কে কতটা গণমাধ্যমবিরোধী, জানালেন বিএনপি-আ.লীগের শীর্ষ নেতা

জিবিনিউজ 24 ডেস্ক//

ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কফিনে পেরেক দেওয়ার মতো বলে দাবি করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তবে তার এই দাবিকে ‘ভূতের মুখে রাম নাম’ বলে অভিহিত করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

সোমবার (২৩ মে) এ বিষয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। এর আগে গতকাল রবিবার (২২ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কথা বলেন ফখরুল।

 

এতে বক্তব্যে দুই নেতাই একে অপরের দলের বিরুদ্ধে কে কতটা গণমাধ্যমবিরোধী তা তুলে ধরেছেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশে একসময় শুধু বিটিভি ছিল ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যম। শেখ হাসিনাই প্রথম বেসরকারি টেলিভিশনের অনুমোদন দেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজ দেশে অর্ধশত বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এবং অনলাইন টিভি, আইপি টিভিসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে গণমাধ্যমের অবারিত দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরো বলেন, বর্তমানে সহস্রাধিক দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক পত্রিকা এবং অসংখ্য অনলাইন নিউজ পোর্টাল রয়েছে। যেখানে সব রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি বিস্তারিতভাবে প্রকাশিত হচ্ছে। পাশাপাশি বর্তমান সরকার সাংবাদিকদের মর্যাদা বৃদ্ধি এবং অধিকার সুপ্রতিষ্ঠার জন্য ‘গণমাধ্যম কর্মী আইন’ প্রণয়নের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। অথচ বিএনপির শাসনামলে সাংবাদিকদের মর্যাদা ও অধিকার বিবেচনা করা হয়েছিল শ্রম আইনের আওতায়।

আওয়ামী লীগের এই শীর্ষ নেতা বলেন, প্রতিদিন গণমাধ্যমে বিএনপি নেতাদের মিথ্যাচারের বিস্তারিত সংবাদ পরিবেশিত হচ্ছে। টেলিভিশনে তাদের বিভিন্ন কর্মসূচি সরাসরি লাইভ সম্প্রচার হচ্ছে। বিএনপি নেতাদের মনগড়া ও নির্জলা মিথ্যাচার কোনো রকম সম্পাদনা ছাড়াই প্রচার হচ্ছে গণমাধ্যমে। টকশোসহ বিভিন্ন প্রোগ্রামে বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যাচার ও অপপ্রচার প্রতিদিন সম্প্রচারিত হচ্ছে। তারপরও তারা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে অবান্তর প্রশ্ন তুলছেন।

দেশবাসী ভুলে যায়নি, বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে বিবিসির সাংবাদিক মানিক চন্দ্র সাহা, খুলনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক জন্মভূমি পত্রিকার সম্পাদক হুমায়ুন কবির বালুসহ ১৬ জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছিল। ওই সময়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ৫০০টিরও বেশি মামলা এবং ৮০০ হামলার ঘটনা ঘটেছিল। এমনকি ব্রিটিশ টেলিভিশন চ্যানেল ৪-এর সাংবাদিক লিওপোল্ড ব্রুনো সরেন্তিনো ও মালিকসহ কয়েকজন বিদেশি সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করে নির্যাতন চালানো হয়।

অপরদিকে বিএনপির মহাসচিব বলেছিলেন, প্রায় প্রতিটি গণমাধ্যমকে সরকারের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে। তাদের নজরদারি এমন পর্যায়ে গেছে, কোন সাংবাদিক কখন কার সঙ্গে কথা বলছেন, দেখা করছেন, সেটাও তারা নজরদারি করছে এবং সুবিধামতো তাঁদের কথোপকথন প্রকাশ করে দিচ্ছে। আমরা যখন বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি পালন করছি, তখন অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে লক্ষ করছি, গণমাধ্যমকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। যারা স্বাধীনভাবে লিখতে চান, মত প্রকাশ করতে চান, তা তারা করতে পারছেন না।

তিনি আরো বলেন, এখন যে আইনগুলো তৈরি করা হচ্ছে, সেটা গণমাধ্যমকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। এ রাস্তা কোনো দল বা ব্যক্তির নয়, স্বাধীনতাও কোনো ব্যক্তি বা দলের নয়। আমরা যখন মুক্তিযুদ্ধ করি, তখন আমাদের স্বপ্ন ছিল একটি স্বাধীন–গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণ করা। কিন্তু যখন দেখি সাংবাদিকেরা লিখতে পারছেন না, সম্পাদকদের বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, তখন খুব কষ্ট লাগে, দুঃখ লাগে। বস্তুত, এর মধ্য দিয়ে সাংবাদিকদের যে সাহসিকতা, সেটাও কেড়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন