'সলঙ্গা বিদ্রোহ' চাপা পড়া ইতিহাস : সাদেক সিদ্দিকী

জাতীয় পার্টি-জেপি প্রেসিডিয়াম সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক সিদ্দিকী বলেন, ১৯২২ সালের ২৭ জানুয়ারি বৃটিশ বিরোধী আজাদীর লড়াইয়ে সলংগা আন্দোলন ভারতীয় উপমহাদেশে মাইলফলক হিসাবে চিহ্নিত। 'সলঙ্গা বিদ্রোহ' চাপা পড়া ইতিহাস। এই ইতিহাস তুলে আনতে হবে আমাদের স্বার্থেই।

বুধবার (২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর স্টুডিও থিয়েটারে 'সলঙ্গা বিদ্রোহ  শতবর্ষ উদযাপন জাতীয় কমিটির আয়োজনে ঐতিহাসিক সলঙ্গা বিদ্রোহের শতবর্ষ উদযাপন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, সালঙ্গা শহীদরা তারাই যাঁদের শাহাদাতের রক্তপিচ্ছিল পথ মাড়িয়ে ভারতবর্ষ থেকে এক সময় শোষণের হাত গুটাতে বাধ্য হয়েছিল ব্রিটিশ উপনিবেশবাদীরা। এবং এই পথ ধরেই কিছুকাল পরে আমরা পেয়েছি স্বাধীন একটি ভূখণ্ড বাংলাদেশ। পেয়েছি একটি মানচিত্র আর লাল সবুজের পতাকা।

অনুষ্ঠানে আলোচনা সভা, সলঙ্গা বিদ্রোহ নাটক মঞ্চায়ন, বৃন্ত আবৃত্তি, দ্রোহনৃত্য  ও বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়।

বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম তোফাজ্জল হোসেনের সভাপতিত্বে ও সলঙ্গা বিদ্রোহ শতবর্ষ উদযাপন জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব  কবি টিমুনী খান রীনোর সঞ্চালনায় উদ্বোধণ করেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ আব্দুল আহাদ চৌধুরী, প্রধান আলোচকের বক্তব্য রাখেন রাষ্ট্রচিন্তক, শিক্ষাবিদ ও তর্কবাগীশ  পরিষদের উপদেষ্টা কর্নেল (অব.) আশরাফ আল দীন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সলঙ্গা বিদ্রোহ শতবর্ষ উদযাপন জাতীয় কমিটি চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ গণআজাদী লীগের মহাসচিব মুহাম্মদ আতা উল্লাহ খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, বাংলাদেশ কংগ্রেস মহাসচিব অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইয়ারুল ইসলাম, বাংলাদেশ জাতীয় লীগ সভাপতি ড্ শাহরিয়ার ইফতেখার ফুয়াদ, বিএনএ'র মহাসচিব মেজর (অব.) ডা. কবি শেখ হাবিবুর রহমান, আওয়ামী লীগ নেতা ব্যারিষ্টার জাকির আহমেদ, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশন সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়াসিউজ্জামান লেনিন, সাবেক ডিআইজি কবি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন, তর্কবাগীশ সাহিত্য পরিষদের সভাপতি  ড হাবিবুর রহমান খান প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ, এফডিপি আহ্বায়ক ড এ আর খান, এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, সোনার বাংলা পার্টির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ হারুন-অর-রশিদ, এনডিএম সাংগঠনিক সম্পাদক লায়ন নুরুজ্জামান হীরা, কবি কাওসার হোসেন সুইট, এ্যাডভোকেট কবি মোঃ ইকবাল হোসেন ভুইয়া, বাংলাদেশ গণ আজাদী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় জাগো নারী ফাউন্ডেশনের সভাপতি রেহেনা আকতার রেনু, শিল্পোদ্যোক্তা ও রাজনীতিবিদ সৈয়দা শাহিতাজ বারী, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য ফারহানা ইসলাম রিমা, নারী নেত্রী রোকসানা আমীন সুরমা, জাতীয় নারী আন্দোলনের সভাপতি মিতা রহমান, আরএনএন টিভি'র চেয়ারম্যান আলহাজ্ব চান মিয়া, জাতীয় ভোক্তা অধিকার আন্দোলন সাংগঠনিক সম্পাদক  মোঃ মিজানুর রহমান-সহ  জাতীয়  নেতৃবৃন্দ ।

অনুষ্ঠানে  সলঙ্গা বিদ্রোহ  নাটকের  মঞ্চায়ন করেন ঢাকা মৌলিক  নাট্য দল, বৃন্ত আবৃত্তি  পরিবেশন করেন  শিল্প  বৃত্ত,  দ্রোহ নৃত্য পরিবেশন করেন  রুম ঝুম নৃত্যালয় ও সৃষ্টিশীল একাডেমি।

শতবর্ষ উদযাপন জাতীয় কমিটির  পক্ষ হতে, বীরমুক্তিযোদ্ধা, ভাষা সৈনিক,আলোকিত  রাজনীতিবিদ, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, নারীনেত্রী  ও সংস্কৃতজনকে আজীবন সম্মাননা প্রদান করা  হয়।

এসময় বক্তরা বলেন, শতবর্ষে আজকের প্রজন্মের নিকট সালঙ্গা বিদ্রোহ নতুন ও বিস্ময়কর মনে হতে পারে। এটা স্বাভাবিক কারণ তৎকালিন সেদিন পাবনা জেলার (বর্তমান সিরাজগঞ্জ জেলা) সলঙ্গার হাটের যে গণ বিদ্রোহ ও হত্যাকান্ড ঘটেছিল তা নিয়ে খুব বেশি লেখালেখি হয়নি। কালক্রমে এই উপমহাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাস থেকে স্বাধীনতার ইতিহাস এর মধ্যে বাঙ্গালী মুসলমান নেই বললেই চলে। ফলে মুসলমানদের বীরোচিত কাহিনী এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। আবার মুছেও ফেলা হয়েছে। সুবিধাবাদীরা নিজেদের মত করেই ইতিহাস রচনা করেছে। ফলে দুঃখজনকভাবে সংলগার ঘটনাটি ইতিহাসের কাদায় চাপা পড়ে গেছে।

তারা বলেন, মাওলানা আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশ সলঙ্গা বিদ্রোহ উপনিবেশিক শাসনের ভিত লড়িয়ে দিয়েছিলেন। সলঙ্গার রক্তসিক্ত বিদ্রোহ শুধু বাংলার মাটিকে সিক্ত করেনি, সিক্ত করেছে সমগ্র উপমহাদেশ। যে রক্তে ভেজা পিচ্ছিল পথে অহিংস, অসহযোগ আন্দোলনে যা কিছু অর্জিত হয়েছে তা সলঙ্গা বিদ্রোহেরই ফসল।

 

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন