জিবিনিউজ24ডেস্ক//
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের পর থেকে অন্তত ১৫ লাখ শিশু বাস্তুচ্যুত হয়ে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর এ তথ্য দিয়েছে।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফের মুখপাত্র জেমস এলডার সাংবাদিকদের বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর গত ২০ দিনে প্রতিদিন গড়ে ৭০ হাজারের বেশি শিশু শরণার্থী হয়েছে। প্রতি মিনিটে ৫৫টি শিশু বিভিন্ন দেশে আশ্রয় নিয়েছে। অর্থাৎ প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ১টি শিশু শরণার্থী হচ্ছে। তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, যে গতিতে মানুষ ইউক্রেন ছেড়ে পালাচ্ছে এবং যে হারে শরণার্থীর সংখ্যা বাড়ছে, এটা নজিরবিহীন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এত অল্প সময়ের ব্যবধানে এত শরণার্থীর ঢল এর আগে দেখেনি ইউরোপ।
মেদিকা সীমান্তে কাজ করছেন রেডক্রসের ডাক্তার জেমস এলডার। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, যুদ্ধ এবং সংঘাতের কারণে বাস্তুচ্যুত হওয়া শিশুদের মতো সীমান্তবর্তী দেশগুলোতে আশ্রয় নেওয়া ইউক্রেনীয় শিশুরা পারিবারিক বিচ্ছেদ, সহিংসতা, যৌন নির্যাতন এবং পাচারের উল্লেখযোগ্য ঝুঁকিতে রয়েছে। এসব শিশুকে জরুরিভাবে নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা এবং শিশু সুরক্ষা পরিষেবাগুলো প্রয়োজন।
জেমস এলডার আরও বলেন, তিনি অনেক শিশুকে দেখেছেন যারা কান্না করছে না। যা মোটেও স্বাভাবিক বিষয় নয়। কারণ, কান্না না করা এসব শিশু ট্রমার মধ্যে চলে গেছে।
মেদিকা বর্ডারের তাবুতে ৬ ও ৯ বছরের শিশুর মুখের দিকে তাকিয়ে মনে হচ্ছিলো তারা যেনো পাথর হয়ে গেছে! পাশে বসা মা জারনা বলছিলেন, দীর্ঘ যাত্রায় পায়ে হেটে, শুকনো খাবার খেয়ে সেই ধকল সামলাতে পারছে না তারা। সেই সাথে কিয়েভে ৩ দিন তারা ছিলেন ট্রেন ষ্টেশনের শেল্টারে। সেখান থেকে ১২ দিনে হেটে এসেছেন এখানে। এই দীর্ঘ ও কষ্টের যাত্রার ভেতর দিয়ে গিয়েছে ১৫ লক্ষ শিশু। শারীরিক কষ্ট ও ক্লান্তি হয়তো মুছে যাবে, কিন্তু মন ও মননে যে ছাপ ফেলে গেলো, সেটা কি কোনদিন যাবে?
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন