জিবি নিউজ || লন্ডন ||
টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী মেয়র এর অফিসের প্রধান ও উপ-প্রধান পদে দুই জনকে নিয়োগ দিয়েছে কাউন্সিল। হেড অব দ্যা মেয়রস্ অফিস এবং ডেপুটি হেড অব দ্যা মেয়রস্ অফিস পদ দু’টি হচ্ছে কাউন্সিলের কর্পোরেট কাঠামো এবং প্রধান নির্বাহীর অফিসের অংশ।
হেড অব দ্যা মেয়রস্ অফিস অর্থাৎ মেয়রের অফিসের প্রধান হিসেবে নিয়োগ লাভ করেছেন ট্রেড ইউনিয়ন ‘ইউনাইট’ এর ডিরেক্টর অব এক্সিকিউটিভ পলিসি/পলিটিক্স এ্যামি জ্যাকসন, এবং মেয়র অফিসের উপ-প্রধানের পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে টাওয়ার হ্যামলেটসেরই সাবেক কাউন্সিলর ও কেবিনেট মেম্বার আলিবর চৌধুরীকে।
কাউন্সিলের কর্পোরেট নিয়োগ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেই এই নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়।
মেয়রের অফিসের হেড ও ডেপুটি হেড পদে নতুন এই নিয়োগ প্রসঙ্গে টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান বলেন, “অ্যামি এবং আলিবর অত্যন্ত প্রতিভাবান এবং দক্ষ পেশাদার, যারা আমাদের বাসিন্দাদের জীবনকে আরো উন্নত করতে এবং টাওয়ার হ্যামলেটসকে অধিকতর উন্নত জনপদ হিসেবে গড়ে তুলতে আমাদের চলমান অগ্রযাত্রায় সাহায্য করবেন ৷ আমাদের একসঙ্গে অনেক কাজ করতে হবে।”
হেড অব দ্যা মেয়রস্ অফিস পদে নিয়োগ লাভকারী এ্যামি জ্যাকসন একজন অভিজ্ঞ ম্যানেজার, কৌশলবিদ এবং দক্ষ ক্যাম্পেইনার, যিনি দীর্ঘদিন ধরে লেবার আন্দোলন এবং জাতীয় রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে ওতোপ্রোতভাবে কাজ করছেন এবং সেখান থেকেই তিনি টাওয়ার হ্যামলেটসের টীমের সাথে যোগ দিচ্ছেন।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন (ইউসিএল) থেকে লিগ্যাল এন্ড পলিটিক্যাল থিওরিতে এমএ ডিগ্রি লাভকারী অ্যামি জ্যাকসন একজন নিবেদিত ট্রেড ইউনিয়নিস্ট এবং ব্রিটেনের বৃহত্তম ট্রেড ইউনিয়ন ‘ইউনাইট’ এর প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা বিভাগে কাজ করেছেন। পরবর্তীতে তিনি ক্যাম্পেইন ও পলিটিক্স এর নানা ধাপে দায়িত্বশীল পদে কাজ করেন, যা মূলত তাঁকে পলিটিক্যাল ডিরেক্টর হিসেবে ওয়েস্টমিনস্টার এর কেন্দ্রস্থলের সাথে সম্পৃক্ত করে। তিনি তাঁর ক্যারিয়ারের বেশির ভাগ সময় ইউনিয়ন কার্যক্রমেই কাটিয়েছেন এবং লেবার পার্টির লীডারের পলিটিক্যাল সেক্রেটারি হিসেবেও প্রায় ৪ বছর অত্যন্ত সাফল্যের সাথে কাজ করেছেন। লেবার পার্টির পার্লামেন্টারি গ্রুপের ডেপুটি চিফ অব স্টাফ হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি।
আর মেয়র অফিসের ডেপুটি হেড হিসেবে নিয়োগ লাভকারী আলিবর চৌধুরী টাওয়ার হ্যামলেটসের আলো বাতাসেই বেড়ে ওঠেছেন এবং এই বারা ও স্থানীয় জনসাধারণের কল্যানে তিনি নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। আলিবর চৌধুরী ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন এর গোল্ডস্মিথে পড়াশোনা করেন এবং ২০০৪ সালে তিনি সোশ্যাল পলিসি এন্ড এডমিনিস্ট্রেশন এ মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। তিনি তাঁর কর্মজীবনে অর্জিত জ্ঞান, দক্ষতা ও জীবনঘনিষ্ট অভিজ্ঞতাকে পূর্ব লন্ডনের সুবিধাবঞ্চিত মানুষ ও কমিউনিটি গুলোর জন্য কাজে লাগাচ্ছেন। কমিউনিটি ও ভলান্টারি সেক্টরের বিভিন্ন স্তরে ভিন্ন ভিন্ন দায়িত্বে তিনি অত্যন্ত যোগ্যতার সাথে কাজ করেছেন। টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের কর্মসংস্থান, দক্ষতা ও সম্পদ বিষয়ক কেবিনেট মেম্বার এবং সমৃদ্ধ অর্জন করা ও ভাগ করে নেওয়া বিষয়ক স্ক্রুটিনি কমিটির প্রধান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। এছাড়া টাওয়ার হ্যামলেটসের অন্যতম একটি উন্নয়ন প্রকল্প ওসেন নিউ ডিল ফর কমিউনিটিজ ডেলিভারি প্ল্যান এর ডিরেক্টর হিসেবে প্রায় ৬ বছর দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে তিনি এই প্রকল্পের সুবাদে স্থানীয় বাসিন্দারা যাতে সেরা সুফল পান, তা নিশ্চিত করতে সাফল্যের স্বাক্ষর রেখেছিলেন।
মেয়রের অফিসের চিফ অব স্টাফ পদে অ্যামি জ্যাকসন এবং ডেপুটি চীফ পদে আলিবর চৌধুরীর নিয়োগ লাভ প্রসঙ্গে মন্তব্যকালে কাউন্সিলের চীফ এক্সিকিউটিভ উইল টাকলি বলেন, “মেয়র এবং কাউন্সিলের বৃহত্তর প্রশাসনকে সহযোগিতা করার জন্য আমাদের যথোপযুক্ত কর্পোরেট অবকাঠামো থাকা অপরিহার্য। মেয়র অফিসের প্রধান ও উপ-প্রধান পদে নিযুক্তরা আমাদের কৌশলগত পরিকল্পনার আওতায় মেয়রের অগ্রাধিকার সমূহ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তাঁর (মেয়র) সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন।”
চীফ এক্সিকিউটিভ আরো বলেন, “এ্যামি এবং আলিবর প্রচুর জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা নিয়ে আসছেন এবং আমাদের নতুন প্রশাসনের লক্ষ্যসমূহ অর্জনে তাঁরা সাহায্য করবেন।”
হেড অব দ্যা মেয়রস্ অফিস পদে নিয়োগ লাভের পর অ্যামি জ্যাকসন বলেন, “মেয়র লুৎফুর রহমান ও টাওয়ার হ্যামলেটস টীমের সদস্যদের সাথে কাজ করার জন্য, এবং মেয়রের উদ্দীপক ও উচ্চাভিলাষী ইশতেহারের অঙ্গীকারগুলো বাস্তবায়নের জন্য এই পদে নিয়োগ পেয়ে আমি আনন্দিত।”
তিনি বলেন, “টাওয়ার হ্যামলেটস তার নিজের সমৃদ্ধ ইতিহাসের জন্য এক অনন্য জনপদ এবং এমনকি আরও সমৃদ্ধ হচ্ছে এখানকার জনসাধারণের কমিউনিটি চেতনা। বারার বাসিন্দারা যেসকল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছেন, সেগুলো মোকাবেলা করতে এবং বারার পূর্ণ সম্ভাবনায় পৌঁছানোর লক্ষ্যে সকল কমিউনিটির সাথে কাজ করার জন্য আমি উন্মুখ হয়ে আছি।”
নতুন দায়িত্বে নিযুক্ত হওয়ার পর এক প্রতিক্রিয়ায় আলিবর চৌধুরী বলেন, “আমি আবারও বারার সেবা করার সুযোগ পেয়ে আনন্দিত। নির্বাহী মেয়র এবং বৃহত্তর কাউন্সিলের সাথে মিলে আমাদের বাসিন্দাদের জীবনমান ও ব্যবসা—বাণিজ্যের উন্নতির লক্ষ্যে কাজ করার জন্য আমি উন্মুখ।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন