সৈয়দ নাজমুল হাসান, ঢাকা ||
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংগঠিত ছাত্রলীগ-ছাত্রদল সংঘর্ষে সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উপর ছাত্রদলের সশস্ত্র হামলার প্রতিবাদে এবং সকল শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
আজ রোববার (২৯ মে) বেলা এগারোটায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় টিএসসি সংলগ্ন সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের উপর ছাত্রদলের সশস্ত্র হামলার প্রতিবাদে এবং সকল শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, "করোনার ক্ষতি কাটিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা যখন সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে ঠিক তখনি ছাত্রদল ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে। তবে সাধারণ ছাত্ররা তাদের সেই আশায় পানি ঢেলে দিয়েছে। তাদের ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেয়নি। নিরাপদ ক্যাম্পাসে ছাত্রদলের হামলার প্রতিবাদে এবং ক্যাম্পাসে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রলীগ একাত্মতা প্রকাশ করছে।"
তিনি বলেন, অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে খুনী জিয়াউর রহমান ছাত্রদল গঠন করে টাকা ও অস্ত্র হাতে তুলে দিয়েছিলেন। কিন্তু শেখ হাসিনা বই-খাতা তুলে দিয়েছেন। কারণ বই খাতা হলো সেই হাতিয়ার যার মাধ্যমে অস্ত্রকে নিবারণ করা যায়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে যারা ধৃষ্ঠতা দেখিয়েছে তাদের ক্ষমা চেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে হবে। অন্যথায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিহত করবে এবং ছাত্রলীগ সবসময় তাদের (সাধারণ শিক্ষার্থী) পাশে থাকবে।"
গনণমাধ্যমকে দ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা ভুলে যাইয়েন না বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতি নষ্ট করেছে বিএনপি। দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বিএনপি। শিবিরকে নিয়ে রগ কাটার রাজনীতি করেছে বিএনপি। আজকে আরামে আছেন তাই অনেক কিছু ভুলে গেছেন। খুনী জিয়াউর রহমানের হাত ধরে খালেদা জিয়াও ছাত্রদলের হাতে টাকা আর অস্ত্র তুলে দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, "আপনারা আমাদের খারাপ দিকগুলো জাতির সামনে তুলে ধরবেন কিন্তু অসত্য তথ্য, মিথ্যা তথ্য দিয়ে জাতিকে বিভ্রান্ত করবেন না। জেনেশুনে নিউজ করুন।সত্যকে তুলে ধরুন।"
সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, "কিছুদিন ধরে অছাত্র এবং আদুভাইদের সংগঠন-ছাত্রদলের নতুন কমিটি হওয়ার পর তারা ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করার পায়তারা শুরু করেছে। ছাত্রদল সভাপতি কিছুদিন আগে ঔদ্ধত্যমূলক বক্তব্য ও উষ্কানিমূলক স্লোগান দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ইমোশনে আঘাত করেছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তাঁর সাধিত উন্নয়ন ও বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কারণেই প্রথম বর্ষ থেকে সকল শিক্ষার্থীদের হৃদয়ে অবস্থান করেন। শিক্ষার্থীদের মনে কষ্ট দিয়ে বিভিন্ন ধরণের কথাবার্তা মাধ্যমে তারা ক্যাম্পাসে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে চায়।"
তিনি বলেন, "ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতারা প্রেসক্লাবের সামনে তাদের বক্তব্যের মাধ্যমে ধৃষ্টতার সীমা লঙ্ঘন করে বলেছে, '৭৫-এর হাতিয়ার দরকার হলে আবার তাদের হাতে গর্জে উঠবে। তাদের এই বক্তব্যে প্রমাণিত হয় যে '৭৫-এ খুনি জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড হয়েছিল। এতবছর পর এসে ছাত্রদলের কুলাঙ্গাররা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতার এই বাণীকে সত্য বলে বিচার করছে। এরই মাধ্যমে তারা বাংলাদেশে হত্যা ও খুনের রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করার পায়তারা করছে।"
তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশ ছাত্রলীগ শক্ত হাতে তাদের দমন করবে। বাংলাদেশের সকল ছাত্রসমাজ তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলে এই অছাত্র ও চাচ্চু বাহিনীকে সারা বাংলাদেশের প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বিতাড়িত করবে।"
মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন, কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতৃবৃন্দ, ঢাবি হল ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা, ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ, ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ, গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সায়েন্সে কলেজ ছাত্রলীগ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি কলেজ ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা অংশ নেয়।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন