জিবিনিউজ 24 ডেস্ক//
মুম্বাইয়ে বাংলাদেশি জাহাজে দায়িত্বরত নাবিকের রহস্যজনক মৃত্যু হাসপাতালে ভর্তি অবস্থায় নাবিক আবু জাহেদ
ভারতের মুম্বাইয়ে বাংলাদেশি জাহাজ ‘এমভি জাহান মনি’তে অনবোর্ড থাকা অবস্থায় বাংলাদেশি নাবিক আবু জাহেদের (২২) রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তার সহকর্মী ও পরিবারের অভিযোগ— গত দুই মাস ধরে জাহাজে দায়িত্বরত থাকা অবস্থায় শারীরিক-মানসিক নির্যাতনের ধারাবাহিকতায় গত ৩১ মে মুম্বাইয়ের একটি হাসপাতালে জাহেদের মৃত্যু হয়।
নিহত নাবিক আবু জাহেদ জাহাজ ‘এমভি জাহান মনি’তে ডেক ক্যাডেট হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
আবু জাহেদের ভাই রাসেল পারভেজ বৃহস্পতিবার (২ জুন) জানান, আবু জাহেদ চট্টগ্রাম মেরিন ফিশারিজ একাডেমির ক্যাডেট ছিলেন। গত মার্চে সে চট্টগ্রামের এস আর শিপিং এজেন্সির জাহাজ ‘এমভি জাহান মনি’তে যোগ দেয়। ওই মাসে জাহাজে অনবোর্ড হওয়ার পর থেকে সমুদ্রে বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াতকালে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা তার ওপর শারীরিক-মানসিক নির্যাতন করছিলো বলে বিভিন্ন সময়ে ফোনে পরিবারের কাছে অভিযোগ করে বলে জানান রাসেল পারভেজ।
জাহেদের সহকর্মী মিনহাজ উদ্দিন ও আফজাল রিয়াজ বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি; অনবোর্ড হওয়ার পর থেকেই আবু জাহেদের ওপর কাজের অনেক প্রেসার দেওয়া হত। ভোর ৪টা থেকে টানা রাত ৮টা পর্যন্ত তাকে অনবরত ডিউটি করতে বাধ্য করা হতো। এর ফলে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহের দিকে সে জ্বরে আক্রান্ত হয়। জ্বরের জন্য তাকে তিন দিন জাহাজে আইসোলেটেড করা হয়। পরবর্তীতে জ্বর কমলে আবারও প্রতিদিন তাকে ১৬-১৮ ঘণ্টা ডিউটি করতে বাধ্য করা হয়। গত সপ্তাহে জাহেদ গুরুতর অসুস্থ হলে তার চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে কিছু এন্টিবায়োটিক খেয়ে ডিউটিতে যেতে বাধ্য করা হয়।
‘গত ৩০ মে মুম্বাই বন্দরে জাহাজটি এংকর লোড করার সময় জাহেদ মাথা ঘুরে পড়ে যায় এবং তার রক্তবমি শুরু হয়। এসময় তাকে ফ্রেশ ওয়াটারের বোটে করে মুম্বাইয়ের শোরে হসপিটালে আনা হয়। এরপর ৩১ মে সে মৃত্যুবরণ করে।’
সহকর্মীরা আরো জানান, জাহাজটি মুম্বাই বন্দরে যাওয়ার আগে চায়না, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া বন্দর ঘুরে আসলে গুরুতর অসুস্থ জাহেদের কোনো চিকিৎসার ব্যবস্থা করেনি সিনিয়র কর্মকর্তারা।
নিহতের ভাই রাসেল পারভেজ বলেন, আমার ভাইয়ের মৃত্যুর ঘটনায় সঠিক তদন্ত দাবি করছি। তার মৃত্যুর জন্য যারা দায়ী, তাদের শাস্তি ও উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দাবি করছি।
এ প্রসঙ্গে জাহাজ কর্তৃপক্ষ এস আর শিপিং এজেন্সির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মেহেরুল করিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, নিহতের পরিবারের সাথে আমাদের যোগাযোগ হয়েছে। তার লাশ দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা নিয়েছে শিপিং এজেন্সি।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন