জিবিনিউজ24ডেস্ক//
২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর একটানা ১৩ বছর গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকায় বাংলাদেশের উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। দেশকে কেউ আর পেছনে টানতে পারবে না। পচাত্তরের পর একটা কালো অধ্যায় ছিল, সেই কালোমেঘ কেটে গেছে। জাতির পিতার আদর্শ ধারণ করে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি।
শুক্রবার (১১ মার্চ) রাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাসরত প্রবাসীদের দেওয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনা তার সফরকালীন আবাসস্থল থেকে ভিডিও কনফারেন্সে এ অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের জনগণের রায় নিয়ে ২০০৯ সালে সরকার গঠন করি। তারপর থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষের ভোট এবং সহযোগিতায় রাষ্ট্র পরিচালনা করার সুযোগ পেয়েছি। আমার দৃষ্টিতে এটা হলো জনগণের সেবা করার সুযোগ পেয়েছি। কারণ ক্ষমতা আমার কাছে কোনো ভোগের বস্তু না, এটা হচ্ছে জনগণের সেবা করবার সুযোগ। যে আদর্শ নিয়ে জাতির পিতা দেশ স্বাধীন করেছেন, তা পূর্ণ করা।
তিনি বলেন, পরপর তিনবার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করেছি। বাংলাদেশের ইতিহাসে পঁচাত্তরের পর দেশে অস্থিরতা ছিল। গণতান্ত্রিক ধারা কখনোই অব্যাহত ছিল না। কিন্তু ২০০৮ সালের নির্বাচনের পরে ১৩ বছর আমরা পূর্ণ করেছি। একটানা গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বলেই আজকে বাংলাদেশের উন্নয়ন করা সম্ভব হয়েছে। সেজন্য আমি কৃতজ্ঞতা জানাই দেশবাসীর প্রতি। কৃতজ্ঞতা জানাই প্রবাসীদের প্রতিও। কারণ আপনাদের কাছ থেকেও ব্যাপক সমর্থন ও সহযোগিতা পেয়েছি। তাই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারছি।
শেখ হাসিনা বলেন, এই ১৩ বছর আগেও প্রবাসে বাংলাদেশি নাগরিকরা সম্মান তেমন পেতো না। কিন্তু আজকে সেই অবস্থার পরিবর্তন ঘটেছে। আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশ শুনলে সবাই মর্যাদার চোখে দেখে। সবাই সমীহ করে। বাংলাদেশ আবার তার সেই হারানো গৌরব ফিরে পেতে শুরু করেছে। এটা ধরে রেখেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। যতক্ষণ আছি, দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করে যাবো।
সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশ হবে উন্নত, সমৃদ্ধ, দারিদ্র্যমুক্ত একটি দেশ। যে দেশ সম্মানের সঙ্গে বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলবে। বাঙালি জাতি মাথা উচু করে চলবে। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা আমরা গড়ে তুলবো।
দেশের জনগণ ও প্রবাসীদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য ছিল ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে এটা সম্মানজনক অবস্থানে নিয়ে আসবো। আজকে অন্তত এটুকু বলতে পারি, বাংলাদেশ আজকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে মর্যাদা পেয়েছে, স্বীকৃতি পেয়েছে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, এ দেশে কোনো দরিদ্র থাকবে না। আজকে আমরা উদ্যোগ নিয়েছি যে, দেশের একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না, ভূমিহীন থাকবে না। সরকার থেকে তাদের ভূমি ও জমি নিয়ে ঘরবাড়ি করে দিচ্ছে। তাদের জীবনটাই পাল্টে যাচ্ছে। তাদের এখন অসহায় হয়ে ঘুরে বেড়াতে হয় না। আমরা সেই ব্যবস্থা নিচ্ছি। কাজেই প্রত্যেকটা মানুষের জীবনমান উন্নত করার পদক্ষেপ আমরা নিচ্ছি।
সরকারপ্রধান বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পর পুষ্টি নিরাপত্তাও আমরা দিচ্ছি। আমাদের আয়ুষ্কালও বেড়ে এখন ৭২ থেকে ৭৩ বছরে দাঁড়িয়েছে। এখন হতদরিদ্র ভাবটা মানুষের মাঝে নেই, থাকবেও না। তার জন্য সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। সবাইকেই অবদান রাখতে হবে। একদিনে এটা সম্ভব না। একটা গাছ লাগালেও ফল খেতে সময় লাগে।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সফরকালীন আবাসস্থল উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। দুবাইয়ের বাংলাদেশ কনস্যুলেট প্রান্তে ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, আবুধাবি প্রান্তে ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন্নেছা ইন্দিরা, এফবিসিআইআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
এসময় রাস আল খাইমার প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়কমন্ত্রী ইমরান আহমেদ, বাংলাদেশ ইংলিশ প্রাইভেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতি তাজ উদ্দিন, প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত মো. আবু জাফর।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন