জিবি নিউজ 24 ডেস্ক //
সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বইমেলায় তিলধারণের জায়গা নেই। বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান—উভয় প্রাঙ্গণই জমজমাট হয়ে আছে বইপ্রেমী জনতার ভিড়ে। ছুটির দিন থাকায় আজ দেখা মিলেছে শিশু-কিশোরদের আধিক্য। সঙ্গতকারণেই শিশু-কিশোরদের বই-ই বিক্রয় হচ্ছে বেশি।
শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের পর থেকেই মেলায় পাঠক-দর্শকের সংখ্যা বাড়তে থাকে। এবারের বইমেলা শুরু হওয়ার পর আজ প্রথরের ছুটির দিন৷ মেলা ঘুরে দেখা গেছে—আগতদের মাঝে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী এবং পরিবার নিয়ে মেলায় আসা পাঠক-দর্শকের সংখ্যাই আজ বেশি।
এদিকে বইমেলাকে ঘিরে আশেপাশের এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। টিএসসি থেকে শাহবাগ ও নীলক্ষেতগামী সড়কে আছে তীব্র যান ও জনজট।
গতবার প্রতিদিন দুপুর ৩টা থেকে মেলা শুরু হলেও ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবার মেলা শুরু হচ্ছে দুপুর ২টায়। শুক্রবার ছুটি দিন হওয়ায় মেলা শুরু হয়েছে বেলা ১১টা থেকেই। বিভিন্ন স্টল ও প্যাভিলিয়নের বিক্রয় কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ শুরু থেকেই মেলায় জনসমাগম ভালো। অন্য দিনের তুলনায় বিক্রয় হচ্ছে তুলনামূলক বেশি। বিশেষত শিশু-কিশোরদের পছন্দের কমিকস, গল্প, সায়েন্স ফিকশন—এসবের বেচাকেনা বেশ রমরমা।
পাঞ্জেরী প্রকাশনের এক বিক্রয়কর্মী বলেন, ‘জুমার নামাজের আগেও শিশু-কিশোরদের সংখ্যা বেশি ছিলো। দুপুরের পর এখন আরও বেড়েছে। আমাদের কমিকস আইটেম বেশি বিক্রয় হচ্ছে।’
অন্যপ্রকাশ প্রকাশনীর এক বিক্রয়কর্মী বলেন, ‘অন্যপ্রকাশ মানেই পাঠকদের কাছে হুমায়ূন আহমেদ। যেটা বরাবরের মতোই হয়ে থাকে। এবারও তা-ই হচ্ছে। উনার বই বেশি বিক্রয় হচ্ছে। বিশেষ করে উঠতি বয়সীরা স্যারের বই নিচ্ছেন বেশি।'
তবে গতবছরের মতো এবছরও নেই 'শিশু প্রহর'। মেলা চলাকালীন প্রতি শুক্রবার প্রথম প্রহরকে 'শিশু প্রহর' ঘোষণার একটি রেওয়াজ থাকলেও করোনার কারণে গতবছর এবং এ বছর তা অনুপস্থিত। শিশুপ্রহরকে ঘিরে নানান শিশুতোষ অনুষ্ঠান চলত। এতে মেলায় আগত শিশু-কিশোরীরা আনন্দে মেতে থাকার দৃশ্য ছিল বইবেলার অন্যতম আকর্ষণ।
তবে আলাদা 'শিশুপ্রহর'-এর ব্যবস্থা না থাকলেও সানন্দে মেলায় আসছে শিশুরা।
ব্লুবার্ড গ্রামার স্কুলের তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী আদনান আমিন বলেন, ‘আমি কমিকস বই কিনেছি। আরও বই কিনব। বাবার সঙ্গে এসেছি। আমার অনেক ভালো লাগছে।’
দশ ও আট বছর বয়সী দুই সন্তান ঝুমু ও রুমুকে নিয়ে মেলায় আসা তাদের বাবা আরিফুল হক জানিয়েছেন, 'শিশুপ্রহর থাকলে মেলা নিয়ে শিশুদের আকর্ষণের মাত্রা থাকে ভিন্ন। আমি প্রতিবছর বাচ্চাদের বইমেলায় নিয়ে আসার চেষ্টা করি। আজকে ভিড় অনেক বেশি।’
অন্য এক অভিভাবক রিদওয়ান মুস্তাফিজ বলেন, ‘বাচ্চাদের বই, বইমেলা কিংবা এই সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়াই আসল কাজ৷ ওদের আজ নিয়ে আসছি, কয়েকবছর পর ওরা নিজ থেকে আসবে। বইয়ে আগ্রহী হবে।’
প্রসঙ্গত, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ এবং ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রায় সাড়ে ৭ লাখ বর্গফুট জায়গায় এবার বইমেলা অনুষ্ঠিত হবে। মেলায় মোট ৩৫টি প্যাভিলিয়নসহ একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০২টি প্রতিষ্ঠানকে ১৪২টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৪৩২টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৩৪টি ইউনিট বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন