জিবিনিউজ 24 ডেস্ক//
নিউমার্কেটে ছাত্র-ব্যবসায়ী সংঘর্ষে নাহিদ মিয়া ও মুরসালিন নামের দুই যুবক নিহতের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে পুলিশ। তারা সকলেই ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থী ও কলেজ ছাত্রলীগের বিলুপ্ত কমিটির নেতা-কর্মী।
এদিকে তদন্তের স্বার্থে পরিচয় প্রকাশ না করলেও পুলিশের দাবি, নাহিদ মিয়াকে কুপিয়ে হত্যা এবং মুরসালিনকে মারপিটের ঘটনায় যারা জড়িত তাদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।
পূর্বপশ্চমবিডির অনুসন্ধানে একাধিক নির্ভরশীল সূত্রে জানা যায়, কুরিয়ার সার্ভিস কর্মী নাহিদকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে হামলাকারী ওই হেলমেট পরা যুবক ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ নেতা ও বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ইমন বাসার। তার গ্রামের বাড়ি খুলনার পাইকগাছা উপজেলার চাঁদখালী এলাকায়। সে ঢাকা কলেজের ইন্টারন্যাশনাল হলের ১০১ নম্বর রুমে থাকত বলেও সূত্রে জানা যায়। তবে সে আটক হয়েছে কিনা? বা তার পরিচয় তদন্ত স্বার্থে প্রকাশ করেনি প্রশাসন।
এদিকে নাহিদ মিয়া ও মোরসালিন হত্যা মামলায় শনাক্ত হওয়া ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারে রোববার ঢাকা কলেজে অভিযান চালিয়েছে ডিবি। ডিবির ধানমন্ডি জোনাল টিমের এডিসি ফজলে এলাহির নেতৃত্বের ওই অভিযান চালানো হয়। সেখানে একজনকে আটক করার খবর পাওয়া গেছে।
তবে ডিবি পুলিশ এ বিষয়ে কোন বক্তব্য জানায়নি।
সূত্র জানায়, ছাত্র-ব্যবসায়ী সংঘর্ষের ঘটনায় দ্বিতীয় সারিতে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এমন ৪ থেকে ৫ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি ইউনিটের হেফাজতে রয়েছে। রোববার তাদের ঢাকা কলেজ এলাকার আশপাশ থেকে আটক করা হয়।
তবে আটক হওয়া ব্যক্তিরা ছাত্র নাকি ব্যবসায়ী সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ বিষয়ে কারও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, হত্যা মামলা দুটি ডিবি তদন্ত করছে। আর পুলিশের কাজে বাধা, জালাও-পোড়াও এবং বিস্ফোরক আইনে করা মামলা দুটি নিউমার্কেট থানা তদন্ত করছে। এর বাইরে একাধিক সংস্থাও এ নিয়ে কাজ করছে।
এ ব্যাপারে ঢাকা মেট্রোপলিটন গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম বলেন, এটা খুবই সেনসিটিভ মামলা। অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত কাজ চলমান। তাই এ ব্যাপারে তাড়াহুড়ো করতে চাইনা। শতভাগ নিশ্চিত হয়েই অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।
তিনি বলেন, আমরা অনেককেই চিহ্নিত করেছি, কিন্তু কারও পরিচয় সম্পর্কে শতভাগ নিশ্চিত হতে পারিনি। শতভাগ নিশ্চিত হয়েই প্রশাসনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমকে সব তথ্য জানানো হবে।
প্রসঙ্গত, সোমবার (১৮ এপ্রিল) রাতে এবং মঙ্গলবার দিনভর চলা এই সংঘর্ষে অর্ধ শতাধিক মানুষ আহত হয়। তাদের মধ্যে নাহিদ মিয়া নামের ১৮ বছর বয়সী এক তরুণকে রাস্তার ওপর কুপিয়ে আহত করা হয়। এলিফ্যান্ট রোডের ডাটা টেক কম্পিউটার নামের একটি দোকানের ডেলিভারি অ্যাসিস্টেন্ট হিসেবে কাজ করতেন নাহিদ। ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাতে তার মৃত্যু হয়। পরদিন রাতে তার চাচা মো. সাঈদ একটি হত্যা মামলা করেন। আর মঙ্গলবার সংঘর্ষের মধ্যে ইটের আঘাতে আহত দোকান কর্মচারি মুরসালিন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বৃহস্পতিবার ভোরে। এ ঘটনায় ওইদিন রাতে হত্যা মামলা করেন তার বড় ভাই নুর মোহাম্মদ।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন