সৈয়দ নাজমুল হাসান, ঢাকা ||
রাত পোহালেই উপমহাদেশের সর্ববৃহৎ ও প্রাচীন ছাত্র সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য পালিত হবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
আজ মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) সকাল ৮ টায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর ধানমণ্ডি ৩২ এর বাড়ির সামনে অবস্থিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানানোর মধ্য পালিত হবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
সংগঠনটির ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করতে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি নিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। এ উপলক্ষে সকাল সাড়ে সাতটায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সকল সাংগঠনিক কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল আটটায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, সকাল নয়টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল প্রাঙ্গণে কেক কাটা হবে।
অপরদিকে সকাল আটটায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদের প্রতিনিধি টিম কর্তৃক শ্রদ্ধাঞ্জলি, ফাতেহা পাঠ ও দোয়া মাহফিল করা হবে।
এদিকে বেলা ২ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের অপরাজেয় বাংলা প্রাঙ্গণে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভ উদ্বোধন ও আনন্দ শোভাযাত্রা করবে সংগঠনটি।
এছাড়া, বুধবার (৫ জানুয়ারি) সকাল ১১ টায় রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইইবি) এ ছাত্রলীগ আয়োজন করেছে আলোচনা সভার। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে গণভবন থেকে সরাসরি ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) সকাল ১১ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে পথ শিশুদের মাঝে শিক্ষা সামগ্রী বিতরন ও বিকাল ৩ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৃক্ষরোপণ করবে সংগঠনটি।
৭ জানুয়ারি বিকাল ৩ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বরে দুস্থদের মাঝে করা হবে শীতবস্ত্র এবং ৮ জানুয়ারি সকাল ১১ টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাশে বটতলায় স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি পালন করবে সংগঠনটি।
এছাড়া, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বর্ণাঢ্যভাবে পালন করতে দেশজুড়ে সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচি নিয়েছে সংগঠনটি।
উল্লেখ্য, ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠা করেন। জন্মের প্রথম লগ্ন থেকেই ভাষার অধিকার, শিক্ষার অধিকার, বাঙালির স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠা, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থান, সর্বোপরি স্বাধীনতা ও স্বাধিকার আন্দোলনসহ বিভিন্ন সঙ্কটে সবচেয়ে সফল সাহসী সারথি রেখেছে সংগঠনটি। ছাত্রলীগ প্রতিষ্ঠার পর সর্বপ্রথম মাতৃভাষা বাংলার জন্য সংগ্রাম করেছিল। আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ভূমিকা ছিল। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে সর্বকনিষ্ঠ মন্ত্রী ছিলেন, যাতে ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর ভ্যানগার্ড ছিল। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ছাত্রলীগ বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত। করোনাভাইরাস মহামারী প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করে সংগঠনটি। এর মধ্যে ছিল দরিদ্র মানুষদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ, মোবাইল ফোনে চিকিৎসকদের স্বাস্থ্যসেবা, অসুস্থ মানুষের বাড়িতে ওষুধ পৌঁছে দেওয়া, পবিত্র রমজানের ইফতার বিতরণ, ন্সবার জন্য ফ্রি অ্যাম্বুলেন্স সেবা প্রদান, ফ্রি অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ ইত্যাদি। ক্যাম্পাস, মসজিদ, বাজার ও মোড়ে মোড়ে হাত ধোয়ার জন্য সাবান ও পানির ব্যবস্থাও করেছে সংগঠনটি। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে কৃষকদের কষ্টের ধান যাতে মাঠেই নষ্ট না হয় তার পরিপ্রেক্ষিতে বিনামূল্যে ধান কেটে কৃষকদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন