জিবি নিউজ 24 ডেস্ক //
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার যথেষ্ট উদারতা দেখিয়েছি। মানবিক দিক বিবেচনা করে নিজের নির্বাহী ক্ষমতা দিয়ে যতটুকু সম্ভব খালেদা জিয়াকে বাসায় থাকা এবং চিকিৎসার সুযোগ করে দিয়েছি। ইচ্ছা মতো হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে পারছেন। এটাই কি যথেষ্ট নয়?
বুধবার (০৮ ডিসেম্বর) যুবলীগের ৪৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।রাজধানীর খামারবাড়ির কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত এ আলোচনা সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অংশ নেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খালেদা জিয়ার বড় বোন আর ভাই আমার কাছে এসেছে। বোন-বোনের স্বামী, ভাই এরা সব এসেছিল। তারা আমার কাছে আসলো যখন, খুব স্বাভাবিকভাবে রেহানাও আমার সঙ্গে উপস্থিত ছিল। মানবিক দিক থেকে আমি তাকে তার বাড়িতে থাকার, আমার এক্সিকিউটিভ পাওয়ারে যতটুকু করতে পারি, নির্বাহী যে ক্ষমতা আমার আছে সেটার মাধ্যমে আমি তার সাজাটা স্থগিত করে, তাকে তার বাসায় থাকার অনুমতি এবং চিকিৎসার অনুমতি দিয়েছি। ’
১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন পালন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনা, বঙ্গবন্ধুর খুনিদের পুরস্কৃত করা, আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের নির্যাতনসহ বিভিন্ন সময় খালেদা জিয়া ও জিয়াউর রহমান দ্বারা আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আর কত আশা করে তারা? কীভাবে আশা করে?
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকের বাংলাদেশে সব থেকে দামী যে হাসপাতাল, যে হাসপাতাল সবচেয়ে ব্যয়বহুল, সেখানেই কিন্তু তার চিকিৎসা হচ্ছে। ’
তিনি বলেন, ‘তার ছেলের বউ তো ডাক্তার। তারেকের বউ ডাক্তার, শুনেছি সে নাকি অনলাইনে শাশুড়িকে দেখে, কই ছেলে-ছেলের বউ তো কোনদিন দেখতে আসলো না। অবশ্য কোকোর বউ এসেছে। তারা তো আসেনি। ’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়া এরশাদকে কারাগারে বন্দি করে রেখেছিল, তাকে চিকিৎসার জন্য কোনো দিন সুযোগ দেয়নি। রওশন এরশাদকে দেয়নি। জিয়াউর রহমান যখন ক্ষমতায় আমাদের সাজেদা চৌধুরীর অপারেশন হয়েছিল, ঘা শুকায়নি সেই ব্যান্ডেজ অবস্থায় তাকে গ্রেফতার করে জেলে ভরেছিল জিয়াউর রহমান। একই অবস্থা মতিয়া চৌধুরীর, তাকেও তখন জেলে দিয়েছিল। তার তখন টিবি হয়েছিল, অসুস্থ ছিল। এ রকম বহু অন্যায় অবিচারের কথা আছে।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার ছেলে কোকো যখন মারা গেল আমি গেলাম সহানুভূতি দেখাতে। আমি হঠাৎ করে যাইনি। আমার এখান থেকে মিলিটারি সেক্রেটারি যোগাযোগ করেছে, এডিসি যোগাযোগ করেছে। সময় নির্দিষ্ট করা হয়েছে, আমি সময় মতো গেছি। আমি যখন রওনা হয়ে গেছি, গুলশান রোডে তখন শুনলাম তারা ওই বাড়ির মেইন গেইট খুলবে না, আমার গাড়ি ঢুকতে দেবে না। আমি বললাম, এত দূর যখন চলে এসেছি ফিরে যাব কেন? পাশে নিশ্চয়ই ছোট পকেট গেইট আছে, সেখান দিয়েই যাব। যখন আমার গাড়িটা বাড়ির সামনে থেমেছে, এসএসএফর যে অফিসার বাড়ির ভেতরে ছিল জাস্ট বাইরে এসে দাঁড়িয়েছে তারা দরজা বন্ধ করে তালা দিয়ে দিয়েছে। আমি গাড়ি থেকে নেমে বেকুব, আমি আর ভেতরে ঢুকতে পারি না। আমি গেছি একটা মা, সন্তানহারা, তাকে সহানুভূতি দেখাতে। সেখানে এভাবে অপমান করে দিলো তারা।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে শেখ হাসিনা বলেন, তারা যে সহানুভূতি দেখাতে বলে, তারা যে সহযোগিতা চায়, খালেদা জিয়া কী আচরণ করেছে! ২১ আগস্ট যে গ্রেনেড হামলা, তার আগে খালেদা জিয়ার কী বক্তব্য ছিল? শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা, কোনো দিন বিরোধী দলের নেতাও হতে পারবে না। আওয়ামী লীগ ১০০ বছরেও ক্ষমতায় যেতে পারবে না। আল্লাহর খেলা বোঝা ভার। বরং খালেদা জিয়াই প্রধানমন্ত্রী হতে পারেননি, বিরোধী দলের নেতাও হতে পারেননি। এটা তার ওপরই ফলে গেছে।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতাকে পুঁজি করে বিএনপি আন্দোলন করছে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ বলেন, ‘তো যাই হোক তবু বিএনপি এতদিন পরে একটা সুযোগ পেয়েছে খালেদা জিয়ার অসুস্থতার, এই দাবিতে তারা আন্দোলন করছে। খুব ভালো, তারা আন্দোলন করুক। কিন্তু আমার যতটুকু করার ছিল সেটা কিন্তু করেছি।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। সভাপতিত্ব করেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। সঞ্চালনা করেন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান খান নিখিল।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন