জিবিনিউজ 24 ডেস্ক//
ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে ইংল্যান্ডে ঢোকা আশ্রয়প্রার্থীদের রুয়ান্ডায় পাঠাতে গত ১৪ এপ্রিল দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি সই হয়েছে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো এর সমালোচনা করেছে।
চুক্তি অনুযায়ী ইংল্যান্ড আশ্রয়প্রার্থীদের রুয়ান্ডায় পাঠাবে। রুয়ান্ডার কর্তৃপক্ষ তাদের আশ্রয় আবেদন বিবেচনা করবে। আবেদন গৃহীত হলে সেদেশে তাদের থাকতে হবে। চুক্তি বাস্তবায়নে ইংল্যান্ড সর্বোচ্চ এক হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা খরচ করবে।
ব্রিটিশ সরকার বলছে, চুক্তির কারণে ইংলিশ চ্যানেল পাড়ি দেয়ার ঝুঁকি নেয়া ব্যক্তির সংখ্যা কমবে। এছাড়া মানবপাচারকারীদেরও ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
জাতিসংঘসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এমন চুক্তি সইয়ের খবরে বিস্ময় প্রকাশ করেছে এবং সবচেয়ে কঠোরভাবে এর সমালোচনা করেছে।
চার্চ অফ ইংল্যান্ডের সবচেয়ে সিনিয়র যাজক আর্চবিশপ জাস্টিন ওয়েলবি বলেন, আশ্রয়প্রার্থীদের অন্য দেশে পাঠানো নৈতিকতার প্রশ্ন সামনে নিয়ে আসে। ‘‘ব্রিটেনের মতো খ্রিষ্টান মূল্যবোধের একটি দেশ আমাদের দায়িত্ব কাউকে সাব-কন্ট্রাক্ট হিসেবে দিতে পারে না,” বলেন তিনি।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সেন্ট্রাল আফ্রিকা বিভাগের পরিচালক লুইস মাজ বলেন, ‘‘রুয়ান্ডার মানবাধিকার রেকর্ড ভয়াবহ। সেখানে বাকস্বাধীনতাকে সম্মান করা হয় না।” লুইস মাজ রুয়ান্ডায় বসবাস করেছেন। তিনি বলেন, আফ্রিকা মহাদেশের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ দেশ রুয়ান্ডা। ‘‘সেখানে খুব বেশি খোলা জায়গা নেই,” বলেন তিনি।
২৬ হাজার ৩৩৮ বর্গকিলোমিটারের রুয়ান্ডা আফ্রিকার চতুর্থ সবচেয়ে ছোট দেশ। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার হিসেবে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে রুয়ান্ডায় এক লাখ ১৬৩ জন শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থী ছিলেন।
গতবছর তালেবান আফগানিস্তান দখল করার পর পালিয়ে যাওয়া আফগানদেরও সাময়িকভাবে আশ্রয় দিয়েছিল রুয়ান্ডা।
সমালোচকরা বলছেন, ব্রিটেনের সঙ্গে চুক্তি সইয়ের মাধ্যমে রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগামে তার দেশকে পশ্চিমা বিশ্বের বন্ধু হিসেবে তুলে ধরতে চাইছেন।
৬৪ বছয় বয়সি পল কাগামের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও রাজনৈতিক বিরোধীদের দমনের অনেক অভিযোগ রয়েছে।
ব্রিটেনের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে সমালোচনা প্রসঙ্গে কাগামে বলেন, এটি ‘মানুষের ব্যবসা’ নয়। এটি আশ্রয়প্রার্থীদের নতুন জীবন শুরুর সুযোগ দিবে বলে জানান তিনি।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের লুইস মাজ জানান অন্যান্যদের দেশের সঙ্গেও রুয়ান্ডা ব্রিটেনের মতো প্রায় একই রকম চুক্তি করেছে। যেমন ইসরায়েল থেকে শরণার্থী বা আশ্রয়প্রার্থীদের রুয়ান্ডায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশ ডেনমার্কও ব্রিটেনের মতো রুয়ান্ডার সঙ্গে চুক্তি করতে আলোচনা শুরু করেছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন