জিবিনিউজ 24 ডেস্ক//
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা মনিরুল হক সাক্কুর কারসাজির যে অভিযোগ এনেছেন, তাকে নাকচ করে দিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘রিটার্নিং অফিসারের রেজাল্ট ম্যানিপুলেট (কারসাজি) করার সুযোগ নেই। প্রতিটি কেন্দ্রের ফলাফল প্রার্থীর এজেন্টদের কাছে কপি আছে।’
এর পরও কারও সন্দেহ থাকলে নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালে যেতে পারবেন বলেও জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
গত ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নেয়া নির্বাচন কমিশন ভোটের প্রথম পরীক্ষায় নামে বুধবার। সেদিন কুমিল্লা সিটি করপোরেশন ছাড়াও চারটি পৌরসভা, একটি উপজেলা এবং ১২৮টি ইউনিয়নে ভোট হয়।
গত কয়েক বছরে ভোটে সহিংসতা, সংঘর্ষ, হুমকি বা ভোট কাটার যে অভিযোগগুলো ছিল, তা এবার দেখা যায়নি।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচিত কুমিল্লা সিটি নির্বাচন, যাতে নৌকার প্রার্থী আরফানুল হক রিফাত জেতেন ৩৪৩ ভোটে। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের এই ভোট নিয়ে বিতর্ক ওঠে একেবারে শেষ পর্যায়ে।
ভোট চলাকালে কোনো অভিযোগ না থাকার কথা বললেও ফল ঘোষণার পর কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে প্রত্যাখ্যান করেছেন গত দুইবারের নির্বাচনে জয় পাওয়া বিএনপি থেকে বহিষ্কৃত মনিরুল হক সাক্কু। তার অভিযোগ, একেবারে শেষ মুহূর্তে ওপর মহলের ফোনে তার জয় ছিনিয়ে নেয়া হয়েছে।
১০৫টি কেন্দ্রের মধ্যে ১০০টি কেন্দ্রের ফলে সাক্কু ছয় শতাধিক ভোটে এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু পরের পাঁচটি কেন্দ্রের ফলাফলে পিছিয়ে পড়েন তিনি।
এই ফলাফল ঘোষণার আগে ফল ঘোষণার কেন্দ্রে হাঙামা হয়। সেখানে সাক্কু অবস্থান করছিলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও স্লোগান দিচ্ছিলেন। হাঙ্গামার কারণে মিনিট পাঁচেক ফল ঘোষণা বন্ধ ছিল।
দিনভর ভোট নিয়ে কোনো অভিযোগ না করলেও সাক্কু দাবি করেন, শেষ মুহূর্তে ওপর মহলের ফোনে ফল পাল্টে দেয়া হয়েছে। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহেদুন্নবী চৌধুরী বলেছেন, প্রিসাইডিং কর্মকর্তা কেন্দ্র থেকে যে ফলাফল দিয়েছেন, সেটি পরিবর্তনের এখতিয়ার কারও নেই।
কোনো কেন্দ্রে ইভিএমের ফল নিয়ে কারও সন্দেহ থাকলে সেটি দূর করার সুযোগ আছে বলেও জানান এই নির্বাচন কমিশনার। বলেন, ‘কোনো সন্দেহ থাকলে পাসওয়ার্ড দিয়ে ইভিএম ওপেন করে আবার দেখা যাবে। অনেকে আছে না জেনে, জানার ভান করে এগুলো করে। আবার অনেকে আছে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য অপপ্রচার চালায়।’
কুমিল্লা কোনো প্রশাসনিক কর্মকর্তাকে রিটার্নিং অফিসার হিসেবে দেয়া হয়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন,' যারা ওখানে কাজ করে। এ ছাড়া যারা সিটির ভেতরে কাজ করে তাদের কাউকে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়নি। যাতে কেউ প্রভাব খাটাতে না পারে।'
নির্বাচন কমিশন বা রিটার্নিং কর্মকর্তার ফল পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই বলেও জানিয়ে দেন এই নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন,'নির্বাচন কমিশন তো সরাসরি পরিচালনা করে না। পরিচালনা করেন রিটার্নিং অফিসার। কেন্দ্র ঠিক করেন, প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেন।
‘আসলে নির্বাচন করেন প্রিসাইডিং অফিসার। তারা ফল প্রকাশ করে কেন্দ্রে টানিয়ে দেন। ঘোষণা দেন, সেখানে প্রার্থীর এজেন্টদের স্বাক্ষর দেন। একটা কপি তাদের দেন। একটা মালপত্রসহ পাঠান। আরেকটা কপি রিটার্নিং অফিসারের কাছে থাকে।
‘রিটার্নিং কর্মকর্তা শুধু কম্পাইলেশন করেন। ওনার কাজ হলো কেবল পড়ে শোনানো। তাহলে উনি কীভাবে পরিবর্তন করবেন, পরিবর্ধন করবেন, পরিমার্জন করবেন? সে সুযোগ আছে?
‘রিটার্নিং কর্মকর্তা কেবল বেসরকারি ফলাফলে যোগ-বিয়োগ ঠিক আছে কি না সবার স্বাক্ষর আছে কি না, ইভিএমরে সঙ্গে মিল আছে কি না। এরপর সে আমাদের কাছে পাঠায়। এরপর আমরা গেজেট প্রকাশের আগে দেখি, সেখানে ভুল থাকলে আমরা আবার ফেরত পাঠাই।'
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন