জিবিনিউজ 24 ডেস্ক//
ভয়াবহ নিমতলী ট্র্যাজেডির আজ ১২ বছর। ২০১০ সালের এই দিনে নিমতলীতে রাসায়নিক গুদাম থেকে সূত্রপাত হওয়া আগুনে পুড়ে মারা যান ১২৪ জন। আহত হন অর্ধশতাধিক। পুড়ে যায় ২৩টি বসতবাড়ি, দোকানপাট ও কারখানা।
চোখের সামনে নিজের বাড়ি, আপনজনদের পুড়তে দেখেছেন অনেকে। রাসায়নিকের গুদামে থাকা দাহ্য পদার্থের কারণেই পুরান ঢাকার নবাব কাটরার নিমতলীতে ভয়াবহ আগুন ছড়িয়ে পড়ে বলে তদন্তে উল্লেখ করা হয়।
এই দুর্ঘটনার ১২ বছর কেটে গেলেও পুরান ঢাকা থেকে কেমিক্যাল গুদামগুলো সরানো হয়নি। প্রতিশ্রুতি দিয়েও কোনো কাজ হয়নি।
নীমতলী ট্রাজেডির পর টাস্কফোর্স গঠন, অঙ্গিকার ও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। রাজধানী থেকে রাসায়নিকের গুদাম-কারখানা সরিয়ে নিতে হয় গঠন করা হয় দুটি কমিটি। সেই কমিটি কেরানীগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জে জায়গা ঠিক করার সুপারিশসহ উচ্চ মাত্রার বিপজ্জনক পাঁচ শতাধিক রাসায়নিকের তালিকা করে প্রতিবেদন জমা দেয় শিল্প মন্ত্রণালয়ে। তবে এসবের কোনো কিছুরই বাস্তবায়ন হয়নি। এর পর কেটে গেছে বছরের পর বছর। কিন্তু বদলায়নি পুরান ঢাকা।
বিভিন্ন গুদামে রক্ষিত মারাত্মক দাহ্য রাসায়নিক পদার্থের কারণেই ভয়াবহ এ ঘটনা ঘটে। সেই ঘটনার ১২ বছর পরও পুরান ঢাকার মানুষের আতঙ্ক কাটেনি। রাসায়নিকের গুদামগুলো এখনও পুরোপুরি সরানো হয়নি। যার কারণে এখনও বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েই গেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে পুরান ঢাকায় রাসায়নিকের গুদাম ও দোকান রয়েছে প্রায় ২২ হাজার। অনুমোদন বা লাইসেন্স আছে মাত্র ৮০০টি গুদামের। বিভিন্ন বাসাবাড়িতেও আছে কেমিক্যাল ও পারফিউমের গুদাম।
স্থানীয়রা বলছেন, নিমতলী বা চুড়িহাট্টার মতো ভয়াবহ ঘটনার পরও রাসায়নিক পদার্থের ঝুঁকি থেকে বের হতে পারেনি এলাকাবাসী।
নিমতলীর পর চুড়িহাট্টা অগ্নিকাণ্ডে পুরান ঢাকা থেকে সব কেমিক্যাল গুদাম ও দোকান সরানোর ঘোষণা দিয়েছিল একাধিক মন্ত্রণালয়, সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিস। ঘোষণা বাস্তবায়নে ১৫ দিনের অভিযানও চালিয়েছিল সিটি করপোরেশন। সিলগালা করা হয়েছিল কয়েকটি গুদাম। তবে এতে বিশেষ পরিবর্তন আসেনি। প্রশাসনের চোখ এড়িয়ে এখনও রাসায়নিকের কেনাবেচা চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাইন উদ্দিন গণমাধ্যমকে জানান, নতুন করে পুরান ঢাকায় গুদাম স্থাপন করে কাউকে কেমিক্যাল ব্যবসা করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। পাশাপাশি ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কেমিক্যালের গুদাম শনাক্ত করে তা সরানোর কাজ চলছে।
এছাড়া শ্যামপুর ও মুন্সীগঞ্জে দ্রুত অবকাঠামোর উন্নয়ন করা সম্ভব হলে স্বল্প সময়ের মধ্যেই কেমিক্যালের গুদাম ও প্লাস্টিক শিল্প প্রতিষ্ঠান সরে যাবে। এছাড়া ফায়ার সার্ভিস ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সচেতনতা বাড়ানোর কাজ চলছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন