করোনাকালো বাড়লো শিক্ষার খরচ, ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা

জিবি নিউজ 24 ডেস্ক //

করোনা মহামারির আঘাতে আয় কমেছে বহু মানুষের। পড়াশোনা বন্ধ হয়ে গেছে দরিদ্র পরিবারের অনেক ছেলেমেয়ের। প্রতিকূলতার মধ্যেও যারা এখনো ঝরে পড়েনি, তাদের জন্য এবার দুঃসংবাদ নিয়ে এসেছে খাতা-কলমসহ অন্যান্য শিক্ষা উপকরণের মূল্যবৃদ্ধি।

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কিছুদিন আগেও ২০০ পৃষ্ঠার একটি খাতা যেখানে ৫০ টাকায় কেনা যেত, এখন তা কিনতে হচ্ছে ৬০ টাকায়। অর্থাৎ, খাতার দাম বেড়েছে ২০ শতাংশ। একইভাবে বেড়েছে কলমেরও।

 

বহুল ব্যবহৃত ম্যাটাডোর ব্র্যান্ডের এক ডজন বলপেন কিছুদিন আগেও ৪৫ টাকায় পাওয়া যেত। এখন তা ৫৫ টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছে না।

গত বুধবার রাজধানীর আজিমপুর এলাকার একটি দোকান থেকে মেয়ের জন্য খাতা-কলম কিনছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। দাম শুনে ক্ষুব্ধ এই অভিভাবক বলেন, খাতা-কলমের মতো অতিপ্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়াটা দুঃসংবাদ। সরকারের কাছে অনুরোধ, অন্তত এটা যেন সহনীয় পর্যায়ে রাখা হয়।

খাতার দাম বৃদ্ধির পেছনে কাগজের বাজারে অস্থিরতাকে দায়ী করছেন ব্যবসায়ীরা। কাগজ আমদানিকারকেরা জানান, দুই মাস আগেও প্রতি টন কাগজের দাম ছিল ৮০-৮২ হাজার টাকা। বর্তমানে তা বেড়ে ৮৮-৯৩ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

পুরান ঢাকার নয়াবাজারের কাগজ আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স প্রত্যাশী ট্রেডার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার প্রভাব দেশে পড়েছে। দুই মাস আগে প্রতি টন কাগজের দাম ছিল ৫৫০ মার্কিন ডলার, বর্তমানে তা ৮৫০ ডলারে বিক্রি হচ্ছে।

পাইকারি বাজারে দাম বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে কাগজের খুচরা বাজারে। পুরান ঢাকার বাবুবাজারের সৈয়দ হাসান আলী লেনের মেসার্স জেনারেল স্টেশনারির মালিক লোকসান হোসেন জানান, আগে এক রিম কাগজের দাম ছিল ১ হাজার ১০০ টাকা। বর্তমানে তা ১ হাজার ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

করোনায় দেড় বছরের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। তখন খাতা-কলমের ব্যবহারও অনেকটাই কমে গিয়েছিল। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর সুযোগ বুঝে দাম বাড়িয়ে দেন ব্যবসায়ীরা।

অনেকের কাছেই গত বছরের খাতা মজুত থাকলেও এখন তাঁরাও আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিয়ে বাড়তি দামে কাগজ বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

খাতা-কলমের এমন দাম বৃদ্ধি শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। দাম সহনীয় রাখতে প্রয়োজনে ব্যবসায়ীদের প্রণোদনা দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষাবিদেরা।

শিক্ষার প্রধান উপকরণের খাতা-কলমের দাম যাতে ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে থাকে, সেদিকে নজর দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, করোনায় শিক্ষার্থীদের যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা পূরণ করা সম্ভব নয়। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষার প্রধান উপকরণের দাম সহনীয় রাখতে সরকারের নীতিনির্ধারণী মহলকে এগিয়ে আসতে হবে।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন