মো. ফাহাদ আহমদ: "সরকারের উন্নয়নের বিপক্ষে নই আমরা" শ্লোগানকে ধারণ করে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার শেরপুর বাজারে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সিক্স-লেন রাস্তা নির্মাণে শেরপুর বাজার ও নিকটবর্তী আবাসিক এলাকার বৃহত্তর জনগোষ্ঠী, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান এবং বসতভিটা অধিগ্রহণের প্রতিবাদে ঐ মানববন্ধন করা হয়। রবিবার (৬ মার্চ) শেরপুর এলাকার সর্বস্ব হারানোর আশঙ্কায় আতঙ্কিত জন-সাধারণ ঐ মানববন্ধনের আয়োজন করেন। এতে শেরপুর বাজারসহ আশপাশ এলাকার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ঘনবসতিপূর্ণ লোকালয়ের বসতভিটা থেকে উচ্ছেদ হবে, মুখের গ্রাস কেড়ে নেওয়া এবং মাথা গোঁজার ঠাঁই হারানোর শামিল প্রায় তিন শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন। স্থানীয় মানুষ যা বলছেন এসময় মানববন্দনে উপস্থিত স্থানীয় এমদাম মোহাম্মদ সিরাজ বলেন, শেরপুর বাজারে আবাসিক এলাকা ও আশপাশ এলাকাজুড়ে সিক্স-ল্যান প্রকল্পের কাজে ভূমি অধিগ্রহণ করা হলে ওই এলাকার প্রায় অর্ধ হাজার পরিবার গৃহহীণ হয়ে পড়বে। এমনকি ঐ বাজারে অবস্থানরত অর্ধ হাজার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের প্রভাব পড়বে। এতে শেরপুর বাজারের যেদিক দিয়ে সাধারণ মানুষের ক্ষতিসাধন হয়না সেদিক দিয়ে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ অব্যাহত রেখে ওই এলাকার পরিবর্তে অন্য কোন খোলামেলা এবং খাস কিংবা স্বল্প মূল্যের ভূমি অধিগ্রহণ করার দাবী সরকারে নিকট রইলো। স্থানীয় লিচু মিয়া বলেন, আমার বাসাবাড়ি শেরপুর বাজারের আবাসিক এলাকায়। ওই এলাকায় বহুদিন যাবত স্থায়ীভাবে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে আসছি। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জাগায় সরকারিভাবে সিক্স-ল্যান কাজের জন্য জায়গা চিহ্নিত করণ হচ্ছে। এতে শেরপুর বাজারেও হালনাগাদ কাজ চলমান রয়েছে। এমতাবস্থায় চিহ্নতকরণ জাগার মধ্যে শেরপুর বাজারের ঘনবসতিপূর্ণ আবসিক এলাকা ও মুক্তিনগর রয়েছে। এই ঘনবসতি এলাকাজুড়ে প্রায় হাজারো সংখ্যক বাসাবাড়ি রয়েছে। যদি এই এলাকায় সিক্স-ল্যান কাজে ভূমি অধিঙতহণ করা হয়, তবে ঐ এলাকার বেশিরভাগ মানুষ গৃহহীণ হয়ে পড়বে। এমনকি ওই সিক্স ল্যান প্রকল্পে শেরপুর বাজারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ মার্কেটের উপরেও প্রভাব পড়বে। এতে করে অনেক ব্যবসায়ী তথাপি মার্কেট কর্তৃপক্ষের ক্ষতিসাধন হলেও বেশিরভাগ ব্যবসায়ীদের উপরে বেকারত্বের প্রভাব বিস্তার করবে। তাই আমার দাবী এলাকাবাসীর গৃহহীণ হয়ে পড়া এমনকি ব্যবসায়ীদের বেকারত্বের অবস্থা বিবেচনা করে যেদিকে সরকারি জায়গা বেশি রয়েছি সেই দিকদিয়ে ভূমি অধিগ্রহণ করে উন্নয়ন প্রকল্প অব্যাহত রাখা হোক। এছাড়াও মানববন্দনে উপস্থিত ছিলেন বেশির ভাগ মানুষ অসহায় ও খেটে খাওয়া দিনমজুর শ্রেণির। তাঁরা বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। উপস্থিত সকলেই সরকারে নিকট দাবী জানিয়েছেন বিকল্প জায়গা অধিগ্রহণ করে উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে। ঢাকা-সিলেট ছয়লেন উল্লেখ্য, ঢাকা-সিলেট ছয়লেন, উন্মোচিত হবে বাণিজ্যিক সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পে ১৫ হাজার ১৩০ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদন দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। স্বপ্নের এই মহাসড়কটি ছয়লেনে উন্নীত হলে বদলে যাবে সিলেট অঞ্চলের অর্থনীতির চিত্র। নতুন গতি পাবে শিল্প-বাণিজ্য ও পর্যটনে। শুধু তাই নয়, ছয় লেন হয়ে গেলে এ মহাসড়ক দিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হওয়ারও আশা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা। এমনকি মহাসড়কটি ছয় লেন হয়ে গেলে এ অঞ্চলের জীবন-মান উন্নয়নের পাশাপাশি বিপুল কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হওয়ারও আশা দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন