সমন্বিত উদ্যোগেই সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে হবে : মোস্তফা

সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে না পারার পেছনে সরকারের কূটনৈতিক দুর্বলতা বহুলাংশে দায়ী বলে মন্তব্য করে বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেন, সমন্বিত উদ্যোগেই সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে হবে। এ বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বের সঙ্গে দেখা উচিত। বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশকে সীমান্ত হত্যা বন্ধে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। দুই দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে একেবারে গোড়া থেকে কাজ শুরু করতে হবে।

শুক্রবার (৭ জানুয়ারি) নয়াপল্টনের যাদু মিয়া মিলনায়তনে “৭ জানুয়ারী শহীদ ফেলানী দিবস স্মরণে” বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতি আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

ফেলানী দিবস উপলক্ষে তিনি বলেন, ফেলানী হত্যার ফলে বাংলাদেশে এবং ভারতেরও বিভিন্ন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি  হয়েছিল। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হয় ফেলানীর ঝুলন্ত দেহের ছবি। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া ও ন্যায় বিচারের দাবি থাকলেও সে বিচার আজও সমাপ্ত হয়নি। ফেলানীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নির্দেশও আমলে নেওয়া হয়নি। যা অত্যান্ত দু:খজনক।

ন্যাপ মহাসচিব বলেন, ভালো প্রতিবেশী দেশ সীমান্তে চলাচলকারীদের সঙ্গে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী আচরণ করে। ভারত সরকারের এটা নিশ্চিত করা উচিত যে তার সীমান্ত রক্ষী বাহিনী মানুষের মৌলিক অধিকারের প্রতি সম্মান করছে এবং আইনের শাসন অনুসরণ করছে। বিএসএফ এবং অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারে জাতিসংঘের সাধারণ নীতিমালা মেনে চলার জন্য প্রকাশ্যে আদেশ দেওয়া উচিত। বিএসএফের নিজস্ব বিচার ব্যবস্থা এখনও পর্যন্ত তার সদস্যদের বিচার করতে পারেনি। ভারত সরকার বেসামরিক কর্তৃপক্ষকে নির্যাতনের মামলাগুলো তদন্তের অনুমতি দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে।

সংগঠনের চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা'র সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ গ্রহন করেন সোনার বাংলা পার্টি সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ হারুন-অর-রশিদ, জাতীয় কৃষক-শ্রমিক মুক্তি আন্দোলন সমন্বয়কারী কৃষক মো. মহসীন ভুইয়া, জাতীয় নারী আন্দোলন সভাপতি মিতা রহমান, সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক এইচ এম বিল্লাল হোসেন রাজু, নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি মোঃ মঞ্জুরুল ইসলাম কাজল, মায়াবী কাজল, এ এইচ এম রায়হান প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যে মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা বলেন, বাংলাদেশের সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর ভারত তোষননীতির কারনেই সীমান্তহত্যা ও নির্যাতন বন্ধ হচ্ছে না। বাংলাদেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিনত করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবেই ভারত সীমান্তহত্যা ও নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, সীমান্তে ভারতীয় আগ্রাসন সম্পর্কে সরকারের মন্ত্রীদের বক্তব্য শুনে মনে হয় না তারা বাংলাদেশের মন্ত্রী, মনে হয় তারা ভারতীয় জনপ্রতিনিধি। ফেলানী হত্যার মধ্যেদিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহীনি বিএসএফের বরবরতার চিত্র ফুটে উঠেছে।

সৈয়দ হারুন-অর-রশিদ বলেন, বিএসএফ আর্ন্তজাতিক রীতিনীতির প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে সীমান্তে নির্বিচারে নিরিহ বাংলাদেশী  নাগরিকদের হত্যা, খুন, গুম, অপহরন নির্যাতন, নিপীড়ন চালাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে সরকার দেশের জনগনের সাথে প্রতারনা করছে।

কৃষক মো. মহসীন ভুইয়া বলেন, ৭ জানুয়ারী ফেলানীকে হত্যা করে কাঁটা তারের বেড়ায় ঝুলিয়ে রাখা মানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা।

মিতা রহমান বলেন, কাঁটাতারে ঝুলন্ত ফেলানীর লাশ ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আজ প্রতিবাদের প্রতীক। এই ছবি শুধু ফেলানীর লাশের ছবি নয়, এই ছবি কাঁটাতারে বিদ্ধ বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব।

 

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন