জিবিনিউজ 24 ডেস্ক//
ইউক্রেনে রুশ বাহিনীর আগ্রাসনকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞায় নতুন করে আলোচনায় এসেছেন মারিয়া ভরোন্তসোভা ও ক্যাটেরিনা তিখোনোভা। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের এই দুই মেয়ের ওপর সর্বশেষ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রশ্ন ওঠেছে, মারিয়া ও ক্যাটেরিনার ওপর আরোপ করা নিষেধাজ্ঞার যৌক্তিকতা নিয়ে।
রাশিয়ার ক্ষমতায় দীর্ঘদিন ধরেই আছেন পুতিন। কিন্তু এই সময়ে পুতিনের সঙ্গে প্রকাশ্যে তার পরিবারের সদস্যদের খুব কমই দেখা গেছে। তার পরিবারের সদস্যদের ছবিও তেমন একটা পাওয়া যায় না। সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে পরিবারের বিষয়টি এড়িয়ে যান পুতিন।
২০১৫ সালে এক সংবাদ সম্মেলনে পুতিনের কাছে তার মেয়েদের নাম-পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়েছিল। জবাবে পুতিন বলেছিলেন, তার দুই মেয়ে রাশিয়ায় বসবাস করেন। তাদের পড়াশোনাও রাশিয়ায়। তারা তিনটি বিদেশি ভাষায় কথা বলতে পারেন। তাদের নিয়ে তিনি গর্বিত। পুতিন আরও বলেন, ‘আমি কখনই আমার পরিবার নিয়ে কারও সঙ্গে আলোচনা করি না।’ রুশ প্রেসিডেন্ট তার মেয়েদের নাম প্রকাশ করতে না চাইলেও তা গোপন থাকছে না। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার জেরে তার প্রাপ্তবয়স্ক দুই মেয়ের নাম এখন সবার জানা।
পুতিনের দুই মেয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের যৌক্তিকতা নিয়ে একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা। তার ভাষ্য- যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করে, পুতিনের অনেক গোপন সম্পদ আছে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তিনি তার পরিবারের সদস্যদের নামে সম্পদ রেখেছেন। পুতিনের সম্পত্তি গোপন রাখতে তাকে পরিবারের সদস্যরা সহায়তা করছেন। এ কারণেই ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন ও যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে মস্কোর বিরুদ্ধে ধারাবাহিক নিষেধাজ্ঞার আওতায় এখন পুতিনের পরিবারের সদস্যদের নিশানা করা হচ্ছে। প্রাপ্ত নথিপত্রসহ বিভিন্ন সময়ে সংবাদমাধ্যমে আসা খবরাখবর ঘেঁটে পুতিনের দুই মেয়ে সম্পর্কে কিছু তথ্য সামনে এনেছে বিবিসি অনলাইন।
১৯৮৩ সালে লুইদমিলাকে বিয়ে করেন পুতিন। এ সময় পুতিন ছিলেন সোভিয়েত গোয়েন্দা সংস্থা কেজিবির কর্মকর্তা। আর লুইদমিলা ছিলেন উড়োজাহাজের অ্যাটেনডেন্ট। পুতিন-লুইদমিলার সংসারজীবন তিন দশকের। ২০১৩ সালে তারা বিচ্ছেদের ঘোষণা দেন। এ ঘরেই মারিয়া ও ক্যাটেরিনার জন্ম।
বড় মেয়ে মারিয়ার জন্ম ১৯৮৫ সালে, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের লেলিনগ্রাদে। তিনি রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ ইউনিভার্সিটিতে জীববিজ্ঞানে পড়াশোনা করেছেন। পরে মস্কো স্টেট ইউনিভার্সিটিতে পড়েছেন মেডিসিনে। মারিয়া এখন শিক্ষকতা-গবেষণা পেশায় আছেন। ‘এন্ডোক্রাইন সিস্টেম’ বিষয়ে তিনি বিশেষজ্ঞ। তিনি শিশুদের শারীরিক বিকাশের ওপর একটি বইও লিখেছেন। মারিয়ার আরেকটি পরিচয় তিনি ব্যবসায়ী। বিবিসি রাশিয়ার তথ্যমতে, রাশিয়ায় একটি বড় মেডিক্যাল সেন্টার নির্মাণের পরিকল্পনাকারী একটি প্রতিষ্ঠানের সহমালিক তিনি। ব্যক্তিজীবনে মারিয়া বিবাহিত।
তিনি ডাচ্? ব্যবসায়ী জরিট জোস্ত ফাসেনকে বিয়ে করেছেন। মারিয়ার স্বামী একসময় রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত জ্বালানি প্রতিষ্ঠান গাজপ্রমে কর্মরত ছিলেন। মারিয়া ও জরিট এখন আলাদা বসবাস করছেন বলে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন