জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //
অনুদানের ছবি ‘হৃদিতা’ নিয়ে যেন তর্ক-বিতর্কের শেষ নেই। মহরতের পর অনুদান! তাতে চারপাশে এমনিতেই হাজার প্রশ্ন ও সন্দেহের তীর। উঠেছে জালিয়াতির অভিযোগ। এবার যোগ হলো আইনি নোটিশ।
অনিয়ম এবং অনুদানের শর্ত ও নীতিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ‘হৃদিতা’ ছবির অনুদান বাতিল ও শুটিংসহ যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিতের জন্য তথ্য সচিব এবং ‘হৃদিতা’র তথাকথিত প্রযোজকসহ ৯ জনকে নোটিশ দিলেন জাদুকাঠি মিডিয়ার কর্ণধার চিত্র প্রযোজক মো. মিজানুর রহমান। তার পক্ষে আইনি নোটিশটি পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আফতাব উদ্দিন ছিদ্দিকী।
২৪ সেপ্টেম্বর রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এবং ২৭ সেপ্টেম্বর ই-মেইলে পাঠানো ওই নোটিশে একই সঙ্গে ‘হৃদিতা’র জন্য ইতোমধ্যে ছাড়কৃত অনুদান ফেরত এবং অনুদানের মতো সরকারের একটি মহতী উদ্যোগকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়।
নোটিশে বলা হয়, ‘হৃদিতা’ মূলত ‘সময়’ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত লেখক আনিসুল হকের একটি উপন্যাস। তিনি ২০১৯ সালের ২৮ এপ্রিল, ৫০ হাজার টাকা সম্মানীর বিনিময়ে প্রযোজক মিজানুর রহমানকে এককভাবে ‘হৃদিতা’ থেকে চলচ্চিত্র নির্মাণের লিখিত অনুমতি দেন। ওই দিন মিজানুরের প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ‘জাদুকাঠি মিডিয়া’র অফিসিয়াল প্যাডে আনিসুল হক স্বহস্তে লিখেন “যাদুকাঠি মিডিয়াকে আমার উপন্যাস সময় প্রকাশনীর ‘হৃদিতা’ থেকে চলচ্চিত্র নির্মাণের অনুমতি প্রদান করা হলো।”
নোটিশে আরো বলা হয়, ‘হৃদিতা’ সম্পূর্ণরূপে নির্মাণাধীন একটি চলচ্চিত্র। কারণ লেখকের অনুমতি পাবার পর মিজানুর ‘ড্রিমগার্ল’ নাম দিয়ে ছবিটি পরিচালনার জন্য ইস্পাহানি আরিফ জাহানকে নিয়োগ দেন, নায়ক-নায়িকা চূড়ান্ত করে তাদের সাইনিং মানি দেন, ছবির মহরত করেন। এমনকি পুরোদমে শুটিংয়ের প্রস্তুতিও সারেন। এসব কাজে প্রচুর অর্থ ব্যয়ও করেন। কিন্তু করোনার তাণ্ডবে সব কিছু থমকে যায়।
এরই মধ্যে ২৫ জুন, ২০২০ তারিখে জারি হয় ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য অনুদানের ছবির প্রজ্ঞাপন। তাতে দেখা যায়, ‘হৃদিতা’ ছবিটি অন্য প্রযোজকের (এম, এন ইস্পাহানী) নামে অনুদান পেয়েছে। অথচ ওই প্রজ্ঞাপনের ১ বছর ২ মাস আগে এবং এমনকি ২০১৯-২০ অর্থবছরের জন্য অনুদানের ছবি আহবান করে সরকার প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিরও ৫ মাস আগে মিজানুর এককভাবে ‘হৃদিতা’ নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের অনুমতি পান।
নোটিশে বলা হয়, অনুদান নীতিমালা ২০২০ অনুসারে, নির্মাণাধীন চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য অনুদানের জন্য বিবেচিত হয় না। তাছাড়া অনুদানের আবেদনপত্রের সাথে লেখকের অনুমতিপত্র দাখিল করতে হয়। এই দুই ক্ষেত্রেই অনুদানপ্রাপ্ত ‘হৃদিতা’ ছবির পরিচালক বা প্রযোজক নিশ্চিতভাবে প্রতারণা ও অনিয়েমের আশ্রয় নিয়েছেন। এসব অবৈধতার কারণে ‘হৃদিতা’র অনুদান বাতিলযোগ্য।
নোটিশে অন্যান্যদের মধ্যে চলচ্চিত্র অনুদান কমিটির সভাপতি তথ্যমন্ত্রী, সহ-সভাপতি তথ্য-প্রতিমন্ত্রী, সদস্য এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক, অনুদানপ্রাপ্ত ছবি ‘হৃদিতা’র পরিচালক প্রযোজক এম, এন ইস্পাহানী ও পরিচালক আরিফ জাহানকে পক্ষভুক্ত করা হয়।
এ বিষয়ে নোটিশ দাতা আইনজীবী আফতাব উদ্দিন ছিদ্দিকী বলেন, প্রার্থিত বিষয়ে তিন দিনের মধ্যে কোনো ব্যবস্থা না নিলে, সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন