। বিকল্প কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার কারণে সুন্দরবনের বনদস্যু ও জলদস্যুরা আত্মসমর্পণ করেছে। মাদক পাচারকারীদের জন্যও এ ধরনের ব্যবস্থা করা গেলে সফলতা আসবে।

পুলিশের আইজি বেনজীর আহমেদ বলেন, মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু প্রলম্বিত বিচার, বিচারক স্বল্পতা এবং সহজে জামিনে বের হয়ে যাওয়া যেন চিরাচরিত নিয়ম। জামিনে মুক্তি পেয়ে আবার সেই মাদক ব্যবসায় ফিরে আসে তারা। একটি মাদক মামলার চূড়ান্ত রায় হতে প্রায় ১২ বছর লেগে যায়। দেশে কোনো মাদক তৈরি বা উৎপাদন হয় না। সবই আসে দেশের বাইরে থেকে। জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দীন বলেন, মাদক মামলায় কেউ সাক্ষী দিতে আসে না। তাই আসামিরা সহজেই জামিন পেয়ে যায়। জামিনে মুক্ত হয়ে আবার একই অপরাধে জড়িয়ে যায়। তাছাড়া দীর্ঘদিন মামলা চলার পর এক সময় দেখা যায় মামলার নথিপত্র আর খুঁজে পাওয়া যায় না।

সুরক্ষা ও সেবা বিভাগের সচিব মোকাব্বির হোসেন বলেন, মাদক সরবরাহকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের জন্য মন্ত্রণালয় কাজ করছে। চরম মাদকাসক্তদের মাদক না দিলে মৃত্যুবরণ করছে। কারাগার বা থানা হাজতে সিরিয়াস মাদকাসক্তদের মাদক সেবন করাতে গিয়ে আরেক সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে।

শামসুল হক টুকু বলেন, ডোপ টেস্ট প্রথা চালুর কারণে মাদকাসক্তরা ইদানীং সতর্ক হচ্ছে। এমপি-মন্ত্রী, রাজনীতিবিদ, বিচারপতি, আইনজীবী, সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক সর্বক্ষেত্রে ডোপ টেস্ট চালু রাখার বিষয়টি বিবেচনা করা প্রয়োজন। ডোপ টেস্টের কারণে সন্তান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পারলে সমাজের সবাই সচেতন হবেন।

অবশ্য সভাপতি সব শ্রেণিকে ডোপ টেস্টের আওতায় আনার প্রস্তাব করলেও তা আংশিক সুপারিশ আকারে নিয়ে আসা হয়। বৈঠকে 'আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সব সরকারি সংস্থা বা দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের ছাত্র-শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়মিত ডোপ টেস্টের আওতায় আনতে হবে হবে' বলে সুপারিশ করা হয়।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন