মৌলভীবাজার প্রতিনিধি \ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মোঃ শাহাব উদ্দিন বলেছেন, বিশ্বের সকল দেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বাংলাদেশ তথা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনুসরণ করে। কারণ শেখ হাসিনা সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করে দেশের উন্নয়নের মাধ্যমে বিশ্বে বাংলাদেশকে মর্যাদার আসনে অধীষ্ঠিত করেছেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ এখন আর গরীবের দেশ নয়, উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় লিপিবদ্ধ হয়েছে বাংলাদেশের নাম। দেশে মেট্রোরেলসহ যোগাযোগ ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নয়ন এবং ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ, বিভিন্ন ধরনের ভাতার বিষয়টি শেখ হাসিনা ক্ষমতায় না আসলে সম্ভব হত না।
গতকাল মৌলভীবাজার কেন্দ্রিয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, মৌলভীবাজার জেলা শাখা আয়োজিত প্রতিনিধি সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদানকালে পরিবেশ ও বনমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী হিসেবে তিনি তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করে চলেছেন উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, এর অংশ হিসেবে জুড়ী উপজেলার লাঠিটিলায় বঙ্গবন্ধুর নামে সাফারি পার্ক এবং মাধবকুন্ড জলপ্রপাতে কেবল কার স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, মৌলভীবাজার জেলার উন্নয়নের অংশ হিসেবে ১হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে মনু নদীর উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। এ নদী খনন ও তীর বাধাই কাজ শুরু হবে, শাহবাজপুর-কুলাউড়া রেল লাইনের কাজ চলমান আছে। চা শ্রমিকদের জীবন মান উন্নয়নে অনেক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তিনি এসময় মৌলভী বাজারে একটি মেডিকেল কলেজ এবং একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে বলে উল্লেখ করেন।
জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সভাপতি ও মৌলভীবাজার-৩ আসনের সংসদ সদস্য নেছার আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ এমপি। এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হানিফ এমপি, জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ এবং অনুমিত হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা উপাধ্যক্ষ ড. মো. আব্দুস শহীদ, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন ।
জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমানের স ালনায় জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বিভিন্ন শাখার ১ হাজার ৭০০ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করে। প্রতিনিধি সভায় ইতিমধ্যে বক্তব্য প্রদান করেছেন কুলউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুল ইসলাম রেণু, বড়লেখা উপজেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সুন্দর, কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অ্যাডভোকেট আলমগীর রহমান, শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অর্ধেন্দু কুমার দেব বেবুল, রাজনগর উপজেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান মিলন বখত, মৌলভীবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক মিন্টু, জুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুক আহমদ, আদমপুর ইউপি শাখার সভাপতি আজির বকস, রাজঘাট ইউপি চেয়ারম্যান বিজয় বুনার্জি, চাঁদনীঘাট ইউপি শাখার সভাপতি সৈয়দ মুশাহিদ আলী, রাজনগর ইউপি চেয়ারম্যান ফরজান আলী প্রমুখ।
সভায় প্রধান অতিথি নূরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, দলকে শক্তিশালী করতে হলে তৃণমূল নেতৃবৃন্দকে আরো সংগঠিত করতে হবে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নেত্রী, আমাদের নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে গেছে। তিনি বলেন, ২০১০ সালে দেশে শিক্ষা ব্যবস্থার প্রসারের লক্ষ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে বিনামূল্যে নতুন বই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একটি দরিদ্র দেশকে বিশে^র দরবারে একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করা হয়েছে।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ থাকতে হবে ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের। উপজেলায় সম্মেলন হবে না, তাহলে কিসের জেলা কমিটি। এখন উপজেলা সম্মেলনে আমরা থাকবো। দেখি কত ধানে কত চাল। উপজেলা ও ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে নানক আরও বলেন, আপনারা বেতন পান কি না ? যদি বেতন না-ই পান তাহলে ভাইদের পেছনে দৌড়ান কেন ? গ্রুপিং করেন কেন ? তিনি উপস্থিত সংসদ সদস্যদের উদ্দেশ্য করে বলেন, সকলের আমলনামা তৈরী হচ্ছে, সকলের আমলনামা নেত্রীর কাছে পৌছে গেছে। আমলনামা দেখে আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া হবে।
জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দকে উদ্দেশ্য করে নানক আরও বলেন, জেলায় রাজনীতি করেন আর মিটিং হবে ঢাকায়। এটি হতে পারেনা। হতে দেয়া হবে না।
মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, দুই দুইটা বছর বাংলাদেশসহ সারাবিশ্ব করোনায় বিপর্যন্ত ছিল। রাষ্ট্রীয় কার্যক্রম, ব্যবসা-বাণিজ্য ঠিকমত করতে পারা যায়নি। যে কারণে এখনও বিশ্ববাজার স্থিতিশীল অবস্থায় নেই। পাশাপাশি রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যে যুদ্ধ চলছে যুদ্ধের প্রভাবেও বিশ্ববাজার অস্থিতিশীল। এর ঢেউ লেগেছে আমাদের দেশে।
আহমদ হোসেন বলেন, সামনের নির্বাচনে জেতার জন্য এখন থেকে প্রস্তুতি গ্রহন করতে হবে। নিজেদের মধ্যে হানাহানি বন্ধ করতে হবে। সবাই মিলে নৌকাকে জেতাতে হবে। আওয়ামী লীগ পাওয়ারে থাকলে আমার নেতা, আপনার নেতা বাংলাদেশের নেতা সভানেত্রী শেখ হাসিনা ক্ষতায় থাকলে ভাল থাকবেন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন