আবুল কাশেম রুমন,সিলেট ||
প্রতি বছরের ন্যায় এ বছর সিলেটে কান্দিগাওয়ে খেজুরগাছে ‘‘রসের হাঁড়ি পাতা’’ দেখতে মানুষের ভিড় জমে উঠেছে। এক গ্লাস খেজুরে রস খেতে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে গাছের নিচে। ওই এলাকা যেন এখন খেজুরগাছের নিচেই রীতিমতো যেন রস কেনাবেচার হাট।
জানা যায়, সিলেট নগরী থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে সিলেট-সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে কান্দিগাও ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নের জাঙ্গাইল গ্রামের চারিদিকে খেজুর ও নারিকেল গাছে ঘেরা একটি এতিমখানা আছে। সাধারণত দারুল আয়তাম হালিমাতুস সাদিয়া (রা.) এতিমখানায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা ছাড়া এখানে কোনো মানুষের আনাগোনা থাকে না। কিন্তু গত দেড় দুই মাস ধরে কাকডাকা ভোর থেকে এই এতিমখানার আশপাশে ভিড় করছেন মানুষজন। সবাই আসছেন টাটকা খেজুরের রস খেতে। ফজরের আজানের আগেই প্রাইভেটকার, মোটরবাইক, সিএনজি অটোরিকশা করে শতাধিক মানুষ এসে হাজির হন এতিমখানার পাশে। সিলেট শহরসহ দূরদূরান্ত থেকে খেজুরের রস খাওয়ার জন্য মানুষ এখানে ভিড় করছেন। গাছের নিচে বসে প্রতি লিটার ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আবার এক গ্লাস রস খুচরা ১৫ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে।
আশপাশের বাসিন্দারা জানিয়েছেন, প্রথম দিন রস সংগ্রহ করার খবর পাওয়ায় পর দিন থেকে শহরসহ দূরদূরান্তের মানুষ ভোর ৫টা থেকে ঘণ্টাখানেক অপেক্ষা করে রস কিনছে।
দারুল আয়তাম হালিমাতুস সাদিয়া (রা.) এতিমখানার হিফজ বিভাগের শিক্ষক হাফিজ জাকারিয়া জানান, বাড়িটি একজন প্রবাসীর। প্রায় ৩০ বছর আগে লাগানো হয়েছিলো শতাধিক খেজুর ও নারকেলগাছ। গত বছর বাড়িটি এতিমখানা হিসেবে ব্যবহারের পর পুরোনো খেজুরগাছ পরিচর্যা করে রস সংগ্রহ শুরু হয়েছে।
তিনি জানান, বাড়ির আঙিনাজুড়ে আছে প্রায় ৬৩টি খেজুরগাছ। এগুলো পরিণত হওয়ায় একজন গাছির নেতৃত্বে পরিচর্যার পর গত বছর শীতের শুরুতেই রস সংগ্রহ শুরু হয়। ৬৩টির মধ্যে প্রায় ৫৫টি গাছ থেকে রস পাওয়ায় সংগ্রহ করা রস কেনাবেচা শুরু হয় গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে। গাছির পরিচর্যা থেকে রস সংগ্রহ করা হচ্ছে। সিলেট অঞ্চলে খেজুরগাছ দেখা গেলেও একসঙ্গে এতো গাছ থেকে রস সংগ্রহ সচরাচর দেখা যায় না।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন