করোনা ঝুঁকির মধ্যেও দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী

জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //

দেশবাসীর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে করোনাভাইরাসের মহামারির মধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দিনরাত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের (পিএমও) সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, ‘কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়নে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ যেসব নির্দেশনা জারি করেছে তার পরিমাণ দেখলে এবং সেগুলো পর্যালোচনা করলে কিছুটা অনুমান করা যায় এই করোনার মধ্যেও কতটা ঝুঁকি নিয়ে তিনি জনগণের জীবন ও জীবিকা নিশ্চিত করতে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন।’ শুধু কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা বাস্তবায়নে জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত সরকারের বিভিন্ন বিভাগ ও মন্ত্রণালয় যেসব নির্দেশনা জারি করেছে তার পরিমাণ ১ হাজার ৯৭৬ পৃষ্ঠা।

 

ভবিষ্যতে করোনা মহামারির মতো দুর্যোগ মোকাবিলার কথা ভেবে এসব নির্দেশনা সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এসব নির্দেশনা বই আকারে ৫টি ভলিউমে সংরক্ষণ করা হয়েছে। তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার তত্ত্বাবধায়নে করোনা মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ থেকে জারি করা এসব প্রজ্ঞাপন সংকলন করা হয়।

‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিটি বিষয়ের সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখছেন এবং সে অনুযায়ী প্রতিনিয়ত বিভিন্ন নির্দেশনা দিচ্ছেন,’ বলেন সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।

কোভিড-১৯ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়নে সরকারের জারি করা নির্দেশনাগুলো সংরক্ষণ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব বলেন, ‘করোনা মোকাবিলায় সরকারের অভিজ্ঞতা ভবিষ্যতে কাজে লাগবে। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে এসব নির্দেশনা সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, ‘এই করোনা মহামারির মধ্যেও নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জনগণের জীবন ও জীবিকা নিশ্চিত করতে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে তিনি প্রতিটি বিষয়, প্রতিটি মুহূর্ত মনিটর করছেন এবং প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন।’

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এই মুখপাত্র বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নিজের জীবনের চেয়ে দেশ ও দেশের জনগণকে বড় মনে করেন। তাই ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও তিনি নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।’

করোনা মহামারি থেকে মানুষের জীবন বাঁচাতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা, জনগণকে সচেতন করা এবং ক্ষতিগ্রস্থ মানুষকে অর্থ ও খাদ্য সহায়তার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থনীতি চাঙা রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয় সরকার।

গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন নির্দেশনার পাশাপাশি কোভিড-১৯ মহামারি থেকে মানুষের জীবন বাঁচাতে এবং জীবিকা নিশ্চিত করতে এখন পর্যন্ত মোট ১ লাখ ১২ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকার (জিডিপি’র ৪ দশমিক ৩ শতাংশ) ২১টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার।

এক নজরে সরকার ঘোষিত ২১টি প্রণোদনা প্যাকেজ –

১. রপ্তানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য বিশেষ তহবিলের জন্য মোট বরাদ্দ ৫ হাজার কোটি টাকা।

২. ক্ষতিগ্রস্ত শিল্প ও সার্ভিস সেক্টরের প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সুবিধা প্রদানে মোট বরাদ্দ ৩৩ হাজার কোটি টাকা।

৩. ক্ষুদ্র (কুটির শিল্পসহ) ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল সুবিধা প্রদানে মোট বরাদ্দ ২০ হাজার কোটি টাকা।

৪. বাংলাদেশ ব্যাংক প্রবর্তিত ইডিএফ এর সুবিধা বাড়াতে মোট বরাদ্দ ১২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকা।

৫. প্রি-শিপমেন্ট ক্রেডিট রিফাইন্যান্স স্কিমে মোট বরাদ্দ ৫ হাজার কোটি টাকা।

৬. চিকিৎসক, নার্স এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের বিশেষ সম্মানিতে ১০০ কোটি টাকা।

৭. করোনাভাইরাসে আক্রান্ত অথবা মৃত্যুর ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণে ৭৫০ কোটি টাকা।

৮. বিনামূল্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণে মোট বরাদ্দ ২ হাজার ৫০৩ কোটি টাকা।

৯. ১০ টাকা কেজি দরে চাউল বিক্রিতে মোট বরাদ্দ ২৫১ কোটি টাকা।

১০. লক্ষ্যভিত্তিক জনগোষ্ঠীর মাঝে নগদ অর্থ বিতরণে মোট বরাদ্দ ১ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা।

১১. ভাতা কর্মসূচির আওতা বৃদ্ধিতে মোট বরাদ্দ ৮১৫ কোটি টাকা।

১২. গৃহহীন মানুষদের জন্য গৃহ নির্মাণে মোট বরাদ্দ ২ হাজার ১৩০ কোটি টাকা।

১৩. বোরো ধান/চাল ক্রয় কার্যক্রমে মোট বরাদ্দ ৮৬০ কোটি টাকা।

১৪. কৃষি কাজ যান্ত্রিকীকরণে ৩২ হাজার ২২০ কোটি টাকা।

১৫. কৃষি ভর্তুকিতে ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা।

১৬. কৃষি পুন:অর্থায়ন স্কিমে মোট বরাদ্দ ৫ হাজার কোটি টাকা।

১৭. নিম্ন আয়ের পেশাজীবী কৃষক/ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য পুন:অর্থায়ন স্কিমে মোট বরাদ্দ ৩ হাজার কোটি টাকা।

১৮. কর্মসৃজন কার্যক্রম যেমন পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক, কর্মসংস্থান ব্যাংক, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক এবং পিকেএসএফ এর মাধ্যমে ২ হাজার কোটি টাকা।

১৯. বাণিজ্যিক ব্যাংকসমূহের এপ্রিল-মে/২০২০ মাসে স্থগিতকৃত ঋণের আংশিক সুদ মওকুফ বাবদ সরকারের ভর্তুকিতে ২ হাজার কোটি টাকা।

২০. ক্রেডিট রিস্ক শেয়ারিং স্কিম (সিআরএস) ফর এসএমই সেক্টর এ ২ হাজার কোটি টাকা।

২১. রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক, চামড়াজাত পণ্য ও পাদুকাশিল্পের দু:স্থ শ্রমিকদের জন্য সামাজিক সুরক্ষা কার্যক্রম প্রবর্তনে ১ হাজার ১৩২ কোটি টাকা।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন