ওসমানীনগরে বন্যার পর গলার কাঁটা কিস্তি

জিতু আহমদ, ওসমানীনগর::
বন্যায় ঘরবাড়ি ছেড়ে উঠেছিলেন আশ্রয়কেন্দ্রে। পানি কমায় বাড়ি ফিরলেও বেড়েছে ক্ষয়ক্ষতির পরিমান। এমন অবস্থায় নিস্ব হয়ে দিন পার করছেন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার কয়েক সহস্রাধিক পরিবার। সরকারী বেসরকারী সহায়তাই যেন এখন টিকিয়ে রেখেছে অনেকের পরিবার। এমন পরিস্থিতিতে গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে এনজিও সংস্থার কিস্তি। কয়েক দফা বন্যার কারণে অনেকেই যখন টানাপোড়নে দিন যাচ্ছে তখন সাপ্তাহিক ঋণের কিস্তি পরিশোধের তাদের কপালে এখন চিন্তার ভাজ।
জানা গেছে, ওসমানীনগর উপজেলার নিম্ন আয়ের অসংখ্য মানুষ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ও সমিতির সপ্তাহিক বা মাসিক কিস্তির ঋণের সাথে স¤পৃক্ত। ভয়াবহ বন্যার কারণে গত ৪ জুলাই লিখিত পরিপত্রের মাধ্যমে চলতি জুলাই মাস থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিলেটের প্রতিটি উপজেলায় ক্ষুদ্র ঋণের কিস্তি আদায় স্থগিত রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন সিলেট জেলা প্রশাসন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এনজিও সংস্থাগুলোকে ঋণ উত্তোলন বন্ধ রাখার জন্য বলা হলেও ওসমানীনগরে তা মানা হচ্ছে না। ক্ষদ্র ঋণের টাকা পরিশোধ করতে এনজিও সংস্থাগুলা বাড়ি বাড়ি গিয়ে গ্রাহকদের চাপ প্রয়োগ করছে বলে অভিযোগ করেছেন এনজিও সংস্থা উদ্দিপন, ব্রাক, আশা, গ্রামীনসহ আরো কয়েকটি এনজিও সংস্থার গ্রাহকরা।
উপজেলার তাজপুরে ‘উদ্দিপন’ এনজিও সংস্থার ব্রাঞ্চ। বৃহস্পতিবার সকালে গোয়ালাবাজারের বিভিন্ন এলাকায় এই এনজিওর প্রতিনিধিরা ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাপ প্রয়োগ করেন। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এবং জেলা প্রশাসনের নির্দেশের কথা জানালেও প্রতিনিধিরা আরো ক্ষোব্দ হন গ্রাহকদের দিকে। পরে গ্রাহকদের কাছ থেকে জোড় পূর্বক কিস্ত আদায় করা হয়। কিস্তি আদায়কালে উদ্দিপন ব্রাঞ্চের এক প্রতিনিধি জানান, তারা ১৭দিন অতিবাহিত হলেও জেলা প্রশাসনের কোন নির্দেশনা পাননি।
নির্দেশনা পেয়েও মাঠে রয়েছে এনজিও সংস্থা ব্রাক। তাদের প্রতিনিধিরাও একই কায়দা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কিস্তি আদায় করছেন। তবে, বৃহস্পতিবার সকালে তাদের একজন প্রতিনিধি জানান, গ্রাহকদের চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে না। কেউ সেচ্ছায় ঋণের কিস্তি পরিশোধ করলে তারা নিচ্ছেন। তবে একই সংস্থার আরেক প্রতিনিধি বলেন, ঋণ বিতরণ চলমান রয়েছে সুতরাং কিস্তি পরিশোধ করতে হবে।
এছাড়া আশা, গ্রামীনসহ আরো কয়েকটি এনজিও সংস্থার প্রতিনিধিরা মাঠ পর্যায়ে গিয়ে ক্ষদ্র ঋণের কিস্তি উত্তলন করচেন বলেও অভিযোর রয়েছে। 
এই বিষয়ে ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নীলিমা রায়হানা বলেন, তিন মাসের জন্য এনজিও সংস্থার ঋণ উত্তলন না করতে জেলা প্রশাসন থেকে বলা হয়েছে। তার পরও যদি কোন এনজিও ঋণ উত্তলন করে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখবো।

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন