জিবিনিউজ 24 ডেস্ক//
কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচার করার পর ভারতে পালিয়ে থাকা অবস্থায় গ্রেপ্তার প্রশান্ত কুমার (পি কে) হালদারের এ পর্যন্ত ১৫০ কোটি রুপি সম্পদের খোঁজ মিলেছে। ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তার আরও সম্পদের সন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (১৭ মে) প্রিভেনশন অব মানি লন্ডারিং অ্যাক্টের অধীনে কলকাতা নগর দায়রা আদালতে পি কে হালদারকে হাজির করে আরও ১৪ দিনের রিমান্ড চায় ভারতের এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। সিবিআই স্পেশাল কোর্টের বিচারক তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন।
এ সময় সাংবাদিকরা মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে আদালতের সরকারি পক্ষের আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা পি কে হালদারের ১৫০ কোটি রুপি (ভারতীয় মুদ্রা) মূল্যমানের সম্পদের খোঁজ পেয়েছি। আরও সম্পদ আছে কিনা তা অনুসন্ধান চলছে।
আদালতে সরকারি ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা শুনানিতে অংশ নেন। অরিজিৎ চক্রবর্তী জানান, তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। অন্যদিকে আসামি পক্ষের দাবি- চার দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে।
পি কে হালদারকে জিজ্ঞাসাবাদে তিনটি বিষয়ে অনুমতি চেয়েছে ইডি। সেগুলো হলো- চার্জশিট ছাড়া হেফাজতে রেখে দেওয়ার অনুমতি, দেশ ও দেশের বাইরে তদন্তের স্বার্থে যেখানে খুশি অভিযুক্তদের নিয়ে যাওয়ার অনুমতি এবং ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত জড়িতদের জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি।
শনিবার দুপুরে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলার অশোক নগরের একটি বাড়ি থেকে পি কে হালদারকে গ্রেপ্তার করে ইডি। এদিন আরও পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে চারজন বাংলাদেশি। তারা হলেন- প্রীতিশ কুমার হালদার ও তার স্ত্রী (নাম জানা যায়নি), উত্তম মিত্র ও স্বপন মিত্র। এছাড়াও প্রণব হালদার নামে এক ভারতীয়কে গ্রেপ্তার করে ইডি। পরবর্তীতে সঞ্জীব হালদার নামে একজনকে আটক করার কথা জানায় ইডি। তিনি পি কে হালদারের সহযোগী সুকুমার মৃধার জামাই।
পি কে হালদারকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে তিন দিনের রিমান্ডে নেয় ইডি। ইডি জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ থেকে রেশন কার্ড, ভারতীয় ভোটার আইডি কার্ড, স্থায়ী অ্যাকাউন্ট নম্বর ও আধার কার্ডের মতো বিভিন্ন সরকারি পরিচয়পত্রও সংগ্রহ করেছেন পি কে হালদার। জালিয়াতির মাধ্যমে এসব পরিচয়পত্র সংগ্রহ করে শিবশঙ্কর হালদার নামে নিজেকে ভারতীয় নাগরিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে অবস্থান করছিলেন।
এর আগে গত শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গের অন্তত নয়টি স্থানে একযোগে অভিযান চালায় ইডি। এতে কয়েকটি অভিজাত বাড়িসহ পি কের বিপুল সম্পত্তির খোঁজ পাওয়া গেছে। বাড়িগুলো থেকে জমির দলিলসহ গুরুত্বপূর্ণ অনেক নথি জব্দ করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে পি কে হালদারের ২০ থেকে ২২টি বাড়ি আছে বলে প্রাথমিক তথ্য পাওয়া গেছে।
প্রসঙ্গত, বেশ কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব পালনকালে প্রায় তিন হাজার ৬০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ রয়েছে পি কে হালদারের বিরুদ্ধে। তাকে গ্রেপ্তার করতে রেড অ্যালার্ট জারি করেছিল ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন (ইন্টারপোল)।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন