ফারহানা বেগম হেনা || জিবি নিউজ | সিলেট ||
জননিরাপত্তা বিধানের পাশাপাশি সিলেট জেলা পুলিশের সদস্যরা আবারও সাধ্যের সবটুকু দিয়ে
বানভাসিদের পাশে দাড়িয়েছেন। নিজেদেরকে উজাড় করে দিয়ে মানুষের পাশে দাড়ানোর চেষ্টার মধ্যে কোন রকম কমতি নেই সিলেট জেলা পুলিশ সদস্যদের।
সাম্প্রতিক সময়ের ভয়াবহ বন্যায় সিলেটের বিভিন্ন উপজেলাসহ শহরতলি বন্যায় প্লাবিত হয়। লাখ লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে । আশ্রয় কেন্দ্র গুলোতে নারী পুরুষ, শিশুসহ বয়স্করা আশ্রয় নিয়েছেন। এলাকার লোকজন যতসামান্য জিনিসপত্র নিজের সাথে নিয়ে আসার সুযোগ পেলেও ফেলে এসেছেন ঘরবাড়ি। ইতোমধ্যে বান্যার পানিতে বিলিন হয়েছে অনেকের বসত ভিটা ঘরবাড়ি । এমন বাস্তবতায় একবেলা একমুঠো খাবার সংগ্রহ করা তাদের জন্য অসাধ্য হয়ে পড়েছে। মানুষের মুখে একবেলা খাবার তুলে দিতে রাত দিন কাজ করে চলেছে সিলেট জেলা পুলিশ সদস্যরা। রাতের অন্ধকারেও বানবাসি মানুষের জন্য খাবার নিয়ে ছুটে চলেছেন তারা।
সিলেট জেলায় ভয়াবহ বন্যায় আক্রান্ত জনগণের পাশে দাড়িয়েছেন জেলা পুলিশের সদস্যরা। ঝড়ো বৃষ্টি ও প্রবল পানির স্রোতের মধ্যে ও জীবনের বাজি রেখে দুর্গম যাত্রা শুরু করেছেন সিলেট জেলা পুলিশ। সিলেট জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় নৌকার মাধ্যমে বন্যার্তদের জন্য খাদ্য সামগ্রী ও বিশুদ্ধ খাবার পানি নিয়ে ছুটে চলেছেন। বন্যায় আটকে পড়া মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিরাপদে পৌছে দেয়া থেকে শুরু করে সব ধরনের সহযোগিতা প্রদান করছেন সিলেট জেলা পুলিশ সদস্যরা। অতীতের ন্যায় এবার ও জেলা পুলিশ সদস্যরা অতি সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সারা দেশের মানুষের কাছে হয়ে উঠেছেন মানবিকতার পুলিশ হিসেবে। আবারও মানবিক ও মানবতার সেবক হিসেবে দেশবাসীর নজর কেড়েছেন তারা। বর্তমানে সাধারণ মানুষের অতি আপনজন হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছেন তাদের কর্ম গুনের কারণে। বর্তমানে লক্ষ করলে দেখা যায় মানুষ তার আপনজনকে খবর করার আগে পুলিশ সদস্যদের কে খবর করছেন তার পিছনে একটিই কারণ হলো পুলিশ তার মানবিক কর্মকান্ডের মাধ্যমে মানুষের হ্নদয়ে স্থান করে নিয়েছেন বলে। পুলিশ এখন জনসাধারণের নিরাপদ আশ্রয় স্থল হয়ে উঠেছে।
মানুষের তরে মানুষ হইয়া জীবন করিবো দান,এক জীবনে ছুঁয়ে দিবো লক্ষ জীবনের ঘ্রাণ!
এই মন্ত্রকে এভাবেই ভাবতে শেখা বাংলাদেশ পুলিশ আছে আপনার / আমার সকলের পাশে।
সিলেট জেলার বিচক্ষণ পুলিশ সুপার( অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদন্নোতিপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম এর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে প্রতিটি থানা এলাকায় বন্যার্তদের মাঝে খাবার ও বন্যার্তদের নিরাপদে আশ্রয় কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার জন্য একাধিক টিম গঠন করে দিয়েছেন যারা সর্বক্ষন বানবাসি মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
বাংলাদেশ পুলিশের আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম-বার এর নির্দেশে পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত ডিআইজি) মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন পিপিএম এর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ও বিচক্ষণ দিক নির্দেশনায় সিলেট জেলা পুলিশের সদস্যরা গত কয়েকদিন ধরে সর্বোচ্চ আন্তরিকতার সাথে সাধারণ মানুষকে পানি বন্দী অবস্থা থেকে উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে পৌঁছে দেয়া, রান্না করা খাবার বিতরণ, বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করে যাচ্ছেন।
এরই ধারাবাহিকতায় গোয়াইনঘাটের সহকারী পুলিশ সুপার প্রবাস কুমার সিংহ, কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ সুকান্ত চক্রবর্তী ও প্রবাসী কল্যাণ শাখার ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক শ্যামল বণিক জেলা পুলিশ লাইন্সে রান্না করা খিচুড়ি কোম্পানীগঞ্জ থানাধীন ফেদারগাও উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় কয়েকশো মানুষের মধ্যে খাবার বিতরণ করেন। আশেপাশের পানিবন্দী মানুষের মধ্যেও তৈরি করা খাবারের প্যাকেট বিতরণ করছেন। গোলাপগঞ্জে সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পরিত্রান চাকমার নেতৃত্বে রান্না করা খাবার বিতরণ করা হচ্ছে ।
এছাড়া জৈন্তাপুর অফিসার ইনচার্জ এর নেতৃত্বে জৈন্তাপুর থানার এলাকার বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্র সহ বন্যার্ত মানুষের মাঝে খাদ্য এবং ত্রান সামগ্রী বিতরণ করছেন জৈন্তাপুর থানার পুলিশ সদস্যরা। গোয়াইনঘাট এবং বিশ্বনাথের বিভিন্ন স্থানে রান্না করা খাবার বিতরণ করছেন গোয়াইনঘাট থানার পুলিশ সদস্যরা।
তথ্যটি নিশ্চিত করে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (জেলা বিশেষ শাখা ও মিডিয়া) মোঃ লুৎফর রহমান। তিনি বলেন, যে সিলেট জেলা পুলিশের সদস্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জেলা পুলিশের সদস্যরা সিলেটের বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। নিয়মিত আইন-শৃংখলার পাশাপাশি বন্যা দুর্গত মানুষের জন্য জেলা পুলিশের খাদ্য ও ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত আছে থাকবে। বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত জেলা পুলিশের এমন মানবিক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন