ট্রাম্প-ইভানকার চুল পরিচর্যায় ব্যয় ১ লাখ ৬৫ হাজার ডলার!

জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প গত ১৫ বছরের মধ্যে ১০ বছর মোটেও কোনো আয়কর দেননি। নিজের কোম্পানিগুলোর লোকসান দেখিয়ে ট্রাম্প বছরের পর বছর ধরে আয়কর এড়িয়েছেন। এই যখন অবস্থা, তখন ট্রাম্পের চুলের পেছনে ব্যয় শুনলে চমকে উঠতে হয়। ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তাঁর মেয়ে ইভানকা ট্রাম্পের চুলের পরিচর্যার জন্য ব্যয় করেছেন ১ লাখ ৬৫ হাজার ৪৬৪ ডলার। মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস এ খবর জানিয়েছে।

গণমাধ্যমের খররে জানা গেছে টেলিভিশন অনুষ্ঠানের জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পের চুল পরিচর্যার পেছনে ৭০ হাজার ডলার ব্যয় করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, তাঁর মেয়ে ইভানকা ট্রাম্পের চুলের পরিচর্যার পেছনে ডোনাল্ড ট্রাম্পের মালিকানাধীন নয়টি কোম্পানির ব্যয় হয়েছে ৯৫ হাজার ৪৬৪ ডলার। আর অবকাশযাপন কেন্দ্র মার-এ-লেগোতে থাকাকালে আলোকচিত্রীর পেছনেই তাঁর ব্যয় ২ লাখ ১০ হাজার ডলার। ২০০০ সাল থেকে এখন পর্যন্ত শুধু গলফ কোর্সেই ডোনাল্ড ট্রাম্প উড়িয়েছেন ৩১ কোটি ৫০ লাখ ডলার।

 

আরও আছে। ২০১০ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ব্যবসায়িক ব্যয়ের আওতায় পরামর্শক ফি বাবদ ডোনাল্ড ট্রাম্প ২ কোটি ৬০ লাখ ডলার ব্যয় করেছেন বলে জানায় গার্ডিয়ান। এর একটি অংশ আবার গেছে ইভানকা ট্রাম্পের মালিকানা রয়েছে, এমন কোম্পানিতে।

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সালে প্রেসিডেন্টের আয়ের বার্ষিক হিসাব প্রকাশ করা হয়। সে সময় ডোনাল্ড ট্রাম্পের বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছিল ৪৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার। অথচ একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় সরকারের আয়কর পরিষেবা প্রতিষ্ঠান ইন্টারনাল রেভিনিউ সার্ভিসকে (আইআরএস) তিনি জানিয়েছেন, তাঁর ব্যবসায়িক ক্ষতির পরিমাণ ৪ কোটি ৭৪ লাখ ডলার। তাঁর ঋণের পরিমাণ ৪২ কোটি ১০ লাখ ডলার। এসব ঋণের অধিকাংশেরই আবার পরিশোধের নির্ধারিত সময় আগামী চার বছরের মধ্যে।

নিউইয়র্কের টাইমস–এর প্রকাশিত প্রতিবেদনে উঠে এসেছে আরও গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য। এতে বলা হয়, ডোনাল্ড ট্রাম্পের আয়ের একটি বড় অংশ আসে অন্য দেশ থেকে। এর পরিমাণ ৭ কোটি ৩০ লাখ ডলার। এটি প্রেসিডেন্ট হিসেবে পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে স্বার্থের সংঘাত তৈরি করে। এই অর্থের মধ্যে ১ কোটি ৩০ লাখ ডলার আসে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে থাকা ট্রাম্প টাওয়ার থেকে। প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর সেখান থেকে ট্রাম্পের আয় ১০ লাখ ডলার বেড়েছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প শুধু কর এড়িয়ে চলেন, তাই নয়। তিনি একই সঙ্গে আগে পরিশোধিত কর ফেরতও চান। সংখ্যার হিসেবে এ অঙ্কও বেশ বড়। গার্ডিয়ান জানাচ্ছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ৭ কোটি ২৯ লাখ ডলারের কর রিফান্ড চেয়ে আবেদন করেছিলেন, যা গ্রহণও করা হয়। ২০০৫ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত তাঁর পরিশোধিত সব কর এর আওতাভুক্ত। এই বিষয়টি নিয়ে আইআরএসের সঙ্গে মার্কিন নিরীক্ষা বিভাগের লড়াই চলছে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে।

সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ কর ফাঁকি দিয়েছেন, তা জরিমানাসহ পরিশোধ করতে চাইলে আইআরএসকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ১০ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হতে পারে। নিউইয়র্ক টাইমস–এর প্রতিবেদন মতে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০০০ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত গড়ে প্রতি বছর ১৪ লাখ ডলার আয়কর পরিশোধ করেছেন। অথচ তাঁর পর্যায়ের আয় রয়েছে, এমন ব্যক্তিদের বার্ষিক পরিশোধিত আয়কর হওয়ার কথা অন্তত ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত যে পরিমাণ কর ফাঁকি দিয়েছেন, তা জরিমানাসহ পরিশোধ করতে চাইলে আইআরএসকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ১০ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হতে পারে।

তবে এত সবের পরও বরাবরের মতোই সবকিছু অস্বীকার করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমি আসলে কর দিয়েছি। আমার ট্যাক্স রিটার্ন দেখলেই এটি বুঝতে পারবেন। এটার অডিট এখন চলছে। অনেক দিন ধরেই এর অডিট চলছে।’ রোববার এ প্রতিবেদন প্রকাশের পর ট্রাম্প সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। পরে আবার আজ ট্রাম্প টুইট করে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে ফেক নিউজ বা ভুয়া সংবাদ বলে দাবি করেছেন।

আর ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের আইনজীবী অ্যালান গার্টেনের দাবি, ২০১৫ সালের পর থেকে প্রতি বছর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ব্যক্তিগত আয়কর হিসেবে ‘টেনস অব মিলিয়নস অব ডলারস’ পরিশোধ করেছেন। যদিও কোনো নির্দিষ্ট অঙ্ক তিনি জানাতে পারেননি।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন