জিবিনিউজ 24 ডেস্ক//
রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেনের চলমান যুদ্ধকে আরও বড় পরিসরে নিয়ে যেতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার প্রধান মিত্র যুক্তরাজ্য। ঐতিহাসিকভাবে রাশিয়ার চিরশত্রু এ দু’দেশ চাইছে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ যেন অবিলম্বে রাশিয়া-ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) যুদ্ধে রূপ নেয়।
বুধবার রুশ সংবাদমাধ্যম আরটি ও স্পুটনিককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ এই অভিযোগ করেছেন। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমাদের মার্কিন ও ব্রিটিশ প্রতিপক্ষ সত্যিকার অর্থেই চাইছে, ইউক্রেনে আমাদের চলমান সামরিক অভিযান যেন দ্রুত রাশিয়ার সঙ্গে ইইউ’র যুদ্ধে রূপ নেয়। জার্মানি, পোল্যান্ড ও বিভিন্ন বাল্টিক রাষ্ট্র এক্ষেত্রে তাদের সমর্থন দিচ্ছে।’
নিজের এ অভিযোগের পক্ষে যুক্তি দিয়ে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে ইউক্রেনে রুশ বাহিনী সামরিক অভিযানের এক সপ্তাহের পরই দুই দেশের সরকারি প্রতিনিধিদের মধ্যে শান্তি সংলাপ শুরু হয়। কিন্তু সে সংলাপ অনুসরণ করে এখন পর্যন্ত ইউক্রেন কোনো গঠনমূলক পদক্ষেপ নেয়নি। এজন্য যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের পরামর্শ ও অস্ত্র সহযোগিতাকে দায়ী করেছেন ল্যাভরভ।
‘নিয়মিত পরামর্শ ও অস্ত্র সহায়তার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও তাদের ইউরোপীয় মিত্ররা এই যুদ্ধ বন্ধে গঠনমূলক কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা থেকে বিরত রাখছে ইউক্রেনকে। তারা যে ইউক্রেনকে কেবল অত্যাধু্নিক অস্ত্র সরবরাহ করছে তাই নয়, বরং খুবই ঝুঁকিপূর্ণভাবে সেসব অস্ত্র ব্যবহার করতে বাধ্যও করছে।’
সম্পূর্ণ নিজেদের ফায়দার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য এই যুদ্ধে ইউক্রেনকে সহায়তা দিচ্ছে উল্লেখ করে সাক্ষাৎকারে ল্যাভরভ বলেন, ‘সবাই জানে, রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে নিজেই বিপদে পড়েছে ইউরোপ। সেই বিপদ থেকে উদ্ধার পেতে তারা এখন আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে চায়। আর দায়িত্বহীনভাবে তাতে ইন্ধন যোগাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য।’
‘কিন্তু সত্য হলো, খুবই বিপজ্জনক এক খেলায় নেমেছে ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। আমার মনে হয় না, এই খেলার ঝুঁকি সম্পর্কে ন্যুনতম কোনো ধারণা তাদের রয়েছে। তবে ইউরোপের সাধারণ জনগণের অধিকাংশই এ ব্যাপারে সচেতন এবং তারা এ ব্যাপারটি বোঝে।’
যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের সামরিক জোট ন্যাটোকে ঘিরে দ্বন্দ্বের জেরে সীমান্তে আড়াই মাস সেনা মোতায়েন রাখার পর গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। এই ঘোষণার দু’দিন আগে ইউক্রেনের রুশ বিচ্ছিন্নতাবাদী নিয়ন্ত্রিত দুই অঞ্চল দনেতস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেন তিনি।
বুধবার ১৫১তম দিনে গড়িয়েছে ইউক্রেনে রুশ সেনাদের অভিযান। এই চার মাস সময়ের মধ্যে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ লুহানস্ক, ইউক্রেনের দুই বন্দর শহর খেরসন ও মারিউপোল, দনেতস্ক প্রদেশের শহর লিয়াম, মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ জাপোরিজ্জিয়ার আংশিক এলাকার পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ চলে গেছে রুশ বাহিনীর হাতে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন