মধ্যপ্রাচ্য প্রতিনিধি : সৌদি আরবের রিয়াদ, জেদ্দা, দাম্মাম রুটে বিমানের টিকেট মূল্য সহনীয় পর্যায়ে নির্ধারণের দাবীতে রিয়াদ রিজিওনাল ম্যানেজারের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন রিয়াদ আওয়ামী পরিষদ-আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ নেতৃবৃন্দ । এম আর মাহবুবের নেতৃত্বে এই সময় উপস্হিত ছিলেন, গাজী সাঈদ, এম এ জলিল, ফারুক হোসেন, মনিরুল ইসলাম, ইলিয়াস ভূইয়া, বশির খন্দকার, ইয়াকুব আলম, শিবলি সাদিক, কাইয়ুমুল হক সহ শ্রমজীবি প্রবাসীরা ।
নেতৃবৃন্দ বলেন, টিকেটের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি নতুন করে রেমিট্যান্স যোদ্ধা প্রবাসীদের দূর্ভোগে ফেলেছে। করোনাকালের পূর্বে এমনকি করোনাকালেও টিকেট মূল্য সহনীয় ছিলো। কিন্তু এখন সেই টিকেটের অধিক মূল্য দিতে হয় প্রবাসীদের। তারা আরও বলেন, পূর্বের ন্যায় টিকেট মূল্য সহনীয় করা, প্রবাসীদের মরদেহ বিনামূল্যে বহন, অসুস্থদের বহনে মূল্যছাড়, ব্যাগেজের ওজন আসা যাওয়ার সমান করতে হবে।
বরাবর,
ড. আবু সালেহ মোস্তফা কামাল
ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও সিইও,
বাংলাদেশ বিমান, বলাকা, কুর্মিটোলা, ঢাকা।
মাধ্যমঃজনাব আল মামুন ফারুক
রিজিওনাল ম্যানেজার
বাংলাদেশ বিমান, রিয়াদ, সৌদি আরব।
বিষয়ঃ বাংলাদেশ বিমানের সৌদি আরব রুটে অস্বাভাবিক ভাড়া বৃদ্ধি প্রসংগে।
জনাব,
যথাযথ সম্মান পূর্বক আপনার কাছে আমরা সৌদি আরব আওয়ামী পরিষদ, সহযোগী সংগঠন ও প্রবাসীদের পক্ষ থেকে যৎ সামান্য কিছু বক্তব্য তুলে ধরতে চাই।
আমাদের রাষ্ট্র, সরকার,গণমাধ্যম জোরেশোরেই বলে থাকেন আমরা প্রবাসীরা"
রেমিটেন্স যোদ্ধা"। আমাদের শ্রম ঘামের ফসলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভাণ্ডার স্ফীত হচ্ছে অবিরাম। বর্তমান শ্রম বান্ধব সরকার এবং বিশেষ ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রবাসীদের মংগলে নানামুখী কার্যক্রমও হাতে নিয়েছেন।
কিন্ত এই উদ্যোগ সমূহকে মাঝে মধ্যেই বাংলাদেশ বিমানের অযৌক্তিক এবং অস্বাভাবিক ভাড়া বৃদ্ধি প্রশ্নবিদ্ধ করে দেয়।
কিছুদিন আগেও বিমানের সৌদি আরব রুটে যে ভাড়া ছিল ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা তা বর্তমানে কোন যৌক্তিক কারন ছাড়াই বাড়ানো হয়েছে। যার বর্তমান রূপ ৭৫ থেকে ৯০ হাজারে দাঁড়িয়েছে। বিমানের এই ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়টিকে পূঁজি করে বিদেশী বিমান সংস্থাগুলিও অযৌক্তিক ভাড়া বাড়িয়ে দিচ্ছে। যা প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য অসহনীয় হয়ে উঠেছে।
উল্লেখ্য যে আমাদের প্রতিবেশী দেশ নেপাল, ভারত, শ্রীলঙ্কার তুলনায় বাংলাদেশ থেকে বিমানের মধ্যপ্রাচ্যগামী বিমানের ভাড়া কয়েকগুণ বেশী।
আশ্চর্যের বিষয় যে সব দেশে বাংলাদেশী শ্রমবাজার বিদ্যমান, কেবলমাত্র সেইসব দেশে যাতায়াতের ক্ষেত্রেই বিমান টিকিটের দুষ্প্রাপ্যতা এবং অস্বাভাবিক ভাড়া বৃদ্ধির ঘটনা ঘটে।
এখানে উল্লেখ করা অসামঞ্জস্য হবে না যে বর্তমানে ঢাকা থেকে মাত্র ৬ ঘন্টার ভ্রমণ পথ সৌদি আরবে ভাড়া লাগে প্রায় ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা। অথচ ঢাকা থেকে নিউইয়র্কের ২৩ ঘন্টার ভ্রমণ পথে ভাড়া লাগছে মাত্র ৬৫ হাজার টাকা।
রেমিটেন্স যোদ্ধা বিশেষণে অলংকৃত শ্রমিকদের প্রতি এটি কোন ভাবেই সঠিক নয় বলেই আমরা মনে করি।
এক্ষেত্রে বাংলাদেশ থেকে আন্তর্জাতিক রুটে বিমান পরিচালনার ক্ষেত্রে কঠোর নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে অবিলম্বে এয়ার টিকিটের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে নামিয়ে এনে অসহায় কর্মীদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে নির্ধারণ করার জোর দাবী জানাচ্ছি।
সমস্যা নিরসনের জন্য অতি সম্প্রতি বিভিন্ন মহল থেকে বিমানের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি যে সব গুরত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরা হয়েছে তার সাথে আমরা একমত পোষণ করে আপনার মাধ্যমে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই।
(ক) সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষের তদারকির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন রুটে সর্বনিম্ন ও সর্ব্বোচ ভাড়া নির্ধারণ করা।
(খ) বর্তমানে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ হাজার অপেক্ষমান প্রবাসী যাত্রীদের সংকট সমাধানের জন্য অনতিবিলম্বে বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা।
(গ) কোন ট্রাভেল এজেন্সির কাছে কোন অগ্রিম টিকিট ইস্যু না করে সব এয়ারলাইনের অবিক্রিত আসন দৃশ্যমান রাখা।
(ঘ) বিদেশগামী কর্মীদের জন্য লেবার ফেয়ার চালু করা।
(ঙ) দেশের বিমান সংস্থা বাংলাদেশ বিমানকে ভাড়ার মডেল তৈরি করে বিদেশী এয়ারলাইনন্স গুলোকে তা অনুসরণ করার উদ্যোগ নেয়া।
(চ) কোন গন্তব্যে হঠাৎ যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে সেই রুটে বিমানের বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করা এবং সিভিল এভিয়েশনের কার্যকরী ভূমিকার মাধ্যমে বিমান ভাড়ার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মাইলস নীতিমালা অনুসরণ করা।
আমরা আশা করি আপনার সদয় ভূমিকা মধ্যপ্রাচ্যের প্রবাসীদের সমস্যা সমাধানে আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করবে।
আমরা প্রতীক্ষায় থাকবো সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আশু সমাধানের আনন্দ খবর শ্রবণের জন্য।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন