জিবিনিউজ 24 ডেস্ক//
সীতাকুণ্ডের কন্টেইনার ডিপোতে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড রাসায়নিক থাকার কারণে এতো বড় বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে ধারণা করছেন দমকল বাহিনীর কর্মকর্তারা।
তারা বলছেন, ডিপোর কয়েকটি কন্টেইনারে অত্যন্ত দাহ্য এই রাসায়নিকটি ছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। তারা বলছেন, একারণে সেখানে একাধিক বিস্ফোরণ ঘটেছে যাতে এতো বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
চট্টগ্রাম শহরের কাছে এই ডিপোতে শনিবার রাতে অগ্নিকাণ্ডের সূচনা ঘটে। এতে অন্তত চারশ জন দগ্ধ হয়েছেন। কর্মকর্তারা বলছেন কারো কারো শরীর এমনভাবে পুড়ে গেছে যে তাদের চিহ্নিত করা কঠিন।
হাসপাতালগুলোতে আহত লোকজন উপচে পড়ছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে যে হতাহতের সংখ্যা আরো অনেক বেড়ে যেতে পারে।
শুধু একটা বিস্ফোরণ ছিল না। কিছুক্ষণ পর পর থেকে থেকে বিস্ফোরণ হয়েছে। আগুন যখন একটা কন্টেইনার থেকে আরেকটা কন্টেইনারে গিয়ে লাগছিল তখন একটা একটা করে বিস্ফোরণ হচ্ছিল বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
এই ডিপোটি প্রায় ২৬ একর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। ধারণা করা হচ্ছে সেখানে কয়েক হাজার কন্টেইনার ছিল।
এসব কন্টেইনারে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড ছাড়াও আরো কিছু রাসায়নিক ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়াও সেখানে রপ্তানির জন্য গার্মেন্টসের তৈরি পোশাকও ছিল।
বাংলাদেশে কোনা একটি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আগুন নেভাতে গিয়ে এই বাহিনীর এতো কর্মীর প্রাণহানি স্মরণ কালের মধ্যে কখনো ঘটেনি।
কর্মকর্তারা বলছেন, সীতাকুণ্ডের মতো শিল্প এলাকায় আগুন মোকাবেলার করার মতো প্রশিক্ষণ এবং যন্ত্র-সামগ্রী দমকল বাহিনীর রয়েছে। কিন্তু এই ডিপোতে যে রাসায়নিক-ভর্তি কন্টেইনার ছিল দমকল বাহিনীর কর্মকর্তাদের সেটা জানা ছিল না। দমকল কর্মীরা জানান, তারা যখন আগুন নেভাচ্ছিলেন তখন একর পর এক বিস্ফোরণ ঘটতে থাকে এবং তাতে প্রাথমিক যে দলটি সম্মুখভাগে কাজ করছিলেন তারাই নিহত হয়েছেন।
একজন দমকল কর্মী বলেন, "আমরা যদি জানতে পারতাম যে এখানে হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড রাসায়নিক পদার্থ আছে তাহলে আমরা সেভাবে প্রস্তুতি নিতে পারতাম। রাসায়নিক বিশেষজ্ঞরা তাদের সরঞ্জাম নিয়ে আগেই সেখানে যেতে পারতো।"
ঘটনাস্থলে মালিক-পক্ষের কেউ ছিলেন না বলেও অভিযোগ দমকল বাহিনীর। একজন কর্মী বলেন, “তাদের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করতে পারিনি এবং খোঁজ করেও তাদেরকে পাওয়া যায়নি। সেকারণে এসব হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।"
পরিস্থিতি বোঝার পর বিপদজনক পদার্থ বিশেষজ্ঞরা রাজধানী ঢাকা থেকে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পৌঁছে।
বিস্ফোরণে কারণে বাতাসে যে গ্যাস ও ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ছে তার কারণে স্থানীয় লোকজনের চোখ এবং ত্বকে জ্বালাপোড়া করছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন