জিবিনিউজ 24 ডেস্ক//
সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মোল্লাগাওয়ের জহুর আলীর মাটির ঘর বন্যায় একেবারে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। তলিয়ে গেছে মাটির বেড়া; উড়ে গেছে টিনের চালাও।
ভুক্তভোগী জহুর বলেন, ‘একজন কিছু টিন দিয়ে সহায়তা করেছে। বাকি টাকা ধারকর্য করে জোগার করে ঘর মেরামত করছি। ঘর ঠিক না করলে তো খোলা আকাশের নিচে থাকতে হবে।’
চলমান বন্যায় ঘর হারিয়েছেন জহুরের মতো অনেকেই।
জেলা প্রশাসনের হিসাবে সিলেটের ১৩ উপজেলায় ৪০ হাজার ৯১টি কাঁচা ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে কোনোটি আংশিক, কোনোটি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত।
সিলেট সিটি করপোরেশনের হিসাবে নগরে এই সংখ্যা প্রায় এক হাজার। সব মিলিয়ে সরকারি তথ্যেই জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ির সংখ্যা ৪১ হাজারের বেশি।
জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান বলেন, ‘জেলার ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ির তালিকা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ঘরবাড়ি নির্মাণ ও মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ চেয়ে মন্ত্রণালয়ে আবেদনও করা হয়েছে।
‘বন্যায় যারা ঘর হারিয়েছেন, তাদের ঘর সরকারি উদ্যোগে মেরামত করে দেয়া হবে।’
সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী বলেন, ‘নগরে হাজারখানেক ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির তালিকা আমরা প্রস্তুত করছি। এরপর তা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে এবং পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয়া হবে।’
বন্যায় ঘর হারা সিলেট সদর উপজেলার শিবেরবাজার এলাকার লায়েক মিয়া বলেন, ‘সরকার থেকে কখন ঘর বানিয়ে দেয়া হবে আর আমরা কখন ঘরে উঠবে তার কোনো ঠিক-ঠিকানা নেই। তার আগে আমরা কোথায় থাকব? আমাদের তো থাকার কোনো জায়গা নেই এখন।’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, সিলেট সিটি করপোরেশনসহ ১৩ উপজেলা ও ৫ পৌরসভা বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। প্রায় ৩০ লাখ লোক পানিবন্দি ছিলেন। সবশেষ পাওয়া তথ্যের হিসাবে, জেলার ৬১৪টি আশ্রয়কেন্দ্রে ২ লাখ ৫২ হাজার ৭৮৪ জন আশ্রয় নিয়েছেন।
টানা কয়েক দিন কমার পর বুধবার থেকে আবার বাড়তে শুরু করেছে সুরমা-কুশিয়ারাসহ সিলেটের প্রধান নদ-নদীর পানি। বুধবার রাতে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বৃষ্টি হচ্ছে।
বৃষ্টি হচ্ছে সিলেটের উজানে ভারতের আসাম ও মেঘালয়েও। এতে জেলার বন্যা পরিস্থিতি আবারও অবনতির শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন