জিবি নিউজ 24 ডেস্ক //
আওয়ামী লীগ সরকার দেশের বিচার বিভাগে কখনও হস্তক্ষেপ করেনি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু সবসময়ই চাইতেন স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা। আমরা সরকারে এসে সেই স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছি।
মঙ্গলবার (২৮ ডিসেম্বর) বিকেলে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক প্রকাশিত ‘বঙ্গবন্ধু ও বিচার বিভাগ’ শীর্ষক স্মারকগ্রন্থ এবং ‘ন্যায় কণ্ঠ’ শীর্ষক মুজিববর্ষ স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী।
স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে টানা তিনবারের শেখ হাসিনা বলেন, প্রতিটি ক্ষেত্রে আপনারা দেখবেন একের পর এক আমরা কাজ করে গেছি। দ্বিতীয়বার যখন এসেছি তখন আমরা দি কোর্ট অব ক্রিমিনাল প্রসিডিউর সংশোধন বিল– ২০০৯ পাস করে বিচার বিভাগ পৃথিকীকরণকে স্থায়ী রূপ দিয়েছি। এমনকি অর্থনৈতিক ভাবেও যেন বিচার বিভাগ স্বাধীনতা অর্জন করে সেই ব্যবস্থাটাও কিন্তু আমি ৯৬ সালে এসে করে দিয়েছিলাম। পরবর্তীতে এসে সব রকম সুযোগ সুবিধাগুলো বাড়ানো, এর মাঝে আপনারা জানেন বিভিন্ন জেলায় বোমা মেরে বিচারকদেরও হত্যা করা হয়েছে। সেখানে আমরা তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করেছি।
বিচারকদের সুযোগ সুবিধা ও দক্ষতা বাড়ানোর উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিচারকদের থাকার ব্যবস্থা, তাদের চলার ব্যবস্থা, সব ধরনের ব্যবস্থা, সুযোগ সুবিধা আমরা সাধ্যমত করে দিয়েছি। আইন কমিশন আমরা গঠন করি। বিচারকদের দক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট আমি প্রতিষ্ঠা করে দেই। এখনতো পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ট্রেনিং নেওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। অন্য দেশে কীভাবে হয় সেটা আমাদের দেশের মানুষের জানা উচিৎ, সেই ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি।
তিনি বলেন, গ্রামের যেসব হতদরিদ্র মানুষ বিচার পায় না, তাদের জন্য লিগাল এইড কমিটি গঠন ও এ জন্য আলাদা অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। গরীব সাধারণ মানুষ যেন বিচার পায় সেই ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। এটা আমরা ২০০০ সালে প্রণয়ন করেছি।
অবকাঠামোগত উন্নয়নের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগে মাত্র হাতে গোনা ৭ জনের বেশি বিচারক বসতে পারতেন না, এনেক্স ভবন করে দিয়েছি। ৪০টা চেম্বারের ব্যবস্থা করে দিলাম। পাশাপাশি প্রত্যেকটা জেলা কোর্ট নতুন ভাবে গড়ে তোলা হয়েছে।
উচ্চ আদালতে নারী বিচারক নিয়োগে নিজের প্রচেষ্টার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, পাকিস্তান আমলে যে আইন ছিল সেখানে বিচার প্রক্রিয়ায় নারীরা অংশ নিতে পারবে না। জাতির পিতা সেই আইন পরিবর্তন করে সুযোগ দিলেন। কিন্তু আমি এসে দেখলাম আমাদের উচ্চ আদালতে কোনো নারী নেই। আমি অনুরোধ করলাম প্রধান বিচারপতি এবং রাষ্ট্রপতিকে যে, সেখানে নারীদের সুযোগ দিতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সব সময় বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়েই চলতে হবে। আমাদের দেশটাও যেন বিশ্বে একটা মর্যাদা নিয়ে চলবে, সেই সরঙ্গ একটি দেশের সব অঙ্গও যেন সেভাবে মর্যাদা নিয়ে চলতে পারে, আমরা সেটাই করতে চাই। সেভাবেই আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।
অনুষ্ঠানে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ছাড়াও অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন