জিবি নিউজ || লন্ডন ||
ইস্ট লন্ডন মস্ক ট্রাস্টের নতুন কমিটি (২০২১-২০২৩) ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন কমিটিতে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আইয়ূব খান, সেক্রেটারি পুনর্নির্বাচিত হয়েছেন ড. আব্দুল হাই মুর্শেদ ও ট্রোজারার নির্বাচিত হয়েছেন সৈয়দ তুহেল আহমদ। গত ৯ নভেম্বর মঙ্গলবার নব-নির্বাচিত ট্রাস্টি বোর্ডের প্রথম সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এই কমিটি ঘোষণা করা হয়।
এছাড়াও সভায় মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন ড. আব্দুল্লাহ ফলিক, গভর্ণেন্স কমপ্লায়েন্স ও অডিট কমিটির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন হারুন খান, স্কুল গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন হোসাইন শিপার ও মারিয়াম সেন্টার ওয়েমেন্স কমিটির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন ড. মাহেরা রুবি । ট্রাস্টি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন সদ্যসাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, সালমা সিদ্দিকা ও সৈয়দা আঞ্জুমানারা বেগম। উক্ত সভায় রুহানা আলীকে ট্রাস্ট্রি বোর্ডের সদস্য হিসেবে কোঅপ্ট করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৩ অক্টোবর শনিবার দুপুরে মারিয়াম সেন্টারের সেমিনার হলে ইস্ট লন্ডন মস্ক ট্রাস্টের দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভা ও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সাধারণ সভায় চেয়ারম্যানের স্বাগত বক্তব্যের পর জেনারেল সেক্রেটারির রিপোর্ট পেশ করেন ড. আব্দুল হাই মুর্শেদ এবং আর্থিক রিপোর্ট উপস্থাপন করেন সদ্যসাবেক ট্রেজারার মোহাম্মদ আব্দুল মালিক। এরপর সাধারণ সদস্যদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন বিদায়ী কমিটির নেতৃবৃন্দ।
সাধারণ সভা শেষে নির্বাহী কমিটির ১০ জন ট্রাস্টি নির্বাচিত করার লক্ষ্যে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ট্রাস্টের ৮০ জন সদস্যের সরাসরি ভোটে ১০ ট্রাস্টি নির্বাচিত হোন। নির্বাচন পরিচালনা করেন নর্থ লন্ডন ইসলামিক সেন্টারের সিইও আব্দুল করিম খলিল। তাঁকে সহযোগিতা করেন ইস্ট লন্ডন মস্ক এন্ড লন্ডন মুসলিম সেন্টারের হেড অব এসেট এন্ড অপারেশন্স আসাদ জামান এবং মারিয়াম সেন্টারের প্রধান সুফিয়া আলম। নির্বাচিত ১০ ট্রাস্টি হলেন সর্বজনাব আইয়ূব খান, ড. আব্দুল হাই মুর্শেদ, সৈয়দ তুহেল আহমদ, ড. আব্দুল্লাহ ফলিক, হারুন খান, হোসাইন মোহাম্মদ শিপার, ড. মাহেরা রুবি, মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান, সালমা সিদ্দিকা ও সৈয়দা আঞ্জুমানারা বেগম। এই ১০ সদস্যের ট্রাস্টি বোর্ড গত ৯ নভেম্বর অনুষ্ঠিত প্রথম সভায় চেয়ারম্যান, সেক্রেটারি ও ট্রোজারার নির্বাচনসহ বিভিন্ন উপ-কমিটি ঘোষণা করে।
নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান জনাব আইয়ূব খান এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন, আল্লাহ তায়ালার ঘর রক্ষণাবেক্ষনের যে দায়িত্ব আমাদের ওপর ন্যস্ত করা হয়েছে তা যথাযথভাবে আঞ্জাম দেয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। আমরা মসজিদের একেকজন খাদেম ছাড়া আর কিছুই নয় । মসজিদের সেবাকার্যক্রম বৃদ্ধির মাধ্যমে মসজিদকে আরো এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই হবে আমাদের মুল লক্ষ্য । আর এই জন্য এবারের নির্বাহী কমিটিতে একাধিক উপ-কমিটি গঠন করে যোগ্য ট্রাস্টিদের দায়িত্ব বন্টন করে দেয়া হয়েছে, যাতে আরো বেশি কাজ করা যায় ।
তিনি বিদায়ী চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান ও ট্রেজারার মোহাম্মদ আব্দুল মালিকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, গত ৮ বছর দায়িত্ব পালনকালে তাঁরা মসজিদের উন্নয়নে প্রশংসনীয় ভুমিকা পালন করেছেন। বিশেষ করে, বহুমুখী ফান্ডরেইজিং কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে দাতাদের উল্লেখ্যযোগ্য পাওনা (ক্বরজে হাসানা) পরিশোধ করে মসজিদকে ঋণমুক্তির পর্যায়ে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছেন । মহান আল্লাহ তায়ালা তাঁদেরকে যেন উপযুক্ত প্রতিফল দান করেন।
তিনি আরো বলেন, মসজিদের উন্নয়নে আগামী বছরগুলোতে আমাদের বেশ কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। এসবের মধ্যে রয়েছে- নতুন প্রজন্মকে মসজিদের সাথে সম্পৃক্ত করতে একটি ইয়ুথ ফোরাম গঠন, ভলান্টিয়ারদের কার্যক্রম পর্যালোচনা ও নতুন ভলান্টিয়ার নিয়োগ, কমিউনিটির মানুষের সাথে ঘনিষ্ট সম্পর্ক গড়ে তোলা, বৃটিশ সোসাইটিতে মসজিদকে সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা এবং ইসলাম সম্পর্কে মূলধারার মিডিয়া ও বৃটিশ সোসাইটিতে সৃষ্ট নানা বিভ্রান্তি দূর করতে কাজ করা। এছাড়াও মসজিদের মুল হল সম্প্রসারণ, ইস্ট লন্ডন মসজিদের গম্বুজ প্রতিস্থাপন ও হোয়াইটচাপেল রোডের প্রবেশ পথে আধুনিক সুযোগ সুবিধাসম্পন্ন গেইট নির্মাণ করা।
বিদায়ী চেয়ারম্যান জনাব হাবিবুর রহমান বলেন, প্রায় তিন দশক সময় এই মসজিদের খেদমতে নিজেকে নিয়োজিত রাখার আমার সুযোগ হয়েছে । তবে চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ হয়েছে বিগত ৮ বছর । মহান আল্লাহ তায়ালা মসজিদের সাথে সম্পৃক্ত থাকার মাধ্যমে আমাকে তাঁর করুণা লাভের যে সুযোগ দিয়েছেন-এজন্য আমি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ । আমাদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান জনাব আইয়ুব খান এ ক্ষেত্রে আরো বেশি অভিজ্ঞ, যিনি তাঁর পুরো জীবনই মসজিদের জন্য উৎসর্গ করে দিয়েছেন। আমি আশাবাদি তাঁর বলিষ্ট নেতৃত্বে নতুন কমিটি মসজিদকে অনেকদুর এগিয়ে নিয়ে যাবে। আমি তাঁর উত্তোরোত্তর সাফল্য ও কল্যাণ কামনা করি।
মসজিদকে এই পর্যায়ে নিয়ে আসার পেছনে যারা সহযোগী ভুমিকা পালন করেছেন তাঁরা হলেন মসজিদের সাধারণ সদস্য, ট্রাস্টি, স্টাফ, ভলান্টিয়ার ও মুসল্লি। আমি তাঁদের সকলকে কঠোর পরিশ্রমের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। সকলের সম্মিলিত সহযোগিতায় বিগত বছরগুলোতে আমরা অনেক কিছুই অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি । ইস্ট লন্ডন মসজিদের উন্নয়নের পাশাপাশি কমিউনিটির বিভিন্ন মসজিদ ও প্রতিষ্ঠানকেও বিভিন্নভাবে সাহায্য করার চেষ্টা করেছি । আমি সবসময়ই বলে থাকি, আমরা এই মসজিদের একেকজন খাদিম ছাড়া আর কিছুই নয়। সম্মিলিত প্রচেষ্টাই এই সাফল্যের চাবিকাটি । আমাদের ঐক্যই আমাদের শক্তি। সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করে এই মসজিদের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষায় কাজ করতে আমরা সচেষ্ট থাকবো। প্রস্তুত থাকবো যেকোনো ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার । এজন্য আমরা মহান আল্লাহ তায়ালার সাহায্য কামনা করি।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন