“বরেণ্য অর্থনীতিবিদ ও বাংলাদেশের সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদে দায়িত্ব পালনকারী অনন্য সফল অর্থমন্ত্রী জনাব আবুল মাল আবদুল মুহিতের মৃত্যুতে আমি গভীরভাবে শোকাহত। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।
প্রবীণ সিভিল সার্ভেন্ট জনাব এএমএ মুহিত ওয়াশিংটন ডিসিতে তৎকালীন পাকিস্তান দূতাবাসের কূটনীতিকদের মধ্যে অন্যতম প্রথম যিনি ১৯৭১ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার পর স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতি আনুগত্যের অঙ্গীকার নিয়ে পাকিস্তানের পক্ষ পরিত্যাগ করেন। মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি বিশ্বব্যাপী স্বাধীন বাংলাদেশের স্বীকৃতি আদায়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ‘স্বাধীনতা পুরস্কারে’ পুরস্কৃত জনাব এএমএ মুহিত ছিলেন বাঙালি জাতীয়তাবাদের এক আপসহীন প্রবক্তা এবং ধর্মনিরপেক্ষ, প্রগতিশীল ও ১৯৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধের মশালবাহক।
দেশের একজন বিচক্ষণ অর্থমন্ত্রী এবং হৃদয়ে কল্যাণধর্মী অর্থনীতিবিদ জনাব মুহিত বাংলাদেশের সংসদে রেকর্ড সংখ্যক জাতীয় বাজেট পেশ করেছেন এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত দশকে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব প্রবৃদ্ধি ও সমৃদ্ধি অর্জনে নিরন্তর কর্মপ্রচেষ্ঠায় অসামান্য আবদান রেখে গেছেন।
সিলেটের এক বিশিষ্ট মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণকারী জনাব মুহিত ছিলেন একজন ধর্মপ্রাণ, দেশপ্রেমিক এবং খ্যাতিমান রাজনীতিবিদ যিনি জনসেবা এবং বাংলাদেশের জনগণের কল্যাণে তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। হার্ভার্ডের স্নাতক, গবেষক এবং অমিত জ্ঞানের মানুষ জনাব মুহিতের বিভিন্ন গ্রন্থ বিশেষ করে গভর্নেন্সের ওপর তাঁর অসংখ্য প্রকাশনা আজকের ও আগামি দিনের সরকারী কর্মচারী, শিক্ষক ও গবেষকসহ অনেকের জন্যই দিক-নির্দেশনা ও অশেষ অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। বাঙালি শিল্প ও সংস্কৃতির একজন নেতৃস্থানীয় পৃষ্ঠপোষক এবং আলোকিত চেতনা জনাব এ এম এ মুহিতের অসাধারণ কর্ম ও জীবন আগামী প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে। তাঁর প্রয়াণে জাতি এক অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হলো এবং আমাদের দেশ হারালো তার অন্যতম শ্রেষ্ঠ এক সন্তান।
আমি প্রয়াত এ এম এ মুহিতের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা তাঁকে জান্নাতুল ফেরদৌস দান করুন। আমীন।”
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন