সৈয়দ নাজমুল হাসান, ঢাকা ||
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ তাৎপর্য অনুসন্ধান শীর্ষক বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রকাশনা ‘আমাদের স্বাধীনতা শব্দটি’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ছাত্রলীগের দলীয় কার্যালয়ে ছাত্রলীগ সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৪তম শুভ জন্মদিনে বইটি উৎসর্গ করা হয়েছে। বইটির উপদেষ্টা হিসেবে ছিলেন ছাত্রলীগ সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। সম্পাদনা করেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক হায়দার মোহাম্মদ জিতু।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, 'বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এমন একটি পরিবারের নাম যার প্রতিটি সদস্য বঙ্গবন্ধু পরিবারের সঙ্গে একেবারে মিলিত, একাকার এবং সম্পৃক্ত। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের বঙ্গবন্ধুর রাজনীতি ও আদর্শ নিয়ে পথ চলা। অতএব, কোন পরাশক্তি রুখে দিতে পারবেনা তাদেরকে।'
তিনি আরো বলেন, 'বাংলাদেশ ছাত্রলীগের দীর্ঘদিনের কোন বদভ্যাস বা মতলব ধান্ধা থেকে থাকে তাহলে আল্লার অসাস্তে তা থেকে সরে আসুন। কারন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এই ছাত্রলীগ নিয়ে গর্ব অনুভব এবং প্রশংসা করেন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে নিয়ে একটি নতুন স্বপ্ন দেখতে চান। সেই স্বপ্ন বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে পুরন করতে হবে।'
ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় বলেন, 'জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ দলিল। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম’ বঙ্গবন্ধুর এই তেজদীপ্ত ঘোষণাই ছিল প্রকৃতপক্ষে আমাদের স্বাধীনতার ভিত্তি। বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেছিলেন স্বাধীনতা আর মুক্তি সংগ্রামের সূচনার। ঐতিহাসিক এই ভাষণের তাৎপর্য ও গুরুত্ব বহন করে, আমাদের অভিভাবক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার শুভ জন্মদিনে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেছি।'
তিনি আরো বলেন, 'প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই ঐতিহাসিক ভাষণটি শ্রবণ করেন, তখনই তাদের মানসপটে ভেসে ওঠে স্বাধীনতার গৌরবগাথা আন্দোলন-সংগ্রামের মুহূর্তগুলো, আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে ওঠে দেশপ্রেমের আদর্শে। বর্তমান নতুন প্রজন্মের কাছে এই ভাষণ প্রেরণার উৎস। যতদিন যাবে নতুন প্রজন্মের কাছে ৭ই মার্চের ভাষণ অনুপ্রেরণার সারথি হিসেবে কাজ করবে। আমরা বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে সারথি হব।'
ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, 'স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তৎকালীন পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীর রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে অসীম সাহসিকতার সাথে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে লাখো জনতার উদ্দেশে বজ্রকণ্ঠে যে ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন তা ছিল মূলত বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ। ঐ ভাষণ শুধু ১৯৭১ সালে বাঙালি জাতিকেই অনুপ্রাণিত করেছিল তা নয়, বরং এই ভাষণ যুগে যুগে বিশ্বের সকল অবহেলিত, বঞ্চিত ও স্বাধীনতাকামী জাতি-গোষ্ঠীকে অনুপ্রেরণা যোগাতে থাকবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ সব ধরনের অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে বজ্রতুল্য ঘোষণা। যা কেবল একাত্তরেই নয়, বর্তমান সময়েও আমাদের অনুপ্রাণিত ও উজ্জীবিত করে চলেছে। বঙ্গবন্ধু আমাদের এগিয়ে যাওয়ার পথ দেখিয়ে গেছেন- তাঁর দেখানো পথেই আমরা তাঁরই সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার দিকনির্দেশনায় গড়ে তুলবো ‘স্বপ্নের সোনার বাংলা’।’
প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক হায়দার মোহাম্মদ জিতু বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণে নিহিত ছিল মুক্তিকামী বাঙালির ভবিষ্যৎ জয়ের ম্যান্ডেট এবং পূর্ণ দিকনির্দেশনা। সেই ভাষণ সম্পর্কিত বোধ এবং তাৎপর্য অনুসন্ধান করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পৌছে দেয়ার তাড়নায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের এই উদ্যোগ।’
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। এসময় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন