ইউক্রেন ফেরত বাংলাদেশীদের আইনী সহায়তা দেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ইউকে

আনসার আহমেদ উল্লাহ


ব্রিটিশ সরকার ঘোষিত 'ইউক্রেন ফ্যামিলি স্কিম ভিসা' ও 'লোকাল স্পন্সর স্কিম ফর ইউক্রেন' এই দুটি ক্যাটাগরিতে শরণার্থীরা ব্রিটেনে আশ্রয়ের আবেদন করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন ব্রিটিশ আইনজীবীরা। পরিবারের সদস্য ক্যাটাগরিতে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত কোন ব্রিটিশ নাগরিক তার বাবা-মা, স্বামী বা স্ত্রীকে স্পন্সর করতে পারবেন। অন্যদিকে নিকট আত্নীয়দের মধ্যে ১৮ বছরের বেশী ক্যাটাগরিতে বাবা-মা, বা স্বামী-স্ত্রীর দাদা-দাদী বা নানা-নানী, ভাই-বোন, মামা-মামী, খালা-খালু, জেঠা-জেঠী, ফুফা-ফুফু, মামাতো বা চাচাতো ভাই-বোন এমন কি শশুর শাশুড়ির মাধ্যমেও যুক্তরাজ্যে আশ্রয় পেতে আবেদন করা যাবে বলে দিক নির্দেশনা প্রকাশ করেছে ব্রিটেনের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যুক্তরাজ্যে বসবাসরত অ্যালামনাইদের সংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ইউকে আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনায় এসব তথ্য তুলে ধরেন যুক্তরাজ্যের অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা। ব্রিটিশ মানবাধিকার আইনজীবী ব্যারিস্টার মনোয়ার হোসেন জানিয়েছে, ইউক্রেনে ক্ষতিগ্রস্ত কোন বাংলাদেশী যদি কোনভাবে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করে শরণার্থী হিসেবে আবেদন করেন, তাহলে তার ভিসা আবেদন গ্রহণের সম্ভবানা তৈরী হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ইউকে পরিচালনা পরিষদের সদস্য ব্যারিস্টার চৌধুরী হাফিজুর রহমান বলেন, যে সকল বাংলাদেশীর ইউক্রেনের নাগরিকত্ব রয়েছে তারা বিজনেস ও লোকাল স্পন্সর ক্যাটাগরীতে যুক্তরাজ্যে আশ্রয়ের জন্য আবেদন করতে পারবেন। যে সকল ব্রিটিশ নাগরিক তাদের বাড়িতে ইউক্রেনের শরণার্থীদের আশ্রয় দেবেন তাদের প্রতি মাসে ৩৫০ পাউন্ড করে আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে ব্রিটিশ সরকার।

তবে আইনজীবী ফজলে এলাহী বলেন, ইতিপূর্বে আফগান ও সিরিয়া আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য যুক্তরাজ্য সরকার ৫বছর মেয়াদী রিফিউজি স্কিমের ব্যবস্থা করলেও ইউক্রেনিয়ানদের জন্য ৩ বছর মেয়াদী বিশেষ ভিসার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্য। যেহেতু আবেদনকারীরা ইউএনএইচসিআর এর মাধ্যমে শরণার্থী হিসেবে আবেদন করছেন না, তাই ভবিষ্যতে তাদের যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে থাকার বিষয়টি অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়তে পারে। তবে সব কিছু পরিস্কার হতে আরো কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে বলে জানিয়েছেন এই আইনজীবী।

ভার্চুয়াল কাউন্সিলিং সেশনে ইউক্রেনে যুদ্ধ বিধ্বস্ত এলাকায় মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ বাংলাদেশীদের স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শ দিয়েছেন ইম্পেরিয়াল কলেজ অব লন্ডনের ক্লিনিক্যাল লেকচারার ডা. মঞ্জুর শওকত ও বেলফাস্টের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ডা. জিন্নাত খান।

ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া একাত্তর টেলিভিশনের সাংবাদিক তানভীর আহমেদ পোল্যান্ড সীমান্তে বাংলাদেশী অভিবাসিদের সাথে কথা বলার সময় বাংলাদেশী শরণার্থীদের আইনী ও মানবিক সহায়তার বিষয়টি অনুভব করেন এবং বিষয়টি পোল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সুলতানা লায়লা হোসেনের নজরে আনেন। প্রায় দেড় শতাধিক শরণার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাংবাদিক তানভীর আহমেদের কাছে অভিবাসন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি সহযোগিতার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদালয়ের যুক্তরাজ্যে বসবাসরত অ্যালামনাইরা ইউক্রেন ফেরত বাংলাদেশীদের অনলাইনে অভিবাসন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য বিষয়ক সহায়তা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করলে ভার্চুয়াল এই পরামর্শ সভাটির আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ইউকে।

অনুষ্ঠানটির চেয়ার থার্ড সেক্টর কনসালটেন্ট বিধান গোস্বামী যুদ্ধের ভয়বহতা বর্ননা করে বলেন, আমরা দেখেছি মুক্তিযুদ্ধের সময় কিভাবে নির্মমভাবে নারী পুরুষকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছিলো। এই সব স্মৃতি আমাদের বেদনা দিয়েছে, আজও দিচ্ছে। ইউক্রেন-রাশিয়ার সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশী অভিবাসী ও শিক্ষার্থীদের মানবিক সহায়তায় পাশে দাঁড়াতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ইউকের এই আয়োজন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাইদের অবস্থান নির্যাতিত মানুষের পক্ষে।

ভার্চুয়াল আলোচনায় ইউক্রেন থেকে যুক্ত হয়েছিলেন ইউক্রেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের অনারারী কাউন্সিলের উপদেষ্টা মাহবুব আলম, পোল্যান্ডের ওয়াশর সিটি কাউন্সিলর মাহবুব সিদ্দীকী, পোল্যান্ডের পিএইচডি গবেষক ও শিক্ষাবিদ হোসেন আলম ও বিদেশে উচ্চ শিক্ষা বিষয়ক পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এএইচজেড এসোসিয়েটস এর পরিচালক গোলাম মতুর্জা সহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ইউকে'র ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য ফাতেমা

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন