ইউরোপসেরা ইতালিকে হারিয়ে ফিনালিসিমা জিতল আর্জেন্টিনা

জিবিনিউজ 24 ডেস্ক//

দুই মহাদেশীয় সেরার লড়াই। ইউরোপসেরা ইতালি আর দক্ষিণ আমেরিকার সেরা আর্জেন্টিনার লড়াই। ধ্রুপদী এক দ্বৈরথেরই আশা করা হচ্ছিল। তবে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা সেটা হতে দিলো কই? শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রায় পুরোটা সময় ইতালির ওপর একপ্রকার আধিপত্য বিস্তারই করেছে আলবিসেলেস্তেরা। ৩-০ গোলে ইউরোপসেরাদের হারিয়ে জিতে নিয়েছে ফিনালিসিমার আর্তেমিও ফ্রাঞ্চি ট্রফিটাও।

ফিনালিসিমার শুরু থেকেই ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামের আশপাশ চলে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা সমর্থকদের দখলে। ৯০ হাজার ধারণক্ষমতাসম্পন্ন স্টেডিয়ামের একটা আসনও ফাঁকা যায়নি। শুরু থেকেই উত্তাপটা টের পাওয়া যাচ্ছিল বৈকি।

ম্যাচেও এর ঝাঁজটা ছিল বেশ। শুরুটা আর্জেন্টিনা করেছিল দুর্দান্ত। বলের দখল নিয়ে প্রতিপক্ষ রক্ষণে আক্রমণের পসরাই সাজিয়ে বসেছিল। তবে ইতালিও শুরুর নড়বড়ে ভাবটা কাটিয়ে ম্যাচে ফেরার ইঙ্গিত দেয় শুরুর দশ মিনিট পেরোতে। প্রথম শট অন টার্গেট, প্রথম বড় সুযোগটাও তৈরি করেছিল দলটিই। 

লিওনেল স্ক্যালোনির অধীনে আর্জেন্টিনা আর যাই হোক, রক্ষণে যে বেশ শক্তপোক্ত, তার প্রমাণ মিলেছে গেল কোপা আমেরিকাতেই। তার প্রমাণ ওয়েম্বলিতেও দিলেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ আর ক্রিশ্চিয়ান রোমেরোরা। এমি মার্টিনেজ একটা দারুণ শট ঠেকালেন শুরুতে, ম্যাচের ২০তম মিনিটে আর্জেন্টিনা রক্ষণকে ফাঁকি দিয়ে তৈরি করা বড় সুযোগটাও শেষ মুহূর্তের ট্যাকলে ঠেকিয়ে দিয়েছেন রোমেরো। দিনদুয়েক আগে টিওয়াইসি স্পোর্টসকে দেওয়া সেই সাক্ষাৎকারে মেসিও তারিফ করেছিলেন বেশ। গোল হজম না করলেই যে জেতার সুযোগ তৈরি হয়ে যায় বেশ!

মেসি সেই সুযোগটাই নিলেন মিনিট কয়েক পর। ২৮ মিনিটে জিওভানি ডি লরেঞ্জোর কড়া পাহারা এড়িয়ে বাম পাশ থেকে আক্রমণে উঠে বল বাড়ান মাঝে থাকা লাওতারো মার্টিনেজের উদ্দেশ্যে। সহজ ট্যাপ ইনে আর্জেন্টিনাকে এগিয়ে দেন লাওতারো। তাতেই ১-০ গোলে এগিয়ে গিয়ে ম্যাচের চিত্রটাই বদলে দেয় আর্জেন্টিনা। এর আগের ১০-১৫ মিনিটে যে পরিস্থিতিটা একটু বিরূপই হয়ে গিয়েছিল আলবিসেলেস্তেদের জন্য! \

এই এক গোলের পর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি লিওনেল মেসিদের। ইতালি এরপর মরিয়া হয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়নরা গোল শোধের চেষ্টা করেছে। আর আর্জেন্টিনা সেসব সামলে প্রতি আক্রমণে উঠে এসেছে। বিরতির ঠিক আগে তেমনই এক প্রতি আক্রমণে দ্বিতীয় গোলের দেখা পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। গোলরক্ষক এমিলিয়ানোর বাড়ানো বল প্রতিপক্ষ অর্ধে লাওতারোকে পেয়ে যায়, সঙ্গে ছিলেন কোপা জয়ের নায়ক আনহেল ডি মারিয়া। ২ বনাম ৩ মুহূর্ত সৃষ্টি হয়েছিল একটা। শেষ মুহূর্তে লাওতারোর বাড়ানো বলে আলতো চিপে বলটা ইতালির জালে জড়ান ডি মারিয়া। তাতেই ২-০ গোলে এগিয়ে বিরতিতে যায় আর্জেন্টিনা।

বিরতির আগে তাও বারদুয়েক আর্জেন্টিনা রক্ষণকে একটু দুশ্চিন্তা উপহার দিতে পেরেছিল ইতালি। দুই গোল খেয়ে বিরতি থেকে ফিরে সেটাও উবে গেল যেন। তাতে খেলাটা হয়ে পড়ল আর্জেন্টিনা আক্রমণ আর ইতালি রক্ষণের। আরেকটু স্পষ্ট করে বললে মেসি-মার্টিনেজ-ডি মারিয়াদের আক্রমণ আর ইতালিয়ান গোলরক্ষক জিয়ানলুইজি ডনারুমার। বিরতির পর কম করে হলেও চারটা নিশ্চিত গোলের সুযোগ ঠেকিয়ে দিয়েছেন। 

যার মধ্যে দুটো ছিল মেসির। প্রথম গোলের যোগান দিলেও শুরুর ৪৫ মিনিটে মেসি খানিকটা নিশ্চুপই ছিলেন যেন। তবে স্বরূপে ফিরেছিলেন দ্বিতীয়ার্ধে। মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে প্রতিপক্ষ বক্সে গিয়ে শট করেছিলেন তিনি, সেটা ঠেকিয়ে দেন ডনারুমা। মিনিট কয়েক পর আবারও তার শট একই পরিণতি পায়। শেষ মুহূর্তে আর্জেন্টিনার জয় যখন মুহূর্তের দূরত্বে, তখন তার সলো রান আটকে দেয় ইতালি রক্ষণ। তখনই মেসি বলটা বাড়ান মিনিট দুয়েক আগে মাঠে আসা পাওলো দিবালাকে। বক্সের সামনে থেকে দারুণ এক ফিনিশে ব্যবধানটা আরও বাড়ান তিনি। তাতে একপেশে ফাইনালটা আরও একপেশে করে আর্জেন্টিনা ৩-০ ব্যবধানে হারায় ইতালিকে। ১৯৯৩ সালের পর আবারও ফিনালিসিমার আর্তেমিও ফ্রাঞ্চি ট্রফি জয়ের আনন্দে ভাসে আলবিসেলেস্তেরা।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন