সুষ্ঠু নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে সম্ভব নয়, ইসির সংলাপে বিশিষ্টজনরা

জিবিনিউজ24ডেস্ক//

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আমন্ত্রণে সংলাপ অংশ নিয়ে বিশিষ্ট নাগরিকরা বলেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন দলীয় সরকারের অধীনে সম্ভব নয়।

মঙ্গলবার (২২ মার্চ) দুপুরে সিইসির সভাপতিত্বে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে এ সংলাপ অনুষি। এতে ৩৯ জন বিশিষ্ট নাগরিককে আমন্ত্রণ জানানো হলেও ১৯ জন অংশ নিয়েছেন।

 

সংলাপে বিশিষ্টজনরা জাতীয় নির্বাচনে সবার ঐকমত্য ছাড়া ইভিএম ব্যবহার না করা, ভোটারদের বাধাহীনভাবে ভোটদানের অধিকার নিশ্চিত করা, ভোটের আগে-পরে ভোটারদের বিশেষ করে নারী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, নির্বাচনকালীন প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে আনার পরামর্শ দিয়েছেন।

সংলাপে অংশ নিয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, নির্বাচনকালীন সরকার নির্বাচনের ফলাফলের ব্যাপারে নিস্পৃহ থাকবে। সে নির্বাচনের ফলাফলকে নিজের পক্ষে নেয়ার ক্ষেত্রে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করবে না অথবা কোন ধরনের উৎসাহও যোগাবে না।

তিনি বলেন, এমন সরকার যদি না থাকে, তাহলে নির্বাচন কমিশনের সংবিধান এবং আইনে প্রদত্ত অধিকার কার্যকর করার কোন সুযোগ নাই।’

ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বাংলাদেশে সুষ্ঠু এবং প্রতিযোগিতাপূর্ণ নির্বাচন করার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতাগুলো কী কী তা সবার মোটামুটি জানা আছে। আজকে সেই বিষয়গুলোই আমরা পুনঃউল্লেখ করেছি।

তিনি বলেন, আগের নির্বাচন কমিশনারের কাছে আমরা এসেছিলাম। পূর্বে অনুষ্ঠিত দুটি অপ্রিয়, অবাঞ্চিত এবং কুৎসিত নির্বাচনের ভিত্তিতে তিনি আমাদের কাছে জানতে চান, সামনে কী করা যেতে পারে। আমরা বলেছিলাম, নির্বাচন কমিশনের ওপর মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনাই হলো সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।’

ইভিএমের ব্যাপারে পরিষ্কারভাবে জাতীয় ঐক্যমতের প্রয়োজন আছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

সংলাপ শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, তারা বিশিষ্টজনদের প্রস্তাব ও পরামর্শ শুনেছেন। এসব পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে। সংলাপে উপস্থিতদের মধ্যে ছিলেন- সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানিত ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিন, সেন্টার ফর আরবার স্টাডিজের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, বাংলাদেশ ইনডিজিনাস পিপলস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, নিজেরা করির সমন্বয়ক খুশী কবির, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম, সাবেক সচিব আবু আলম মো. শহীদ খান, লিডারশিপ স্টাডিজ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সিনহা এম এ সাঈদ, সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মহিউদ্দিন আহমেদ, সাবেক সচিব আব্দুল লতিফ মন্ডল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, সিপিডির ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, গভর্নেন্স অ্যান্ড রাইট সেন্টারের প্রেসিডেন্ট জহুরুল আলম, ঢাবির অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান ও এসএম শামীম রেজা।

এর আগে, গত ১৩ মার্চ কাজী হাবিবুল আউয়ালের নেতৃত্বাধীন নতুন এ কমিশন দেশের শিক্ষাবিদদের সঙ্গে সংলাপ করেছে। ওই সংলাপে ৩০ জন শিক্ষাবিদকে আমন্ত্রণ জানালে তাদের মধ্যে মাত্র ১৩ জন ইসির ডাকে সাড়া দিয়ে সংলাপে অংশ নিয়েছিলেন। উপস্থিতির কম হওয়ার কারণে এবার কিছু বেশি সংখ্যক ব্যক্তিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন