চেতনার জাগরণে এসেছে প্রাণের ফেব্রুয়ারি

জিবি নিউজ 24 ডেস্ক //

চেতনাকে শাণিত করার আহ্বানে বছর ঘুরে আবারও এসেছে ভাষার মাস, প্রাণের ফেব্রুয়ারি। ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ঢাকার রাজপথে জীবন উৎসর্গ করার স্মৃতি এ মাসেই সবচেয়ে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। সেই স্মৃতির সাড়ম্বর উদযাপন চলে সারা মাস ধরে। সেই ভাষার মাসের প্রথম দিন আজ। একুশের চেতনার রঙে আজ থেকে সাজতে শুরু করবে বাংলাদেশ।

ফেব্রুয়ারি এখন শোকের নয়; বরং শক্তির। কারণ, আমরাই সেই বাঙালি জাতি যারা ভাষার জন্য এ মাসে জীবন দিয়েছি। ভাষার জন্য বাংলার দামাল ছেলেদের আত্মত্যাগের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মেলে ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর। এদিন ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারি দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করে। এরপর থেকে দিবসটি বিশ্বের ভাষাপ্রেমী অন্য জাতিগুলোও উদযাপন করে আসছে।

 

দ্বি-জাতি তত্বের ভ্রান্ত নীতিতে পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর পরই পশ্চিম অংশের শাসকের পূর্ববাংলার জনগণের ওপর আধিপত্য বিস্তার শুরু করে। নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় শুরুতেই তারা বাঙালি জনগোষ্ঠীর ভাষার ওপর আঘাত হানে। মায়ের ভাষায় কথার বলার অধিকার তারা কেড়ে নিতে চায়।

মাতৃভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় পশ্চিম পাকিস্তানের শাসনযন্ত্রের ষড়যন্ত্র রুখতে পিছু হটেনি বাংলাদেশের মানুষ। ১৫২ সালের ফেব্রুয়ারিরতে প্রতিদিন রাজপথে চলতে থাকে মাতৃভাষা বাংলার দাবিতে মিছিল সমাবেশ। শুরু হয় বাংলাভাষা রক্ষার আন্দোলন। মায়ের মুখের ভাষাকে কেড়ে নিয়ে তারা রাষ্ট্রভাষা উর্দু করতে চেয়েছিল। আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অনেক চড়াই-উৎরাই পার করে চূড়ান্ত রূপ লাভ করেছিল ২১ ফেব্রুয়ারি। সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিকসহ আরও অনেকের বুকের রক্তের বিনিময়ে বাঙালি জাতি পায় মাতৃভাষার মর্যাদা। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন ঘটনা বিরল। ।

ভাষা আন্দোলনে সফলতার পথ ধরেই বাঙালি এগিয়ে যায় স্বাধিকার আন্দোলনে। এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তারই নেতৃত্বে দীর্ঘ ২৩ বছরের লড়াই-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় লাল-সবুজের পতাকা আর একটি সবুজ-শ্যামল ভূখণ্ড। এ কারণেই ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি বাঙালির কাছে এত তাৎপর্যমণ্ডিত।ফেব্রুয়ারি এলেই তাই আবেগাপ্লুত হয়ে ওঠে গোটা জাতি।

ফেব্রুয়ারি মানে চেতনা, গৌরব আর আত্মত্যাগের মাস। ফেব্রুয়ারি বাঙালির অবিনাশী চেতনার অফুরন্ত ঝরনাধারা। নানা অনুষ্ঠান আর আনুষ্ঠানিকতায় বাঙালি উদযাপন করে ভাষার মাস। বৈশ্বিক মহামারি করোনা পরিস্থিতিতে গতবছরের মতো এই ফেব্রুয়ারিও সাড়ম্বর উদযাপন সম্ভব হচ্ছে না। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত, জনসমাগম এড়ানো আর স্বাস্থ্যবিধিঅনুসরণের কারণে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড এবার আশানুরূপ দেখা যাবে না। তবু প্রাণের আবেগকে আনুবীক্ষণিক দানব করোনা কিছুতেই রুখতে পারবে না। একুশের চেতনায় শাণিত হবে সেই আবেগ, প্রতিবছরের মতো ভাষার মাস ঘিরে নতুন জাগরণ ছড়িয়ে পড়বে দিকে দিকে।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন