অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হলে সিইসিকে ক্ষমা চাইতে হবে

জিবি নিউজ 24 ডেস্ক //

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের বিরুদ্ধে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার আনা নানা অনিয়মের অভিযোগ এক সপ্তাহের মধ্যে প্রমাণ করার অনুরোধ জানিয়েছেন দেশের ৩৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক। অভিযোগ প্রমাণে ব্যর্থ হলে জাতির কাছে সিইসিকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান তারা।

মঙ্গলবার ৩৭ জন বিশিষ্ট নাগরিক স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানানো হয়েছে।

 

বিবৃতিতে তারা সিইসির বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, 'গত ২৭ জানুয়ারি একটি অনুষ্ঠানে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নূরুল হুদা সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদারের বিরুদ্ধে এক কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগসহ কিছু ভিত্তিহীন, অশালীন ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। বদিউল আলম মজুমদার ইতোমধ্যে তার বক্তব্যকে বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আখ্যায়িত করে এসব অভিযোগের প্রমাণ দেওয়ার চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন।'

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, সুজন গত বিএনপি সরকারের আমলে আদালতে লড়াই করে নির্বাচনের প্রার্থীদের হলফনামার তথ্য জানার জন্য জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখে। তিনি প্রতিটি সরকারের আমলে নির্বাচনী কারচুপি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে সোচ্চার। গত ২০১৪ ও ২০১৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনের বিভিন্ন অনিয়মের তথ্যও তিনি উদঘাটন করেন।'

'২০২০-২১ সালে এসব তথ্য এবং একটি টেলিভিশন চ্যানেলের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সুজন সম্পাদক ও সুজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দেশের ৪২ নাগরিক রাষ্ট্রপতির কাছে দুটো চিঠির মাধ্যমে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠন করে নূরুল হুদা কমিশনের বিরুদ্ধে গুরুতর অসদাচরণ ও দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করার আবেদন করেন। নূরুল হুদার বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেছেন তারই একজন সহযোগী নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার এবং সাবেক সিইসি ড. শামসুল হুদাও।'

বিবৃতিদাতারা বলেন, 'নূরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ বিভিন্ন স্থানীয় নির্বাচনে চরম কারচুপি ও অনিয়ম প্রতিরোধে শুধু ব্যর্থতা নয়, বরং এর সহযোগীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচন আগের রাতে অনুষ্ঠিত হওয়ার গুরুতর অভিযোগের তদন্ত করার এখতিয়ার থাকা সত্বেও তার কমিশন এটি না করে চরম দায়িত্বহীনতার পরিচয় দেয়। শুধু তাই নয় এই কমিশন পেপার ট্রেইল বিহীন একটি নিম্নমানের ইভিএম পদ্ধতি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচনে ডিজিটাল জালিয়াতির সুযোগও তৈরি করে যাচ্ছে বলে আমাদের আশঙ্কা আছে।'

তারা বলেন, 'আমরা মনে করি এসব অপকর্ম আড়াল করার প্রচেষ্টা হিসেবে তিনি বিদ্বেষমূলকভাবে বদিউল আলম মজুমদার, সুজন ও দেশের কয়েকজন বিশিষ্ট নাগরিকের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনে ধুম্রজাল সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। দেশের নির্বাচন ব্যবস্থায় সততা ও আস্থা ফিরিয়ে আনার স্বার্থে নির্বাচনী সংস্কারের পাশাপাশি তার মতো ব্যক্তির বিচার করাও রাষ্ট্রের আবশ্যকীয় দায়িত্ব বলে আমরা মনে করি।'

বিবৃতিদাতারা হলেন, শিক্ষাবিদ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বিচারপতি এম এ মতিন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা সুলতানা কামাল, হাফিজ উদ্দিন খান, রাশেদা কে চৌধুরী, সাবেক কূটনীতিক মহিউদ্দিন আহমেদ, অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, মানবাধিকার কর্মী হামিদা হোসেন, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক, সারা হোসেন, সুব্রত চৌধুরী, তবারক হোসেইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল, পরিবেশ আইনজীবী সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, অধ্যাপক আলী রীয়াজ, অধ্যাপক স্বপন আদনান, রোবায়েত ফেরদৌস, ড. শাহনাজ হুদা, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, মানবাধিকার কর্মী শিরিন হক, ফরিদা আখতার, সঞ্জীব দ্রং, নূর খান লিটন, অরূপ রাহী, রেহনুমা আহমেদ, নায়লা জেড খান, নাসের বখতিয়ার, হানা শামস আহমেদ, অধ্যাপক পারভীন হাসান, অধ্যাপক ফিরদৌস আজিম, সাংবাদিক ড. সায়দিয়া গুলরুখ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সায়েমা খাতুন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম, গবেষক ড. নোভা আহমেদ এবং রোজিনা বেগম।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন