জিবিনিউজ 24 ডেস্ক//
বাংলাদেশের ভিশন ২০৪১ অর্জনসহ দুই দেশের সহযোগিতার সম্পর্ক আরো দৃঢ় করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন মার্কিন ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে খুবই আশাবাদী। সে কারণেই ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল ঢাকা সফরে এসেছে।
মার্কিন ব্যবসায়ীরা গতকাল সোমবার রাজধানীর ইন্টার কনটিনেন্টাল হোটেলে এফবিসিসিআই ও ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল আয়োজিত ইউএস- বাংলাদেশ বিজনেস সামিটে এসব কথা বলেন।
ঢাকা সফররত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উচ্চপর্যায়ের বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সদস্যরা এ সম্মেলনে অংশ নেন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। অনুষ্ঠানে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে এফবিসিসিআই ও ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের মধ্যে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে এখন বিনিয়োগের সুবর্ণ সময় চলছে। মার্কিন ব্যবসায়ীরা এই সুযোগকে কাজে লাগাতে পারেন।
এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন ঢাকা-চট্টগ্রাম এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইস্পিড ট্রেন, সমুদ্র অর্থনীতি, হাইটেক পার্ক, দেশজুড়ে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের কারণে বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশকে বেছে নেওয়ার জন্য মার্কিন ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বাংলাদেশ সরকার বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য কর অব্যাহতি, ডিউটি ড্র ব্যাকসহ নানা সুবিধা দিচ্ছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি, গ্যাস অনুসন্ধান, এলএনজি টার্মিনাল, ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপো, ওয়্যারহাউস অ্যান্ড কোল্ড চেইন, এভিয়েশন, শিপিং ও বন্দর, অটোমোবাইল, হোটেল ও হসপিটালিটি, ব্যাংক ও ইনস্যুরেন্স, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ এবং ম্যান মেড ফাইবার খাতে বিনিয়োগ করতে পারেন মার্কিন ব্যবসায়ীরা।
অনুষ্ঠানে শেভরনের বিজনেস ডেভেলপমেন্ট বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের মিশনপ্রধান জে আর প্রায়র বলেন, বাংলাদেশ অসাধারণ অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জন করেছে। খুব বেশি দেশ শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা দিতে পারেনি। বাংলাদেশ এই সাফল্য অর্জন করেছে।
ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের পরিচালক সিদ্ধান্ত মেহরা বলেন, বাণিজ্য প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীদের কাছে বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনা তুলে ধরবে।
মুক্ত আলোচনায় এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, সম্ভাবনার তুলনায় দুই দেশের বাণিজ্য কম। দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাড়াতে প্রতিনিধিদল কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীদের সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ প্রস্তুত বলেও জানান তিনি।
এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, বাংলাদেশের হালকা প্রকৌশল, ইলেকট্রিক্যাল কম্পোনেন্টস আইওটি ও স্বাস্থ্য খাতে যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগের ভালো সুযোগ রয়েছে।
মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে দেশের শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বাংলাদেশ জুয়েলারি অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) সভাপতি সায়েম সোবহান আনভীর বলেন, দেশে বিদেশি বিনিয়োগের বিপুল সম্ভাবনা আছে। সরকার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন সুবিধা দিচ্ছে।
ডিসিসিআই সভাপতি রিজওয়ান রহমান বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি হস্তান্তরের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বিনিয়োগের মাধ্যমে বাংলাদেশের ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সুবিধা নিতে পারেন মার্কিন উদ্যোক্তারা।
ফিকির সভাপতি নাসের এজাজ বিজয় বলেন, বাংলাদেশে বিদেশি কম্পানিগুলো প্রত্যেকে ভালো মুনাফা করছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীদেরও এই সুযোগ নেওয়া উচিত।
বাংলাদেশের তথ্য-প্রযুক্তি পণ্যের দাম তুলনামূলক কম বলে জানান বেসিসের সভাপতি রাসেল টি আহমেদ। যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশ থেকে আরো বেশি তথ্য-প্রযুক্তি পণ্য আমদানির আহ্বান জানান তিনি।
বেক্সিমকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান জানান, বাংলাদেশের ইউএস সার্টিফায়েড অনেক ফার্মেসি প্লান্ট রয়েছে। এ দেশের ওষুধ কারখানাগুলো বিশ্বমানের যন্ত্র দিয়ে সজ্জিত। এ ছাড়া এ দেশের শ্রমশক্তিও তুলনামূলক সস্তা। তাই যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কম্পানির বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশ সবচেয়ে আদর্শ গন্তব্য।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন