জিবি নিউজ 24 ডেস্ক //
এই সময় জ্বালানী গ্যাসের মূল্য বাড়ানো জনবিরোধী সিদ্ধান্ত হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
তিনি বলেন, এটা করা হলে প্রমাণ হবে দেশের মানুষের প্রতি সরকারের কোন দরদ নেই।
মঙ্গলবার (১ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন। সম্প্রতি বাংলাদেশের গ্যাস উৎপাদন কোম্পানীগুলো বর্তমান মূল্যের চেয়ে দ্বিগুন বাড়িয়ে গ্যাসের মূল্য পূনঃ নির্ধারণের প্রস্তাব দিয়েছে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনে।
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের বলেন, বর্তমানে পাইপলাইনে সরবরাহকৃত গ্যাসে দুই চুলার জন্য গ্রাহককে মাসে ৯৭৫ টাকা পরিশোধ করতে হচ্ছে। গ্যাসের দাম বৃদ্ধির যে প্রস্তাব দেয়া হয়েছে তাতে দুই চুলার মাসিক বিল বেড়ে দাঁড়াবে ২ হাজার ১শ টাকা। একই সাথে আবাসিক গ্রাহকদের ঘন মিটার প্রতি ৯টাকা ৩৬ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২০ টাকা ৩৫ পয়সা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। শিল্প কারখানায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত ১৩ টাকা ৮৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৩০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। আবার সার ও বিদ্যুত কেন্দ্রে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ৪ টাকা ৪৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৯টাকা ৬৬ পয়সা প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যদিকে হোটেল রেস্তোরায় ২৩ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সিএনজিতে ৩৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫ টাকা করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। যা দেশের সাধারণ মানুষের জীবনে বর্তমান প্রেক্ষাপটে মহা বিপর্যয় ডেকে আনবে। প্রত্যক্ষভাবে ও পরোক্ষভাবে মূল্য বৃদ্ধির এই অর্থ দেশের প্রতিটি মানুষের কাছ থেকে আদায় করা হবে। যা মানুষের জীবনকে অসহনীয় করে তুলবে।
তিনি আরো বলেন, এমনিতেই গ্যাসের বিল পরিশোধ করার পরও রান্নার জন্য লাইনে গ্যাস পায় না সাধারণ মানুষ। সে জন্য নিয়মিত গ্যাসের বিল দেওয়ার পাশাপাশি বৈদ্যুতিক চুলা ব্যবহার করছেন অনেকে। আবার কেউ কেউ অতিরিক্ত খরচ করে কাঠের চুলাও ব্যবহার করছে রান্নার জন্য। অপরদিকে, মহামারি করোনাকালে কয়েক কোটি মানুষ কর্মহীন হয়ে দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছে। ইতোপূর্বে তেল ও বিদ্যুতের দাম বাড়ার কারণে জীবন যাত্রার ব্যয় বেড়েছে কয়েকগুণ। তাই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির মূল্য দিনে দিনে আকাশচুম্বি হয়ে উঠেছে। পরিবার পরিজন নিয়ে দিন কাটাতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। এমন অবস্থায় গ্যাসের দাম দ্বিগুণ হলে জীবন বাঁচাতে মানুষের মাঝে হাহাকার উঠবে।
বিবৃতিতে জাপা চেয়ারম্যান আরো বলেন, গ্যাসের দাম বাড়লে রপ্তানি পণ্যের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাবে যথেষ্ঠ পরিমাণ। তাতে হুমকীর মুখে পড়তে পারে দেশের গার্মেন্টসহ বিভিন্ন শিল্প। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক বায়িং প্রতিষ্ঠানগুলো মুখ ফেরাতে পারে বাংলাদেশ থেকে। যা মহা বিপর্যয়ের কারণ হতে পারে। তাই এ সময় গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত হবে হঠকারী ও দুঃখজনক। মেগা প্রজেক্টের বিপুল ব্যয় স্থগিত রেখে হলেও এ মুহুর্তে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি বন্ধ রাখতে হবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন