কানাডার আলবার্টায় কোভিডত্তোর পরিস্থিতি ও ছুটির দিনে ঈদ হওয়ায় এক ভিন্ন মাত্রা এনে দিয়েছিলো এবারের ঈদ-উল-আয্হা উদযাপন। মহামারি ও অর্থনৈতিক সঙ্কট কাটাতে যখন ব্যস্ত গোটা পৃথিবী, যখন প্রত্যাশা দ্রুত আবারো পুরানো রূপে ফিরে আসার তখন আলবার্টা প্রদেশের রাজধানী এডমন্টনে ও ছিল এক ভিন্ন মাত্রার ঈদানন্দ। ঈদ জামাতগুলোতে ছিল বাঁধভাঙা জোয়ারের মতো মুসল্লিদের উপচেপড়া ভিড়. পশ্চিম কানাডার একটি প্রদেশ আলবার্টা । এর ল্যান্ডস্কেপ পর্বতমালা, প্রেরি, মরুভূমি এবং বিস্তীর্ণ বনাঞ্চল ঘিরে রয়েছে ছয় শতের ও অধিক হ্রদ এবং সমৃদ্ধ খনিজ সম্পদ । এখানে রয়েছে অনেক আবহাওয়া বৈচিত্র। রয়েছে পশ্চিমে, কানাডিয়ান রকি মাউন্টেন পার্কে কলম্বিয়ার আইসফিল্ডের হিমবাহ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ সীমান্ত বিস্তৃত ওয়াটারটন গ্লেসিয়ার ইন্টারন্যাশনাল পিস পার্ক, যা হল একটি বায়োস্ফিয়ার রিজার্ভ । এ নানাহ বৈচিত্রের মাঝে বাংলাদেশি সহ ইরাক, ইরান, ফিলিস্তিন, আফগানিস্থান, সিরিয়া, লিবিয়া, ভারত, ইন্দোনেশিয়া সহ নানা দেশের নানা ঐতিহ্যের মানুষ, পেশাজীবী এখানে বাস করেন । তাই ঈদজামাত ও সামাজিক সম্মিলনে নারী পুরুষের সে পোশাক-পরিচ্ছদে ও এর ছাপ রয়েছে। ছাপ রয়েছে শিশু কিশোরদের বাহারি জামা কাপড়েও।
এডমন্টনের ঈদজামাতগুলোতে ছিল এবার উপচে পড়া ভিড়। মসজিদ ও মুক্তাঙ্গনে পালাক্রমে একেকটি স্থানে দুটি, তিনটি করেও জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে । ক্লেয়ারভিউ এডমন্টনের একটি স্কুল মাঠে অনুষ্ঠিত ঈদজামাতে অংশ নেন প্রবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বাংলাদেশ হেরিটেজের অন্যতম সংগঠক ও পথিকৃৎ অধ্যাপক দেলোয়ার জাহিদ।
প্রবীণ এ যোদ্ধা মুক্তিযুদ্ধ ও পদ্মাসেতু সহ নানা বিষয়ে সামাজিক সম্মিলনগুলোতে দলমত নির্বিশেষে স্বদেশিদের সাথে মত বিনিময় করেন। বিদেশে বসে ও দেশের স্মৃতিচারণায় উঠে আসে প্রবাসীদের প্রত্যাশা ও অ-প্রাপ্তির নানা কথা।
স্থানীয় ঈদের জামাতে দেশীয় সংস্কৃতির পোশাক ও বাঙালিরা বাহারি রঙের পাঞ্জাবি পরে জামাতে আসেন। নামাজ শেষে তারা চিরাচরিত কোলাকুলি ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। নামাজ শেষে করেই কাজে ছুটার তাগিদ নেই যেন অধিকাংশের। শহরের বাইরে নির্দিষ্ট স্থানে কেউ কেউ পশু কোরবানি দিয়েছেন, কেউ বা কোরবানি দিয়েছেন বাঙালি বা মুসলিম গ্রোসারিগুলোর মাধ্যমে।
বাঙালি বধূ কন্যারা তাদের পোশাকাশাকেও ফুটিয়ে তুলেছেন দেশীয় সংস্কৃতি, আর খাবারের কথাতো বলাই বাহুল্য। সবচেয়ে আনন্দে সময় কাটিয়েছে শিশুকিশোরেরা। তাদের কাছে ঈদ মানে বাঁধ ভাঙা আনন্দ, রাত জাগা আর খেলাধুলা।
সকল বাংলাদেশিদের একই প্রত্যাশা বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করা, সততা ও ভদ্রতার নজির স্থাপন করে দেশের অব্যাহত অগ্রগতিতে নিজ নিজ অবদান রাখা।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন