জিবি নিউজ 24 ডেস্ক //
আমরা জাতি হিসেবে যা কিছু নিয়ে বিশ্বের কাছে গর্ব করতে পারি, এর মধ্যে অন্যতম ভাষা আন্দোলন। আমরাই পৃথিবীর একমাত্র জাতি যারা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছি। জাতি হিসেবে আমাদের ভাষার প্রতি অগাধ ভালোবাসার জন্য ইউনেসকো ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগের দিনটিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল সেই ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বরে। ২০০০ সাল থেকে প্রতি বছরই জাতিসংঘ সদস্যভুক্ত দেশগুলো একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে যথাযথ সম্মানের সাথে পালন করে আসছে। দুঃখজনক হলো, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের সঙ্গে একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনের সম্পর্ক কী- বিশ্ববাসী তা এখনো ভালো করে জানে না।
গত দুই দশক ধরে একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হলেও এটি পালনকারী জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থার (ইউনেসকো) ওয়েবসাইটে দিবসটির পেছনের ইতিহাস এবং ভাষা আন্দোলনের শহীদদের অবদানের কোনো উল্লেখ নেই।
ইউনেসকোর ১৮৮টি সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের ভোটে ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি লাভ করে। ২০০০ সাল থেকে জাতিসংঘের বিভিন্ন সদস্যরাষ্ট্র দিবসটি পালন করছে রফিক, সালাম, বরকতের আত্মদানের কথা না জেনেই।
জাতিসংঘের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে- (www.un.org/en/events/motherlanguageday/background.shtml) মাত্র একটি বাক্যে ভাষা আন্দোলনের সঙ্গে এটির যোগসূত্রের কথা বলা আছে। সেখানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ইভেন্টের বর্ণনার কোথাও বাংলা, ভাষা আন্দোলন, বাংলাদেশের কথা উল্লেখ নেই। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও এর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পৃক্ততার বিষয়টি নিয়ে ডিজিটাল মাধ্যমে যে লিংকগুলো খুঁজে পাওয়া যায় একমাত্র উইকিপিডিয়া ছাড়া তা কেবল বাংলাদেশ, বাংলাদেশ দূতাবাস ও বাংলাদেশিদের পরিম-লে আবদ্ধ। আর উইকিপিডিয়াকে তো নির্ভরযোগ্য উৎস বিবেচনা করা হয় না।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস প্রচলনের পরপরই ২০০০ সালে এ-সংক্রান্ত তথ্য জানানোর জন্য বাংলাদেশ সরকারকে তাগিদ দিয়েছিল ইউনেসকো। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে এখনো এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। জাতিসংঘকে এ বিষয়ে তথ্য সরবরাহের দায়িত্ব কার, এ বিষয়টিই স্পষ্ট হয়নি। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতির ধারাবাহিকতায় ঢাকায় তৈরি করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট। ২০০১ সালের ১৫ মার্চ জাতিসংঘের তখনকার মহাসচিব কফি আনানের উপস্থিতিতে সেগুনবাগিচায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১০ সাল থেকে এটি কার্যক্রম শুরু করে। এমনকি মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের ওয়েবসাইটেও এ-সংক্রান্ত তথ্য নেই।
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতির ধারাবাহিকতায় ঢাকায় তৈরি করা হয়েছে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট। ২০০১ সালের ১৫ মার্চ জাতিসংঘের তখনকার মহাসচিব কফি আনানের উপস্থিতিতে সেগুনবাগিচায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২০১০ সাল থেকে এটি কার্যক্রম শুরু করে। এমনকি মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের ওয়েবসাইটেও এ-সংক্রান্ত তথ্য নেই।
সব জাতিই নিজেদের গর্বের কথা সারাবিশ্বকে জানাতে বহুমুখি কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকে। কিন্ত আমাদের দেশে যাদের এই দায়িত্ব পালন কথা, তারা পুরোপুরিই উদাসিন। জাতিসংঘ ও ইউনেসকোসহ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মাতৃভাষা দিবসের প্রেক্ষাপট এবং এর সঙ্গে বাংলা ভাষা, ভাষা আন্দোলন, শহীদ দিবস ও বাংলাদেশের যোগসূত্র তুলে ধরার দায়দায়িত্ব সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকেই নিতে হবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন